জলপাইগুড়ির বন্ধ চা-নিলাম কেন্দ্রকে পুনরুজ্জীবিত করতে এই কেন্দ্রে নিলামে অংশ নেওয়া ক্রেতাদের ভ্যাট মুকুব করার দাবি উঠল৷ একই সঙ্গে জলপাইগুড়িতে থাকা বটলিফ কোম্পানিগুলি যাতে তাদের উৎপাদিত চায়ের অন্তত দশ শতাংশ জেলার এই চা-নিলাম কেন্দ্রে নিয়ে আসেন, তার দাবিও উঠেছে ৷ ইতিমধ্যেই এই দাবিগুলি নিয়ে উত্তরবঙ্গ চা-নিলাম কমিটির তরফে উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষের কাছে একটি চিঠিও পাঠানো হয়েছে৷
উত্তরবঙ্গ চা-নিলাম কমিটির কর্তাদের কথায়, জলপাইগুড়ি চা-নিলাম কেন্দ্রটি যাতে পাকাপাকিভাবেই বন্ধ না হয়ে যায়, সেজন্য এই ব্যবস্থাগুলি গ্রহণ করা প্রয়োজন৷ যেগুলি সরকারি হস্তক্ষেপ ছাড়া কার্যত অসম্ভব৷ তাই উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রীকে এই চিঠি প্রদান৷ তবে হাতে চিঠি না পেলেও জলপাইগুড়ি চা-নিলাম কেন্দ্রটি নিয়ে তিনি নিজেও যে চিন্তিত তা জানিয়েছেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়মন্ত্রী৷ ২০০৫ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি জলপাইগুড়ি চা-নিলাম কেন্দ্রটি চালু হয় ৷ তবে জন্মলগ্ন থেকেই চা পাতার অভাবে ধুঁকতে থাকে নিলাম কেন্দ্রটি ৷ যার জেরে উদ্বোধনের কয়েক মাসের মধ্যেই সেটি বন্ধ হয়ে যায় ৷ এমনকি ২০০৯ সালের পর দুই বছর সেখানে নিলাম বন্ধ থাকে৷ এরপর ২০০৯ সালে সেখানে নিলাম শুরু হলেও চা পাতার অভাব কেন্দ্রটিকে পিছু ছাড়েনি ৷ যার ফলে ২০১৫ সালের সেপ্টেম্বর মাসে সেখানে নিলামই বন্ধ হয়ে যায়৷
তবে উত্তরবঙ্গ চা নিলাম কমিটির কর্তাদের কথায়, জলপাইগুড়ি চা-নিলাম কেন্দ্রটি এই দশার কিছু কারণও রয়েছে৷ তাঁদের বক্তব্য, যে কোনও নিলাম কেন্দ্র চালু হওয়ার পরই ক্রেতাদের আর্থিক দিক থেকে সুবিধা দিতে নিলামকেন্দ্রগুলিকে কিছু সুবিধা দেওয়া হয় ৷ জলপাইগুড়ি চা-নিলাম কেন্দ্রের জন্য যা হয়নি বলেই অভিযোগ তাঁদের৷ উত্তরবঙ্গ চা-নিলাম কমিটির সম্পাদক নিরঞ্জন কুমার বসু বলেন, “সে জন্যই আমরা উত্তরবঙ্গ উন্নয়মন্ত্রীর কাছে আর্জি জানিয়েছি যে, জলপাইগুড়ি চা নিলাম কেন্দ্রে চা পাতা নিলামে ক্রেতাদের ভ্যাট যাতে আগামী দুই বছর মুকুব করা হয়৷ সেটা হলেই ক্রেতারা এই নিলাম কেন্দ্রের প্রতি আগ্রহ দেখাবেন৷ একই সঙ্গে জেলার বটলিফ কোম্পানিগুলিও যাতে তাদের উৎপাদিত চা পাতার অন্তত দশ শতাংশ এই চা নিলাম কেন্দ্রে পাঠান সেই ব্যবস্থা নেওয়ার জন্যও মন্ত্রীকে আবেদন জানয়েছি৷”
উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ অবশ্য বলেন, “উত্তরবঙ্গ চা নিলাম কমিটির কোনও চিঠি এখনও হাতে পৌঁছয়নি৷ তবে জলপাইগুড়ি চা নিলাম কেন্দ্রটি নিয়ে আমি নিজেও চিন্তিত৷ কী করে এই নিলাম কেন্দ্রটিকে পুনরুজ্জীবিত করা যায় তা নিয়ে খুব শীঘ্রই সরকারের সঙ্গে কথা বলব৷ এবং এই নিলাম কেন্দ্র বাঁচাতে চা-শিল্পের সঙ্গে যুক্তদের পরামর্শও তুলে ধরব৷”
তবে জলপাইগুড়ি জেলার চা বাগান মালিকদের একাংশের মতে, শুধু ভ্যাট মুকুব করেই জলপাইগুড়ি চা নিলাম কেন্দ্রকে পুনরুজ্জীবিত করা যাবে না। এর জন্য দরকার নিলাম কেন্দ্রের পরিকাঠামোগত উন্নয়নও৷ সেটা না হলে এই নিলাম কেন্দ্র নিয়মিত ভাবে চালু রাখা কার্যত অসম্ভব ৷
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy