Advertisement
E-Paper

মদের দোকানের প্রতিবাদে ভাঙচুর

ভাঙচুর হয়েছে পুলিশের গাড়ি। ক্ষিপ্ত জনতার ইটের আঘাতে বালুরঘাট থানার আইসি এবং এক পুলিশ ও একজন সিভিক জখম হন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৫ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০২:০৩
তাণ্ডব: পাড়ার মধ্যে মদের দোকানের প্রতিবাদে বালুরঘাট উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। অভিযোগ, পুলিশ বাসিন্দাদের লাঠি পেটা করেছে। ছবি: অমিত মোহান্ত।

তাণ্ডব: পাড়ার মধ্যে মদের দোকানের প্রতিবাদে বালুরঘাট উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। অভিযোগ, পুলিশ বাসিন্দাদের লাঠি পেটা করেছে। ছবি: অমিত মোহান্ত।

পাড়ার মধ্যে মদের দোকান শুরু করার প্রতিবাদে ক্ষুব্ধ বাসিন্দাদের শো-রুম ভাঙচুর ও বিক্ষোভ হটাতে পুলিশ পাল্টা লাঠি চালিয়েছে বলে অভিযোগকে কেন্দ্র করে মঙ্গলবার বিকেলে উত্তপ্ত হয়ে উঠল বালুরঘাটের এ কে গোপালন কলোনি। ভাঙচুর হয়েছে পুলিশের গাড়ি। ক্ষিপ্ত জনতার ইটের আঘাতে বালুরঘাট থানার আইসি এবং এক পুলিশ ও একজন সিভিক জখম হন। পুলিশের বিরুদ্ধে বাড়িতে ঢুকে ভাঙচুর ও মহিলা পুরুষদের বেধড়ক লাঠিচার্জের অভিযোগ ওঠে। অভিযোগ, তাতে গুরুতর জখম হন বেশ কয়েক জন। মারের হাত থেকে মহিলা ও ছাত্ররাও রেহাই পায়নি বলে অভিযোগ। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে এলাকায় যান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার দেবাশিস নন্দী এবং ডিএসপি ধীমান মিত্র।
বালুরঘাটের সাংসদ অর্পিতা ঘোষের দেহরক্ষী, পুলিশকর্মী শ্যামল সরকার তাঁর তিন তলা বাড়ির নীচতলায় বিদেশি মদের শো-রুম চালু করেন বলে অভিযোগ। বাসিন্দাদের আপত্তি ছিল বলে দাবি। ঘটনার কথা শোনা মাত্র সাংসদ অর্পিতা তার দেহরক্ষীর পদ থেকে পুলিশ কর্মী শ্যামলবাবুকে সরিয়ে দিতে পুলিশ কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেন।
এ দিন অর্পিতা বলেন, ‘‘দেহরক্ষী হয়েছে বলে যা খুশি করবেন নাকি। এই মুহূর্ত থেকে তাঁকে দেহরক্ষীর পদ থেকে সরিয়ে দিতে পুলিশ সুপারকে বলা হয়েছে। পাড়ার মধ্যে কী করে মদের দোকানের লাইসেন্স পেলেন খতিয়ে দেখতে বলেছি।’’ জেলা পুলিশ সুপার প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, সাংসদের দেহরক্ষীকে সরিয়ে দিয়ে তাঁকে ক্লোজ করা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘মদের দোকানে স্থানীয় কিছু লোকের বিক্ষোভকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা হয়েছিল। পুরো বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।’’
মঙ্গলবার সকাল থেকে এলাকায় উত্তেজনা ছিল। এলাকার মন্দির, শিশুশিক্ষা কেন্দ্রের পাশে বসতি এলাকায় মদের দোকান চালু করা নিয়ে বাসিন্দারা বিক্ষোভ দেখালে উল্টে তাদের পুলিশের ভয় দেখান হয় বলে অভিযোগ। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে জনতা শোরুমটিতে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করেন। মদ ও বিয়ারের বোতল রাস্তায় ফেলে ভাঙা হয় বলে অভিযোগ। খবর পেয়ে আইসির নেতৃত্বে পুলিশ ও সিভিক গিয়ে লাঠি চালিয়ে ক্ষিপ্ত জনতাকে হটিয়ে দিতে থাকে। সে সময় ক্ষুব্ধ জনতা পাল্টা প্রতিরোধ গড়ে পুলিশকে ইট ছুড়তে থাকে বলে অভিযোগ। শুরু হয় পুলিশের সঙ্গে একাংশ বাসিন্দার খণ্ডযুদ্ধ। সে সময় আইসি সহ দু’জন জখম হন। পুলিশের একটি গাড়ি ভাঙচুর হয়। এরপর র‌্যাফ ও কমব্যাট ফোর্স নামিয়ে পুলিশ পাল্টা চড়াও হয়ে বাড়ি বাড়ি ঢুকে বাসিন্দাদের উপর লঠি চালাতে থাকে বলে অভিযোগ। সিভিক ভলান্টিয়াররা টিনের বাড়ি ভাঙচুর করে বলে অভিযোগ।
সে সময় ফেরি করে বাড়ি ফেরেন ছোট ব্যবসায়ী হারান সরকার। কলেজ থেকে ফেরেন তাঁর ছেলে প্রথম বর্ষের ছাত্র সুরজিৎ। হারানবাবুকে বাড়ি থেকে রাস্তায় ফেলে বেধড়ক লাঠি মারা হয়। হারানবাবুর স্ত্রী এবং ছেলে সুরজিতকে মেরে মাথা ফাটিয়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। এরপর টেনে হিঁচড়ে হারানবাবুকে তুলে নিয়ে যায় পুলিশ। বাড়ি থেকে বেরিয়ে অহেতুক মারধরের প্রতিবাদ করলে মহিলাকেও পুলিশ গ্রেফতার করে। পুলিশ অবশ্য সব অভিযোগই অস্বীকার করেছে। সাংসদের দেহরক্ষীর বক্তব্য, ‘‘স্ত্রীর নামে মদের দোকানের লাইসেন্স নিয়ে শোরুম চালু করি। বাসিন্দারা ব্যাপক ভাঙচুর চালিয়েছে। ওই শোরুম থেকে ১০০ মিটার দূরত্বে রয়েছে প্রাথমিক স্কুল।’’ পুরসভা কিসের ভিত্তিতে মদের দোকান খোলার অনুমতি দিল? প্রশ্ন উঠেছে। তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন সাংসদ অর্পিতা।

Protest Corruption Violence
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy