Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪
corona virus

করোনার ধাক্কা, মদ ছেড়ে মাস্কে মুন্নারা

লকডাউনের দশ দিন পরে মদের কালোবাজারেও বোতলের যোগানে টানাটানি চলছে। যাঁদের থেকে এতদিন বোতল কিনে মুন্না বিক্রি করতেন, তাঁরাও তিনগুণ দাম চাইছেন। এ দিকে বাজারে লাফিয়ে বাড়ছে মাস্কের চাহিদাও। অগ্যতা বোতল ছেড়ে মাস্কের ব্যবসা ধরেছেন মুন্না।

ছবি: শাটারস্টক

ছবি: শাটারস্টক

অনির্বাণ রায়
জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ০৪ এপ্রিল ২০২০ ০৬:২৫
Share: Save:

রমাপদ চৌধুরীর একটি জনপ্রিয় উপন্যাসের নাম, বাড়ি বদলে যায়। করোনা সংক্রমণের আতঙ্কে দেশ জুড়ে লকডাউন চলতে থাকায় পেটের টানে পেশাও বদলে গিয়েছে বহু মানুষের।

জলপাইগুড়ির দিনবাজারে অনুমোদিত দোকান বন্ধের পরে প্রতি রাতে ঝোলায় মদের বোতল ভরে ফুটপাতে দাঁড়িয়ে ক্রেতার অপেক্ষা করতেন মুন্না (নাম পরিবর্তিত)। দামের থেকে কুড়ি থেকে পঞ্চাশ টাকা বেশি নিয়ে বিক্রি করতেন বোতল। দোকান খোলা থাকলে কিছুটা দূরে থাকতেন।

লকডাউনের দশ দিন পরে মদের কালোবাজারেও বোতলের যোগানে টানাটানি চলছে। যাঁদের থেকে এতদিন বোতল কিনে মুন্না বিক্রি করতেন, তাঁরাও তিনগুণ দাম চাইছেন। এ দিকে বাজারে লাফিয়ে বাড়ছে মাস্কের চাহিদাও। অগ্যতা বোতল ছেড়ে মাস্কের ব্যবসা ধরেছেন মুন্না। প্রতিদিন শহরের স্টেশন বাজারের কাছে মাস্ক নিয়ে বসছেন তিনি, বাজার উঠে গেলে রাস্তায় হেঁটে ফেরি করছেন।

শহর লাগোয়া বেরুবাড়ি, পাহারপুরের স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলি মাস্ক তৈরি করে চলেছে। সেখান থেকে মাস্ক জোগাড় করছেন মুন্না। গড়পরতা ৪০ টাকা করে মাস্ক বিক্রি হচ্ছে।

কেন পেশা বদল? মুন্নার কথায়, “আমরাও তো সরকারি লাইসেন্স পাওয়া দোকান থেকেই বোতল কিনতাম। লকডাউনের আগে বেশ কিছু বোতল জমিয়েছিলাম। দু'তিনদিনের মধ্যেই সব বিক্রি হয়ে গেল। তারপর আর বোতলের যোগান পাচ্ছি না। না খেয়ে থাকতে হবে, তার থেকে বাজারে মাস্কের চাহিদা ভাল, তাই বিক্রি করছি।” মুন্নার দাবি, আরও কয়েকজন এই পেশা থেকে সরে গিয়েছে। কেউ আনাজ বিক্রি করছে, কেউ সাফাইয়ের কাজের বরাত নিচ্ছে। মদের কালোবাজারি কিন্তু বন্ধ হয়নি জলপাইগুড়িতে।

যে হুইস্কির বোতলের দাম ৫২০ টাকা দাম সেই বোতল বিক্রি হচ্ছে অন্তত বাইশশো টাকায়। সাড়ে চারশো টাকা দামের রামের বোতলের দাম কালোবাজারে উঠেছে ষোলোশো টাকায়। বাংলা মদের এক বোতলের দাম ছিল পঁচাশি টাকা, সেই বোতল কালো বাজারে মিলছে ন্যূনতম পাঁচশো টাকা দরে। প্রতিদিন সকাল থেকে রাত পর্যন্ত দিনবাজার, স্টেশনবাজারের আশপাশের গুমটিঘরগুলিতেও ক্রেতাদের ভিড়ও ভালই হচ্ছে।

মদের পরিবর্তে মাস্ক বিক্রি করে লাভ কমেছে মুন্নার। তবে প্রাপ্তিও রয়েছে একটা। মুন্নার কথায়, “পুলিশ দেখে এখন আর পালাতে হয় না। উল্টে পুলিশকেও মাস্ক বিক্রি করেছি।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Corona Virus Lock Down Mask Jalpaiguri
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE