Advertisement
E-Paper

দুর্যোগে মৃত বেড়ে চার

সিমেন্টের সরু খুঁটি, বাঁশ আর টিন দিয়ে তৈরি ঘরে ছোট্ট ছোট্ট তিন মেয়েকে নিয়ে ঘুমিয়েছিলেন ছোট আস্কাপাড়ার সিতারা বিবি। কিন্তু শনিবার ভোরে আচমকা ঝড়ের তাণ্ডবে সেই ঘর হুড়মুড়িয়ে পড়েছিল তাঁদেরই উপরে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৭ মার্চ ২০১৭ ০২:০৩
দিশাহারা: বিধ্বস্ত সংসার। বিপাকে সিতারা বিবি। নিজস্ব চিত্র

দিশাহারা: বিধ্বস্ত সংসার। বিপাকে সিতারা বিবি। নিজস্ব চিত্র

সিমেন্টের সরু খুঁটি, বাঁশ আর টিন দিয়ে তৈরি ঘরে ছোট্ট ছোট্ট তিন মেয়েকে নিয়ে ঘুমিয়েছিলেন ছোট আস্কাপাড়ার সিতারা বিবি। কিন্তু শনিবার ভোরে আচমকা ঝড়ের তাণ্ডবে সেই ঘর হুড়মুড়িয়ে পড়েছিল তাঁদেরই উপরে। বরাত জোরে অবশ্য চার জনই কোনও রকমে প্রাণে বাঁচেন। প্রথমে দুমড়ে-মুচড়ে যাওয়া চালের সেই টিন কেটে বেরোতে পেরেছিলেন সিতারা বিবি।

তারপর ওই ঝড়ের মধ্যেই তিনি চিৎকার জুড়ে দিলে পাশেই থাকা আত্মীয় ও প্রতিবেশীরা এসে তাঁর তিন মেয়েকে উদ্ধার করে। চার জন অল্পবিস্তর জখমও হন। মাথা গোঁজার ঠাঁইটুকু ভেঙে গেলেও ঝড়ের প্রায় ৩০ ঘন্টা পর, রবিবার দুপুর পর্যন্ত কী পঞ্চায়েত বা প্রশাসনের তরফে কেউই তাঁর খোঁজ নেয়নি বলে অভিযোগ। মেলেনি ত্রাণও।

রাতে তিন মেয়েকে নিয়ে পাশেই এক বাড়ির খোলা বারান্দায় ছিলেন তাঁরা। আর এ দিন দিনভর খোলা আকাশের নীচেই কাটল। দুপুরের দিকে ৬ থেকে দেড় বছরের তিন শিশু খিদেয় যখন কাঁদছিল, প্রতিবেশীরাই খাবারের ব্যবস্থা করেন।

রতুয়া ২ ব্লকের শ্রীপুর ১ গ্রাম পঞ্চায়েতের ছোট আস্কাপাড়ার শুধু এই সিতারা বিবিই নন, পাশের বড় আস্কাপাড়া, পলাশতলা, নজরপুর, হরিরামপুর বা গোবিনপুর প্রভৃতি একাধিক গ্রামগুলির ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া পরিবারগুলির কাছে এ দিন দুপুর পর্যন্ত কোনও ত্রাণ পৌঁছয়নি বলে অভিযোগ। এ নিয়ে ক্ষোভও ছড়িয়েছে। ছোট আস্কাপাড়ার সিতারা বিবি বা পলাশতলার রাশেদা বেওয়ারা বলেন, শনিবার ভোর ৬টায় ঝড় হলেও এ দিন পর্যন্ত পঞ্চায়েত বা প্রশাসনের কেউই গ্রামে এসে খোঁজ নেননি।

এ দিকে, অনেকে আবার ত্রাণ পেতে আবেদনপত্র নিয়ে হত্যে দিয়েছেন গ্রাম পঞ্চায়েত অফিসেও, কিন্তু তাতেও চিঁড়ে যেমন ভেজেনি, তেমনি চিঁড়েও মেলেনি।

গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান আনসারিয়া খাতুন বলেন, ‘‘আমার গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় এক হাজারের বেশি বাড়ি পুরোপুরি ক্ষতিগ্রস্ত ও আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত প্রায় তিন হাজার। কিন্তু শনিবার গভীর রাতে মাত্র ১০৫টি ত্রিপল মিলেছে।’’ রতুয়া ২ ব্লকের বিডিও মোহন মাজি অবশ্য দাবি করেন, এলাকায় ঘুরে ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা হয়েছে। ত্রাণ পঞ্চায়েতে দেওয়া হয়েছে। বিকেলে সিতারা বিবিও ত্রাণ পেয়েছেন। জেলাশাসক তন্ময় চক্রবর্তী বলেন, ত্রাণ সমস্ত ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। শ্রীপুর ১ গ্রাম পঞ্চায়েতে কোন এ ধরনের অভিযোগ উঠছে তা খতিয়ে দেখা হবে।

এদিকে, মালদহ জেলায় ঝড়ে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ৪। শনিবার গাজোলে মুকলেশ রহমান (৫৮) ও চাঁচলে মনিরুল ইসলামের (৭) মৃত্যু হয়েছিল। ঝড়েই আহত থাকা আরও দু’জন এ দিন মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে মারা যান। জেলাশাসক বলেন, এ দিন বামনগোলা থেনাগড়ের সুধীর দত্ত (৬০) ও হবিবপুরের বেলডাঙার দেড় বছরের অঞ্চলা সোরেন মারা যান।

Death Storm
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy