Advertisement
১৯ মে ২০২৪

বাজেট বাড়ল বড়দেবীর

রাজ আমলের ঐতিহ্যবাহী বড়দেবী পুজোর বাজেট বাড়াল কোচবিহার দেবোত্তর ট্রাস্ট বোর্ড। এ বার প্রায় পাঁচশো বছরের প্রাচীন ওই পুজোর বাজেট ধরা হয়েছে ৪ লক্ষ ৯৪ হাজার ৮০০ টাকা। গতবারের তুলনায় ৩৮ হাজার ২০০ টাকা বেশি। গত বছর ওই পুজোর বাজেট ছিল ৪ লক্ষ ৫৬ হাজার ৬০০ টাকা।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কোচবিহার শেষ আপডেট: ১২ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০১:৪৫
Share: Save:

রাজ আমলের ঐতিহ্যবাহী বড়দেবী পুজোর বাজেট বাড়াল কোচবিহার দেবোত্তর ট্রাস্ট বোর্ড। এ বার প্রায় পাঁচশো বছরের প্রাচীন ওই পুজোর বাজেট ধরা হয়েছে ৪ লক্ষ ৯৪ হাজার ৮০০ টাকা। গতবারের তুলনায় ৩৮ হাজার ২০০ টাকা বেশি। গত বছর ওই পুজোর বাজেট ছিল ৪ লক্ষ ৫৬ হাজার ৬০০ টাকা। দেবোত্তর সূত্রের খবর, আজ সোমবার থেকে রীতি মেনে বড়দেবীর প্রতিমা তৈরির কাজ শুরু হবে। তুফানগঞ্জের চামটা গ্রাম থেকে বিশেষ পুজো করে আনা মাটি দিয়ে ওই প্রতিমার মুখ তৈরি করা হয়। এ বারেও প্রাচীন ওই রীতি মানা হবে।

কোচবিহারের জেলাশাসক তথা দেবোত্তর ট্রাস্ট বোর্ডের সভাপতি পি উল্গানাথন বলেন, “কোচবিহারের সদর মহকুমা শাসক ওই পুজোর বাজেট বাড়ানোর জন্য প্রস্তাব দিয়েছিলেন। সেটা মেনেই বাজেটের অঙ্ক বাড়ানো হয়েছে।” ওই ট্রাস্ট বোর্ডের সদস্য সদর মহকুমা শাসক অরুন্ধতী দে বলেন, “বড়দেবীর পুজোর সঙ্গে বাসিন্দাদের আবেগ জড়িয়ে রয়েছে। আয়োজনের ব্যাপারে খামতি রাখা হবে না।”

দেবোত্তর সূত্রেই জানা গিয়েছে, বড়দেবী প্রতিমার রঙ টকটকে লাল। আকার বড়। সাজসজ্জাতেও প্রচলিত দুর্গামূর্তির থেকে খানিকটা আলাদা। দেবীর বাহন বাঘ ও সিংহ। দুই দিকে থাকেন জয়া-বিজয়া। জনশ্রুতি রয়েছে, মহারাজা নরনারায়ণের স্বপ্নে দেখা দেবীরূপই ওই প্রতিমায় উঠে এসেছে। প্রাচীন পরম্পরা মেনেই ফি বছর প্রতিমা তৈরি করা হয়। বংশানুক্রমিক ভাবে ওই প্রতিমা করছেন শিল্পী প্রভাত চিত্রকর। প্রতিমা তৈরির আগে পুরানো রীতি মেনে দেবীবাড়ি মন্দিরে কাঠামোর ওপর বসান ময়না কাঠের শক্তিদণ্ড। ধর্মপাঠ পুজো হয়। শনিবার ও রবিবার চলে হাওয়া-খাওয়া পুজো।

নিয়ম অনুযায়ী দু’দিন হাওয়া-খাওয়া পুজোর পর দিন প্রতিমা তৈরি শুরু হয়। সেটা মেনেই আজ সোমবার ওই মন্দিরেই বড়দেবীর প্রতিমা তৈরি শুরু হবে। দেবোত্তর ট্রাস্ট বোর্ডের এক কর্মী জয়ন্ত চক্রবর্তী জানিয়েছেন, ‘‘সোমবার প্রতিমা তৈরি শুরু হবে। প্রতিমার মুখ তৈরির জন্য চামটার মাটি ব্যবহার করা হয়।’’

দেবোত্তর সূত্রেই জানা গিয়েছে, বড়দেবীর পুজো ঘিরে বাসিন্দাদের বাড়তি আবেগ জড়িয়ে রয়েছে। ফি বছর পুজোয় অঞ্জলি দিতে ভক্তদের ভিড় উপচে পড়ে। পুজোয় মোষ, ভেড়া, পাঁঠা, হাঁস, মাগুর মাছ সহ বিভিন্ন বলির রেওয়াজ রয়েছে। এমনকী পুজোর উপকরণের তালিকায় রয়েছে নররক্ত। অষ্টমীর রাতে গুপ্তপুজোয় পুরোহিতের পাশে বসে আঙ্গুল চিরে রক্ত দেন শিবেন রায় নামে এক বাসিন্দা। ওই রক্তে ভেজানো পুতুল বলি দেওয়া হয়। জনশ্রুতি রয়েছে, এক সময় পুজোয় নরবলির রেওয়াজও চালু ছিল। দেবোত্তরের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, পঞ্জিকার নির্ঘণ্ট ও নিয়ম নিষ্ঠা মানাটাও পুজোর বড় বৈশিষ্ট্য। সব মিলিয়ে পুজোর বাজেট বাড়াতে হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE