Advertisement
E-Paper

চা বাগানের মজুরি নিয়ে ফের বিভ্রান্তি

ফের জটিলতা তৈরি হল চা শ্রমিকদের মজুরি দেওয়ায়। পুরোনো নোট বাতিল এবং ব্যাঙ্কে লেনদেনে বিধিনিষেধের জেরে চা বাগান মালিক সংস্থার টাকা প্রশাসন ভাঙিয়ে দেবে বলে সমাধান সূত্র বের হয়েছিল।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৩ নভেম্বর ২০১৬ ০১:১০

ফের জটিলতা তৈরি হল চা শ্রমিকদের মজুরি দেওয়ায়। পুরোনো নোট বাতিল এবং ব্যাঙ্কে লেনদেনে বিধিনিষেধের জেরে চা বাগান মালিক সংস্থার টাকা প্রশাসন ভাঙিয়ে দেবে বলে সমাধান সূত্র বের হয়েছিল। সেই মতো কয়েকটি বাগান কর্তৃপক্ষ প্রশাসনকে চেক দিয়ে নগদে অর্থ সংগ্রহ করে মজুরি মিটিয়েছিল। মঙ্গলবার ফের তা নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়িয়েছে।

কোনও সরকারি নির্দেশ হাতে না পেলেও জলপাইগুড়ি এবং আলিপুরদুয়ার জেলা প্রশাসনের দাবি, সূত্র মারফত তারা জেনেছে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের নয়া নির্দেশে চা বাগান মালিকরা নিজেদের অ্যাকাউন্ট থেকেই মজুরির মোটা টাকা তুলতে পারবে। তাতে কোনও নিষেধ থাকছে না। এই খবর পেয়ে দুই জেলা প্রশাসনই বাগান মালিকদের জানিয়েছে, তাদের পক্ষে আর চেক ভাঙিয়ে দেওয় সম্ভব নয়। তাতেই শুরু হয়েছে বিপত্তি।

হাতে নির্দেশিকা না থাকায় ব্যাঙ্ক থেকে সরাসরি টাকা তোলা এখনই সম্ভব নয়, উল্টে প্রশাসনও চেক ভাঙিয়ে দেবে না বলে জানিয়েছে, এই পরিস্থিতি শ্রমিকদের মজুরির টাকা আসবে কী করে? এই প্রশ্নই উদ্বেগে ফেলেছে চা সংস্থাগুলিকে। মজুরি না পেলে বাগানে অস্থিরিতা তৈরির আশঙ্কাও রয়েছে। প্রশাসনের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। নির্দেশিকা না পেয়ে শুধু মাত্র সূত্রের খবরের ভিত্তিতে কেন সিদ্ধান্ত নেওয়া কতটা যুক্তি সঙ্গত তা জানতে চেয়ে চিঠি পাঠানোর কথা জানিয়েছেন চা মালিকদের কয়েকটি সংগঠন।

মঙ্গলবার চা বাগান ম্যানেজারদের অনেকে আলিপুরদুয়ার জেলাশাসক দেবীপ্রসাদ করণমের সঙ্গে দেখা করেন। ম্যানেজারদের দাবি, সেই বৈঠকে জেলাশাসক জানিয়ে দেন, এখন থেকে চা বাগান কর্তৃপক্ষ সরসারি নিজেদের অ্যাকাউন্ট থেকেই টাকা তুলতে পারবেন। পুরোনো পাঁচশো এবং হাজারের নোট বাতিল ঘোষণার পরে, ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের ঊর্ধ্বসীমাও স্থির করে দেয় কেন্দ্রীয় সরকার। ছোট-মাঝারি চা বাগানেও শ্রমিকদের মজুরি দিতে সপ্তাহে যে পরিমাণ টাকা লাগে, তা লেনদেনের ঊর্ধ্বসীমা থেকে অনেক বেশি। মজুরি নিয়ে অনিশ্চয়তা কাটাতে উদ্যোগী হয় প্রশাসন। বৈঠকে স্থির হয়, চা বাগান মালিকরা মজুরির টাকা চেক মারফত প্রশাসনকে দেবে, প্রশাসন সেই অঙ্কের টাকা বাগান কর্তৃপক্ষের হাতে তুলে দেবে। সেই মতো বেশ কিছু বাগানে মজুরিও হয়। আলিপুরদুয়ারের জেলাশাসক বলেন, ‘‘আমাদের কাছে সূত্র মারফত খবর এসেছে এখন থেকে চা বাগান মালিকপক্ষ নিজেদের অ্যাকাউন্ট থেকে নগদ টাকা তুলে মজুরি দিতে পারবে। তাই আপাতত প্রশাসন কোনও চা বাগান কর্তৃপক্ষকে নগদ টাকা তুলে দেবে না। তবে নির্দেশের লিখিত প্রতিলিপি পাইনি। বিষয়টির উপর নজর রাখছি।’’

লিখিত নির্দেশ না পেলেও কেন এমন পদক্ষেপ হচ্ছে, তা নিয়ে প্রশাসনের তরফে কেউ মন্তব্য করেননি। চা বাগানের মালিক সংগঠন টাইয়ের সাধারণ সম্পাদক রামঅবতার শর্মা বলেন, ‘‘মজুরি নিয়ে নতুন করে অচলাবস্থা তৈরি হল।’’ একটি চা বাগানের ম্যানেজারের কথায়, ‘‘এখন তো দু’কুলই যেতে বসেছে। রিজার্ভ ব্যাঙ্ক নতুন কী নির্দেশ দিয়েছে জানি না, অথচ প্রশাসন টাকা দেবে না বলছে। তবে শ্রমিকদের মজুরির টাকা জোগাড় করা সম্ভব হবে না।’’

চুয়াপাড়া, ভাটপাড়া, মেচপাড়া, সেন্ট্রাল ডুয়ার্স, জয়ন্তী মথুরা, সিংহানিয়া সহ বেশ কয়েকটি চা বাগানে গত শনিবার মজুরি দেওয়া হয়েছে। বাকি চা বাগানগুলিতে কবে মজুরি হবে, তা নিয়ে প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। যার উত্তর নেই প্রশান-মালিকপক্ষ কারও কাছেই। জলপাইগুড়ি জেলায় প্রায় ১২০টি চা বাগান রয়েছে৷ কোনও বাগানেই এখনও মজুরি হয়নি বলে দাবি।

ডুয়ার্স ব্র্যাঞ্চ টি অ্যাসোসিয়েশন অফ ইন্ডিয়ার সম্পাদক সুমন্ত গুহ ঠাকুরতা বলেন, ‘‘বিভিন্ন সূত্র মারফত আমরা জানতে পারছি, প্রশাসনের বৈঠকে যে পদ্ধতি নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল, রিজার্ভ ব্যাঙ্ক নাকি তা মানছে না৷ তাই মালিকরা যে টাকা প্রশাসনের অ্যাকাউন্টে পাঠিয়েছিল তা আবার ফেরত পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে৷’’

Confusion Tea estate wages
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy