Advertisement
E-Paper

হনুমানের তাণ্ডবে জখম বাসিন্দারা, বন্ধ স্কুল

বাঁদরের তাণ্ডবে অতিষ্ঠ ছিলেন বাসিন্দারা। সপ্তাহ দুয়েক আগে এলাকায় হাজির হয় এক হনুমান। তাকে দেখে বাঁদরেরা পালাতে শুরু করলে হাঁফ ছেড়ে বেঁচেছিলেন বাসিন্দারা। কিন্তু দিন কয়েক যেতে না যেতেই মালদহের রতুয়া ২ ব্লকের একবর্ণা এলাকায় সেই হনুমানের তাণ্ডবে এ বার স্কুলে ছুটি ঘোষণা করতে হল।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৫ ০১:৫০
আহত রয়েল ঝাঁ। —নিজস্ব চিত্র।

আহত রয়েল ঝাঁ। —নিজস্ব চিত্র।

বাঁদরের তাণ্ডবে অতিষ্ঠ ছিলেন বাসিন্দারা। সপ্তাহ দুয়েক আগে এলাকায় হাজির হয় এক হনুমান। তাকে দেখে বাঁদরেরা পালাতে শুরু করলে হাঁফ ছেড়ে বেঁচেছিলেন বাসিন্দারা। কিন্তু দিন কয়েক যেতে না যেতেই মালদহের রতুয়া ২ ব্লকের একবর্ণা এলাকায় সেই হনুমানের তাণ্ডবে এ বার স্কুলে ছুটি ঘোষণা করতে হল। এরই মধ্যে তার হানায় আহত হয়েছেন অন্তত ২০ জন।

গত দু’দিন ধরে এলাকার হাইস্কুল চত্বরে হামলা চালিয়ে সে কারও হাত, পা এমনকী মাথা থেকেও মাংস খুবলে নিয়ে পালিয়েছে বলে অভিযোগ। কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, হনুমান ধরা না পড়লে স্কুল খোলা হবে না। গত কয়েক দিন ধরে তার দাপটে স্কুল পড়ুয়া-সহ বাসিন্দাদের মধ্যে ত্রাহি রব উঠলেও বন দফতর বা প্রশাসন কেন ব্যবস্থা নিচ্ছে না সেই প্রশ্ন উঠেছে। জেলা প্রশাসন ও বন দফতরকে লিখিত ভাবে জানানোর পরেও হনুমান খাচাবন্দি না হওয়ায় ক্ষুব্ধ স্কুল কর্তৃপক্ষ।

মালদহের জেলাশাসক শরদ কুমার দ্বিবেদী বলেন, ‘‘বন দফতরের সঙ্গে কথা হয়েছে। ওদের দ্রুত ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।’’

মালদহের ডিএফও কৌশিক সরকার বলেন, ‘‘হনুমানটিকে ধরার চেষ্টা চালানো হচ্ছে। কিন্তু তাকে বাগে পাওয়া যাচ্ছে না।’’

কিন্তু কখনও স্কুলে, কখনও রাস্তায় এমনকী বাড়িতে চড়াও হয়েও বাসিন্দাদের শরীর থেকে মাংস খুবলে নিয়ে পালাচ্ছে সে। এমন আচরণ যে হনুমানের মধ্যে সচরাচর দেখা যায় না তা বন দফতর সূত্রেই জানা গিয়েছে। তা হলে ওই হনুমানটির এমন ক্ষেপে ওঠার কারণ কি? ডিএফও জানান, হনুমানটি ওই এলাকায় একা রয়েছে। হতে পারে সঙ্গী না পেয়ে সে এমন আচরণ করতে শুরু করেছে।

রতুয়া-২ ব্লকের আড়াইডাঙা পঞ্চায়েতের বর্ধিষ্ণু এলাকা একবর্ণা। বাসিন্দাদের সূত্রেই জানা গিয়েছে, গাছপালা থাকায় এলাকায় গত কয়েক বছর ধরেই কয়েকটি বাঁদরের উত্পাতে তারা অতিষ্ঠ ছিলেন। তবে বাড়ির ছাদ বা উঠোন থেকে কলা-মুলো নিয়েই সন্তুষ্ট থাকত তারা। কখনও তাদের আক্রমণের মুখে পড়তে হয়নি। সপ্তাহ দুয়েক আগে হঠাৎ হনুমানটিকে এলাকায় ঘুরতে দেখা যায়। হনুমানের দাপটে বাঁদরেরা এলাকা ছেড়ে গা ঢাকা দেওয়ায় থাকায় বেশ খুশিই ছিলেন বাসিন্দারা। কিন্তু কয়েক দিন বাদেই আচমকা তার স্বভাব পাল্টে যায়। পথেঘাটে এমনকী বাড়িতে ঢুকেও একের পর এক বাসিন্দাকে আক্রমণ করতে শুরু করে হনুমানটি। ঝাঁপিয়ে পড়ে শরীরের নানা অংশ থেকে মাংস খুবলে নিচ্ছে সে।

স্কুলে যাওয়ার সময় সপ্তম শ্রেণির ছাত্র রয়েল ঝাঁ-র কপালের মাংস খুবলে নেয় হনুমান। বাধা দেওয়ায় তার দু’হাতের মাংস খুবলে নেয়। মালদহ মেডিক্যাল কলেজে থেকে এ দিন বাড়ি ফিরলেও তার চোখেমুখে আতঙ্কের ছাপ স্পষ্ট। সে বলে, ‘‘হনুমানটি ঝাঁপিয়ে পড়ার পর ভেবেছিলাম মরেই যাব। কিন্তু লোকজন ছুটে আসতেই আমাকে ছেড়ে পালায়।’’ একই অভিজ্ঞতা সিন্টু কর্মকার নামে এক বালকেরও। অভিযোগ, রান্নাঘরে ঢুকে তার হাত থেকে মাংস খুবলে নেয় হনুমানটি।

একবর্ণা গদাধর বিদ্যাপীঠের প্রধান শিক্ষক মাধব সাহা বলেন, ‘‘গত দু’দিনে স্কুলের পাঁচ জন ছাত্র হনুমানটির হানায় গুরুতর জখম হয়েছে। তাই বাধ্য হয়েই সোমবার পর্যন্ত পড়ুয়াদের ছুটি দেওয়া হয়েছে। তবে শিক্ষকেরা স্কুলে আসবেন। হনুমানটি ধরা না পড়া অবধি স্কুল চালানো সম্ভব নয়। সমস্যার কথা লিখিত ভাবে জেলাশাসক ও বন দফতরকে জানিয়েছি।’’

এলাকার বাসিন্দা অলক ঝাঁ, সরোজ ঝাঁ-রা জানান, শুধু বাইরে নয়। বাড়িতেও আতঙ্কে থাকতে হচ্ছে।

desperate monkey creating trouble ratua malda ratua
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy