Advertisement
E-Paper

জঙ্গলের নীরবতা ভেঙে দিল শব্দদানব

জঙ্গল ঘেরা মূর্তিতে রাতভর মঞ্চ কাঁপালেন বলিউডের নায়িকা সানি লিয়ন! হাজির ছিলেন হাজার তিনেক দর্শক। রাতের নীরবতা খান খান করে একের পর বেজে উঠেছে “ল্যায়লা ও ল্যায়লা” বা “এই মেরে দিল পেয়ার কা দিওয়ানা।”

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২২ জানুয়ারি ২০১৯ ০৪:২৩

জঙ্গল ঘেরা মূর্তিতে রাতভর মঞ্চ কাঁপালেন বলিউডের নায়িকা সানি লিয়ন! হাজির ছিলেন হাজার তিনেক দর্শক। রাতের নীরবতা খান খান করে একের পর বেজে উঠেছে “ল্যায়লা ও ল্যায়লা” বা “এই মেরে দিল পেয়ার কা দিওয়ানা।” গত শনিবার রাতে ডুয়ার্সের মূর্তির একটি বিলাসবহুল রিসর্টের নিজস্ব লনেই বসেছিল এই আসর। বাহারি আলোর ডিজিটাল মঞ্চে আলোর বিচ্ছুরণ যেমন ছিল নজরকাড়া তেমনই শব্দরাক্ষসের দাপটও ছড়িয়ে পড়েছিল জঙ্গল লাগোয়া মূর্তিতে।

রাতের এই অনুষ্ঠানকে ঘিরেই দানা বেঁধেছে বিতর্ক। এক কিলোমিটারের মধ্যেই যেখানে চাপরামারির সংরক্ষিত বনাঞ্চল, সেখানে রাতে খোলা জায়গায় এই জলসা কার্যত জঙ্গলের রাতের নীরবতা নষ্ট করেছে বলেই অভিযোগ। ডিজে বক্সের মত আধুনিক শব্দযন্ত্র ব্যবহারের মাধ্যমে যে তীব্র শব্দ ছড়িয়ে পরেছে তা বহুদূর থেকেও শোনা গিয়েছে বলেই মত পরিবেশপ্রেমীদের। আলোর তীব্রতাও এতটাই ছিল যে জঙ্গলের ভিতরেও অনেকটা অংশ আলোকিত হয়ে যায় বলে অভিযোগ। জলপাইগুড়ির একটি পরিবেশপ্রেমী সংস্থার কর্ণধার শ্যামাপ্রসাদ পাণ্ডে বলেন, “জঙ্গলের ধার ঘেঁষে এই ধরনের অনুষ্ঠান একেবারেই বাঞ্ছনীয় নয়, ইকো সেনসেটিভ জোন ঘোষণা করে দ্রুত এই ধরনের অনুষ্ঠানে প্রশাসনিক নিয়ন্ত্রণ জারি করা অত্যন্ত জরুরি।” বন দফতরের উত্তর মণ্ডলের মুখ্যবনপাল (বন্যপ্রাণ) উজ্জ্বল ঘোষ পুরো ঘটনায় হতবাক। তিনি বলেন, “আমরা এই ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি চাই না, প্রশাসনিক স্তরেও বিষয়টি যাতে দেখা হয়, তা জানাব।” পরিবেশপ্রেমীদের বক্তব্য, এই ধরনের আলো ও শব্দের তীব্রতায় বনের প্রাণীদের স্বাভাবিক জীবন ব্যাহত হয়। তার রেশ চলে অনেক দিন ধরে। বন দফতর তাই আগেই সক্রিয় হতে পারত বলে তাঁদের দাবি।

দুপুর ১২টা থেকে অনুষ্ঠান শুরু হয়। রাত সাড়ে আটটা নাগাদ মঞ্চে আসেন সানি লিয়ন। ২২ মিনিটের অনুষ্ঠান করেন তিনি। শিলিগুড়ি থেকে সরাসরি এসে আবার রাতেই শিলিগুড়ি ফিরে যান তিনি। রিসর্টের পক্ষে অপারেশন্যাল ম্যানেজার সঞ্জীব দত্ত বলেন, “আমরা একটি এফএম সংস্থাকে ভাড়া দিয়েছিলাম, অনুষ্ঠান কোথায় কীভাবে করবে সেই পরিচালনার দায়িত্ব তাদের উপর ছিল। তবে পরে রাতের বেলার অনুষ্ঠান যাতে বাইরে আয়োজিত না হয়, সেটি আমরা এখন থেকেই দেখব।”

মূর্তি লাগোয়া গরুমারা জাতীয় উদ্যান বেষ্টিত লাটাগুড়িতে ইতিমধ্যেই নৈশকালীন কোন অনুষ্ঠানই খোলা জায়গায় করা যাবে না বলে সংগঠনগত ভাবে সিদ্ধান্ত নিয়েছে লাটাগুড়ি রিসর্ট ওনার্স অ্যাসোসিয়েশেন। এ কথা জানান সংগঠনের সচিব দিব্যেন্দু দেব। রাতের বেলা মাইক, বক্স বাজিয়ে অনুষ্ঠান করতে হলে তা বনদফতরকে জানাতেই হবে বলে মনে করেন এসজেডিএ চেয়ারম্যান সৌরভ চক্রবর্তীও। তিনি বলেন, “আমরা জঙ্গল থেকে দূরত্ব বজায় রেখে লাটাগুড়ি কার্নিভাল আয়োজন করেছিলাম, সেই সময়েও বনদফতরের থেকে প্রয়োজনীয় অনুমোদন নিয়েই অনুষ্ঠান করা হয়েছিল, তারকারা অবশ্যই আসবেন কিন্তু তাদের সংগঠকদের এই বিষয়গুলো দেখেই আয়োজন করতে হবে।”

Sunny Leone Siliguri Controversy
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy