‘সাইলেন্ট জোন’ সাগরদিঘি চত্বরে এ ভাবেই চলল গ্রেটার কোচবিহার পিপলস অ্যাসোসিয়েশনের মিছিল। ছবি: হিমাংশুরঞ্জন দেব।
পাহাড়ে মুখ্যমন্ত্রীর সফর চলাকালীন পৃথক রাজ্যের দাবিতে উত্তেজনা ছড়াল কোচবিহারে। সোমবার গ্রেটার কোচবিহার পিপলস অ্যাসোসিয়েশনের তরফে ফের কোচবিহারের রাজ্য স্বীকৃতির দাবিতে জোরালো আন্দোলনে নামেন গ্রেটার নেতৃত্ব। শহরে মিছিল করা হয়। কোচবিহারের জেলাশাসকের দফতরের সামনে যাতায়াতের রাস্তা দখল করে অবস্থান বিক্ষোভও চলে। যার জেরে ব্যাপক যানজট তৈরি হয়। ভোগান্তি পোহান বাসিন্দারা। আন্দোলনকারীদের দাবি, ভারত ভুক্তির চুক্তি অনুযায়ী কোচবিহার ‘গ’ শ্রেণীর রাজ্য। বেআইনিভাবে কোচবিহারকে জেলার মর্যাদা দেওয়া হয়েছে। বারবার প্রশাসনের নানা মহলে দাবি জানিয়েও কাজ হচ্ছে না। তাই বাধ্য হয়েই এদিন ফের আন্দোলন কর্মসূচি নেওয়া হয়। গ্রেটার কোচবিহার পিপলস অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক বংশীবদন বর্মন বলেন, “পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীর এখানে কোনও ভূমিকা নেই। আমরা দিল্লিতে সমস্ত দাবি জানাচ্ছি। আমাদের দাবি না পূরণ হলে বৃহত্তর আন্দোলন হবে।”
গ্রেটারের তরফে সরকারি ভাবে প্রতি বছর ১২ সেপ্টেম্বর কোচবিহারের ভারতভুক্তি দিবসের দাবিও জানান হয়। সংগঠনের দাবি, ১৯৪৯ সালের ১২ সেপ্টেম্বর কোচবিহার রাজ্য ভারতের সঙ্গে চুক্তি করে যুক্ত হয়। এ ছাড়াও কোচবিহারকে করমুক্ত ঘোষণা, কৃষকদের বিদ্যুৎ বিল মুকুবের দাবিও জানান হয়। এদিন দুপুর ১২টা থেকে গ্রেটার সমর্থকরা মিছিল করে কোচবিহার শহরে ঢুকতে শুরু করেন। ঘণ্টা খানেকের মধ্যে শহরের একাধিক রাস্তা প্রায় অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে। ফলে স্বাভাবিক যান চলাচল ব্যাহত হয়। বিকেল ৩টা নাগাদ মিছিল করে জেলাশাসকের দফতরের সামনের রাস্তার ওপর সর্মথকদের বসিয়ে অবস্থান বিক্ষোভ শুরু হয়। জেলাশাসকের দফতরে যাতায়াত বন্ধ হয়ে যায়। ঘুরপথে যানবাহন চলে। প্রশাসনের তরফ থেকে কোচবিহারের অতিরিক্ত জেলাশাসক চিরঞ্জীব ঘোষকে স্মারকলিপি দেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়। কিন্তু গ্রেটার নেতারা জেলাশাসককেই স্মারকলিপি দেবেন বলে দাবি করেন। এ নিয়ে প্রায় দুই ঘণ্টা চাপানউতোর চলতে থাকে। যার জেরে উত্তেজনাও ছড়িয়ে পড়ে। পুলিশ ও কমব্যাট ফোর্সের বিশাল বাহিনী এলাকা ঘিরে ফেলে। শেষপর্যন্ত অতিরিক্ত জেলাশাসককেই তাঁরা স্মারকলিপি দেন। পরে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আলোচনা করেন জেলাশাসক পি উল্গানাথন।
গ্রেটার নেতাদের দাবি, জেলাশাসক ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়গুলি জানানোর আশ্বাস দিয়েছেন। কোচবিহারের অতিরিক্ত জেলাশাসক চিরঞ্জীব ঘোষ বলেন, “ স্মারকলিপি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নজরে আনব।” প্রসঙ্গত, ২০১১ সালে গ্রেটারের পৃথক রাজ্যের দাবি ঘিরে আন্দোলনে রক্তাক্ত হয়ে উঠেছিল কোচবিহার। দুই আন্দোলনকারী ও এক অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের মৃত্যু হয়।
বাম জমানায় ওই ঘটনার জেরে বংশীবদনবাবু সহ গ্রেটারের কর্মী সমর্থকদের বিরুদ্ধে মামলা হয়। তৃণমূল জমানায় বংশীবদনবাবু সহ অন্যরা জামিনে ছাড়া পান। সম্প্রতি অবশ্য সকলেই আদালতের রায়ে বেকসুর খালাস হন। তবে বিধানসভা ভোটের মুখে পাহাড়ে রাজ্যের দাবি সামলাতে ব্যস্ততার মুখে কোচবিহার রাজ্যের দাবি শাসক দলের অস্বস্তি বাড়াতে পারে বলে রাজনৈতিক নেতাদের একাংশ আশঙ্কা করছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy