Advertisement
E-Paper

রিকশা টোটোই এখন ভরসা বিচারকদের

কেউ হেঁটে বাড়ি ফিরছেন, কেউ ব্যাগপত্তর নিয়ে টোটোয় ফেরার জন্য অপেক্ষায়। কেউ আবার রিকশা না পেয়ে নিরাপত্তারক্ষীকে তাগাদা দিচ্ছেন।

সংগ্রাম সিংহ রায়

শেষ আপডেট: ২৪ জুন ২০১৬ ০৭:৪৭

কেউ হেঁটে বাড়ি ফিরছেন, কেউ ব্যাগপত্তর নিয়ে টোটোয় ফেরার জন্য অপেক্ষায়। কেউ আবার রিকশা না পেয়ে নিরাপত্তারক্ষীকে তাগাদা দিচ্ছেন।

সকলেই শিলিগুড়ি আদালতের বিচারক।

কেন এমন অবস্থা?

দীর্ঘ দিন বিচারকদের গাড়ির পেট্রোলের বিল না দেওয়ায় পাম্প মালিকরা নতুন করে পেট্রোল দিতে অস্বীকার করেছেন। বরাদ্দ গাড়ি তাই আপাতত বন্ধ। নিজেদের মতো করে বাড়ি ফিরছেন তাঁরা। তাঁদের সঙ্গে থাকা সব সময়ের জন্য নিরাপত্তারক্ষীরাও তাঁদের সঙ্গেই হেঁটে, দৌড়ে, অটোতে-টোটোতে ফিরতে হচ্ছে।

তবে বিচারকদের এমন ভাবে নিজের উদ্যোগে যাতায়াতে অশনি সঙ্কেত দেখছেন আদালতের আইনজীবী থেকে অন্যরা। শিলিগুড়ি আদালতের আইনজীবী তথা বার অ্যাসোসিয়েশনের প্রাক্তন সম্পাদক চন্দন দে বলেন, ‘‘বিচারকদের বিভিন্ন রকম অপরাধমূলক মামলার রায় দিতে হয়। তাদের অরক্ষিত থাকার সুযোগ নিয়ে যে কেউ কোনও রকম আক্রমণ করলে বিচারকদের ক্ষতি হতে পারে। তাই দ্রুত পরিস্থিতি সামাল দিতে বিচারবিভাগীয় দফতর থেকে রাজ্য সরকার সবাইকে পদক্ষেপ করতে হবে।’’ দার্জিলিং জেলা লিগাল এড ফোরামের সম্পাদক অমিত সরকারও বিপদের আশঙ্কা করছেন। তিনি বলেন, ‘‘বিচারকেরা অনেকের অপছন্দের তালিকায় এক নম্বরে। তাই যাতায়াতের পথে খারাপ কিছু ঘটতেই পারে। তাই দ্রুত বিষয়টির সমাধান হওয়া প্রয়োজন।’’ গাড়ির পেট্রোলের জন্য বরাদ্দ টাকা দেওয়ার কথা রাজ্যের আইন মন্ত্রকের। এ বিষয়ে রাজ্যের আইনমন্ত্রী মলয় ঘটককে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বিষয়টি নিয়ে পরে কথা বলবেন বলে জানান।

কবে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে, কবে তাঁরা আবার নিজেদের জন্য বরাদ্দ গাড়ি চড়তে পারবেন, তা জানেন না কেউই। সমস্যার কথা জানানো হয়েছে দার্জিলিং জেলা আদালতের বিচারককে। তিনি উদ্যোগ নিচ্ছেন বলে জানা গিয়েছে। তার পরেও অবশ্য ভরসা পাচ্ছেন না স্বয়ং বিচারক থেকে পাম্প মালিক বা গাড়ি চালকেরা। শিলিগুড়ি আদালতের বিচারবিভাগীয় বিল সংক্রান্ত সমস্ত বিষয় যিনি দেখেন, আদালতের নাজির ঝিমলি ভট্টাচার্যের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে তিনি মন্তব্য করতে চাননি। তবে আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, ১১ জন বিচারক বিপাকে পড়েছেন। আর মোট চারটি গাড়িকে এই বিচারকদের পৌঁছে দেওয়ার কাজে ব্যবহার করা হয়। বেশ কিছু দিন আগে থেকে একটি গাড়িকে তেল দেওয়া বন্ধ করে দেওয়া হলে বাকি গাড়িগুলি দিয়ে সমস্যা মেটানো হচ্ছিল।

গত মঙ্গলবার থেকে যে দু’টি পাম্প থেকে পেট্রোল নেওয়া হত, পাম্প কর্তৃপক্ষ তেল দেওয়া সম্পূর্ণ বন্ধ করে দেন। ফলে বুধবার থেকে আর গাড়ি চলেনি। আদালত ও পাম্প সূত্রে জানানো হয়েছে, একটি পাম্পে গত দেড় বছর ধরে প্রায় ৮ লক্ষ টাকা বকেয়া পড়ে রয়েছে। অন্যটিতে ২ লক্ষাধিক টাকা বকেয়া পড়ে আছে। উত্তরবঙ্গের পেট্রোল পাম্প ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক শ্যামল পাল চৌধুরী বলেন, ‘‘বিপুল টাকা বকেয়া পড়ে থাকাতে স্বাভাবিক ভাবেই পেট্রোল দেওয়া সম্ভব হয়নি। এতে পাম্প মালিকদের দোষ দিতে পারছি না। তাঁদের এটা ব্যবসা।’’ হিলকার্ট রোডের একটি পাম্পের মালিক প্রবীণ খেরানির কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, ‘‘জেলা বিচারকের পক্ষে দ্রুত বিষয়টি মিটিয়ে ফেলার কথা জানানো হয়েছে। আমরাও বকেয়া পাওয়ার ব্যাপারে আশাবাদী।’’

Toto auto-rickshaw Judge
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy