Advertisement
E-Paper

পাহাড় নয়, ভিড় বাড়ছে ডুয়ার্স জুড়ে

পাহাড়ে অশান্তি। তাই পাহাড়কে এড়াতে পর্যটকের ঢল নামল ডুয়ার্সে। মোর্চার আন্দোলনের জেরে আতঙ্কিত পর্যটকদের বেশিরভাগই পাহাড় থেকে নেমে পড়তে বাধ্য হন। তাদেরই একটা বড় অংশ দলে দলে ভিড় জমাচ্ছেন ডুয়ার্সের বিভিন্ন জায়গায়৷

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১০ জুন ২০১৭ ০২:১০
পথবদল: পাহাড়ে বেড়াতে এসে রাস্তা পাল্টে ডুয়ার্সে চলে এলেন আসানসোলের একদল পর্যটক। ছবি: দীপঙ্কর ঘটক।

পথবদল: পাহাড়ে বেড়াতে এসে রাস্তা পাল্টে ডুয়ার্সে চলে এলেন আসানসোলের একদল পর্যটক। ছবি: দীপঙ্কর ঘটক।

পাহাড়ে অশান্তি। তাই পাহাড়কে এড়াতে পর্যটকের ঢল নামল ডুয়ার্সে। মোর্চার আন্দোলনের জেরে আতঙ্কিত পর্যটকদের বেশিরভাগই পাহাড় থেকে নেমে পড়তে বাধ্য হন। তাদেরই একটা বড় অংশ দলে দলে ভিড় জমাচ্ছেন ডুয়ার্সের বিভিন্ন জায়গায়৷

গরমের সময় দলে দলে পর্যটক পাহাড়ে পাড়ি দেন৷ তুলনায় ভিড় কম থাকে ডুয়ার্সে৷ কিন্তু বৃহস্পতিবার মোর্চার আন্দোলন নিমেষের মধ্যে পাল্টে দিয়েছে গোটা ছবিটাকে৷ ক্রমশ খালি হচ্ছে পাহাড়৷ আর পর্যটকদের একটা বড় অংশ ভিড় করছেন ডুয়ার্সে৷ তাই খুশি ডুয়ার্সের রিসর্ট মালিক থেকে শুরু করে পর্যটন ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত মানুষজন ও বন দফতরের কর্তারা, সকলেই৷

বৃহস্পতিবার দুপুর থেকে অশান্ত হতে শুরু করে পাহাড়৷ ফলে ওই দিন যারা পাহাড়ে উঠতে পারেননি তাদের একটা অংশ রাতেই ডুয়ার্সে চলে আসেন৷ আর মাঝপথে ঘোরা বাতিল করে পাহাড় থেকে নেমে আসা পর্যটকদের ভিড়টাও ডুয়ার্সে শুরু হয়ে যায় শুক্রবার সকাল থেকে৷ ফলে দিনভরই জমজমাট ছিল লাটাগুড়ি থেকে শুরু করে গরুমারা বা ধূপঝোরা-সহ অন্য জায়গাগুলি৷

লাটাগুড়ি রিসর্ট ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক দিব্যেন্দু দেব বলেন, ‘‘এই সময় গড়ে প্রতিদিন হাজার-বারোশো পর্যটকের ভিড় হয় লাটাগুড়িতে৷ কিন্তু শুক্রবার সেই সংখ্যা প্রায় দুই হাজারে পৌঁছেছে৷ এই ভিড় আরও বাড়বে বলেই মনে হচ্ছে৷’’ অ্যাসোসিয়েশনের সহ সভাপতি শান্তুনু কর বলেন, ‘‘পর্যটকরা নির্ভয়ে লাটাগুড়িতে আসতে পারেন৷ এখানে তাঁদের থাকতে কোনও সমস্যা হবে না৷ গরুমারা ট্যুরিজম ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের কোর কমিটির সদস্য প্রসেনজিৎ মজুমদার জানান, উত্তর ও দক্ষিণ ধুপঝোরা এবং মূর্তি এলাকার রিসর্টগুলিতেও বৃহস্পতিবার রাত থেকে ভিড় বাড়তে শুরু করেছে৷

মুখ্যমন্ত্রী যে দিন পাহাড়ে যান, সে দিন তার কনভয়ের পিছন পিছনেই পরিবার নিয়ে পাহাড়ে উঠেছিলেন বারুইপুরের বাসিন্দা শিবদাস মণ্ডল৷ তিনি জানান, শনিবার পর্যন্ত দার্জিলিং-এ থাকার কথা ছিল তাঁদের৷ তারপর লাভা, লোলেগাঁও ও রিশপে যাওয়ার পরিকল্পনা ছিল৷ তিনি বলেন, ‘‘কিন্তু বৃহস্পতিবার যে অভিজ্ঞতা হল, তা জীবনে আর কখনও হয়নি৷ দিনের বেলায় হোটেলের সামনে গাড়ি জ্বলছে৷ রাতে একটি ঘরে দরজা বন্ধ করে ও আলো নিভিয়ে ১২-১৩ জনকে একসঙ্গে থাকতে হয়েছে৷ শেষ পর্যন্ত হোটেল মালিকের সহযোগিতায় রাত তিনটে নাগাদ দ্বিগুণ ভাড়া দিয়ে একটি গাড়ি ঠিক করে শিলিগুড়িতে নামি৷’’ বারুইপুরেরই বাসিন্দা প্রতিমা মণ্ডল বলেন, ‘‘জীবনে প্রথমবার পাহাড় ঘোরার অভিজ্ঞতা এতটাই মধুর হল যে আর কোনও দিন সেখানে যাব না বলে ঠিক করে নিয়েছি৷’’

বসিরহাটের বাসিন্দা পল্লবী ঘোষও স্বামীর সঙ্গে জীবনে প্রথমবার পাহাড়ে ঘুরতে গিয়েছিলেন৷ উত্তপ্ত পরিস্থিতিতে বেশি টাকায় গাড়ি ভাড়া করে নামতে হয় তাদের৷ পল্লবীদেবীও বলেন, ‘‘জীবনে প্রথমবার পাহাড় ঘোরার অভিজ্ঞতাটা এমন হবে ভাবতেও পারিনি৷’’

শেষ পর্যন্ত এঁরা সকলেই পাহাড় ছেড়ে ডুয়ার্সে চলে আসতে পেরে খুশি। অন্যদিকে পর্যটকদের ভিড় একলাফে বেড়ে যাওয়ায় গরুমারায় জিপসি সাফারির দু’টি ট্রিপে দু’টি করে গাড়ি বাড়িয়ে দিয়েছেন বন দফতরের কর্তারা৷

Dooars Tourists Unrest Darjeeling ডুয়ার্স
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy