প্রতীকী ছবি
‘মুম্বই থেকে ফিরে আসা এক শ্রমিকের প্রবল জ্বর, সঙ্গে সর্দিকাশি। করোনার নয় তো! আমরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েছি’— মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুরের ভালুকাবাজারের এক বাসিন্দার ফোন পেয়েই সিভিক ভলান্টিয়ার ছুটলেন নির্দিষ্ট ঠিকানায়। অসুস্থ শ্রমিককে ঝুঁকি নিয়েই ভর্তি করালেন হাসপাতালে। মাস্ক একটা রয়েছে ওই সিভিক কর্মীর। কিন্তু তা নিজের টাকাতেই কেনা। ওই শ্রমিক করোনায় আক্রান্ত কি না, তা-ও জানা নেই। তা যদি হয়, তা হলে নিজের জীবনেরও ঝুঁকি রয়েছে। নিশ্চয়তা নেই চাকরিরও। কেননা মালদহে আবার ছ’মাস পালা করে কাজ পান সিভিক ভলান্টিয়াররা। এমন অনিশ্চয়তার মধ্যেও ঝুঁকি নিয়ে এ ভাবেই মাঠে নেমে কাজ করে চলেছেন সিভিক কর্মীরা। সোমবার বিকেল থেকে শুরু হয়েছে লকডাউন। এখন ট্রাফিক সামলানোর চাপ নেই। তাই মহকুমা জুড়ে পথে নেমে অতি উৎসাহীদের সতর্ক ও সচেতন করছেন সেই সিভিক ভলান্টিয়াররা। আবার সন্দেহভাজন করোনায় আক্রান্ত বলে ফোন পেয়ে ছুটতে হচ্ছে সেই বাড়ি। এত দিন তাঁদের বিরুদ্ধে জোরজুলুমের নানা অভিযোগ উঠত। এখন নেটিজেন আর পুলিশের থেকে প্রশংসা পাচ্ছেন ওঁরা। যদিও নিধিরাম সিভিকদের ঝুঁকির কথা মাথায় রেখে উদ্বিগ্ন পরিজনেরা।
চাঁচলের এসডিপিও সজলকান্তি বিশ্বাস বলেন, ‘‘থানাগুলি ওদের মাধ্যমেই প্রতিটি এলাকার সঙ্গে সংযোগ রাখছে। এখন পরিস্থিতি ভিন্ন। আতঙ্কের আবহে প্রত্যেককেই কাজ করতে হচ্ছে। ওঁরা যে ভাবে কাজ করছেন, তা প্রশংসার যোগ্য।’’
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, চাঁচল মহকুমার চারটি থানা। তার মধ্যে চাঁচলে ৪০০, হরিশ্চন্দ্রপুরে ৩৫০, রতুয়ায় ২৫০ ও পুখুরিয়া থানায় ১৫০ জন সিভিক রয়েছেন। পুলিশ সূত্রেই বলা হচ্ছে, এঁদের বেশিরভাগেরই মাস্ক নেই। মঙ্গলবার অবশ্য চাঁচল থানার ১০০ জন সিভিককে মাস্ক দেওয়া হয়েছে। বাকিদের কিনতে হচ্ছে নিজেদের গাঁটের কড়ি খরচ করেই। অথচ ভিন রাজ্য থেকে ফেরা শ্রমিকদের ফোনের অভাব নেই। ফলে ঝুঁকি থাকলেও ছুটছেন তাঁরা।
বাড়িতে স্ত্রী, দুই নাবালক ছেলে, বাবা ও মা রয়েছেন। সামান্য টাকায় সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হয় চাঁচল থানায় কর্তব্যরত এক সিভিক কর্মীকে। তিনি বলেন, ‘‘খবর পেয়েই আমরা ছুটে যাই। কেউ সত্যিই আক্রান্ত কি না, তা তো জানি না। ভয় হয়। তবু কর্তব্য করে যাচ্ছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy