চিকিৎসকের গাফিলতিতে প্রসূতির গর্ভেই সন্তানের মৃত্যুর অভিযোগ তুলেছেন পরিবারের লোকেরা। মঙ্গলবার ওই অভিযোগে শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতালে গিয়ে বিক্ষোভ দেখান পরিবারের লোকেরা। হাসপাতালের সুপার অমিতাভ মণ্ডল ১৫ দিনের মধ্যে অভিযোগ খতিয়ে দেখার লিখিত আশ্বাস দিলে পরিস্থিতি শান্ত হয়। তিনি জানান, কেন এমন অভিযোগ উঠল তা ওই প্রসূতির দায়িত্বে থাকা চিকিৎসক শঙ্কর করকে জানাতে বলা হয়েছে।
পরিবারের অভিযোগ, পূর্ব চয়নপাড়ার বাসিন্দা সন্তানসম্ভবা শান্তি মণ্ডলকে বাইরে চিকিৎসকের কাছে দেখানো হচ্ছিল। তবে পরিবারের আর্থিক পরিস্থিতি ভাল নয় দেখে তাঁর স্বামী, সোনার দোকানের কর্মী নিখিলবাবু হাসপাতালেই প্রসব করানোর সিদ্ধান্ত নেন। ২৬ ফেব্রুয়ারি প্রসবের দিন ছিল। তার আগেই পরিবারের লোকেরা শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতালেও রোগিণীকে দেখান। হাসপাতাল থেকে জানানো হয়েছিল, প্রসব ব্যথা শুরু হলে ভর্তি করাতে। সেই মতো অপেক্ষা করছিলেন তাঁরা। প্রয়োজনে বাইরে চিকিৎসকের পরামর্শও নিচ্ছিলেন। নির্দিষ্ট দিন পেরিয়ে গেলে তাঁরা চিন্তায় পড়েন।
২৭ ফেব্রুয়ারি সকালেই প্রসূতিকে শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। কিন্তু প্রসব ব্যথা নেই বলে এক ঘণ্টা পরেই ছুটি দিয়ে দেওয়া হয়। ২ মার্চ রাতে ব্যথা শুরু হলে ভোরে শান্তিদেবীকে শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতালে ফের ভর্তি করানো হয়েছিল। অথচ তার পরেও চিকিৎসক যথাযথ ব্যবস্থা নেননি বলে অভিযোগ। ৫ মার্চ আল্ট্রাসোনোগ্রাফি করে বেলা ১২টা নাগাদ জানানো হয় সন্তান ভাল রয়েছে।
অথচ ওই দিন বিকেলেই চিকিৎসকরা জানান, সন্তানের অবস্থা ভাল নেই বলেই মনে হচ্ছে তাঁরা কোনও সাড়া পাচ্ছেন না। উন্নত চিকিৎসার জন্য মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রেফার করেন। প্রসূতির স্বামী নিখিল মণ্ডলের অভিযোগ, ‘‘এর পর নার্সিংহোমে নিয়ে গেলে চিকিৎসক জানান সন্তান গর্ভেই মারা গিয়েছে। মৃত সন্তান প্রসবের পর সেখানেই স্ত্রীর চিকিৎসা হয়।’’ অভিযোগ, বাইরে চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলে তাঁরা জেনেছেন নির্দিষ্ট দিন পেরিয়ে গেলেও অস্ত্রোপচার করেই সন্তান প্রসব করানোর কথা। অথচ তা করা হয়নি।
চিকিৎসক শঙ্করবাবু বলেন, ‘‘অস্ত্রোপচার করার দরকার ছিল ঠিকই। তবে ব্যাথা ছিল না-বলে অপেক্ষা করা হচ্ছিল। আল্ট্রাসোনোগ্রাফি করেও দেখা হয়েছিল সন্তান ঠিক আছে। কয়েক ঘণ্টা পর থেকে আর সাড়া মিলছিল না। তখনই উন্নত চিকিৎসার জন্য মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রেফার করার কথা জানানো হয়েছিল।’’ হাসপাতালের সুপার অমিতাভ মণ্ডল জানান, তাঁরা নিজেরা বিষয়টি তদন্ত করে দেখছেন। সেই সঙ্গে মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিককেও বিষয়টি জানিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলা হবে। এ দিন ডাবগ্রাম-ফুলবাড়ি যুব কংগ্রেসের তরফেও হাসপাতাল সুপারের দফতরে গিয়ে বিক্ষোভ দেখিয়ে অভিযোগ জানানো হয়। এলাকার যুব কংগ্রেস নেতা মনোজ অগ্রবাল বলেন, ‘‘১৫ দিন পর আমরা ফের এসে জানতে চাইব কী ব্যবস্থা নেওয়া হল।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy