Advertisement
E-Paper

বাজেট শুনেই হতাশা নামল সিংমারিতে

পাহাড়ে এগিয়ে আসছে ভোট মরসুম। এর মধ্যে বারবার আসছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পরিস্থিতি সামলাতে জোট সঙ্গী বিজেপি নেতৃত্বের দিকে তাকিয়ে ছিলেন মোর্চা নেতৃত্ব।

কিশোর সাহা

শেষ আপডেট: ০২ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ০১:৪৯
শীতের সকালে চা বাগানের কাজে শ্রমিকেরা।-ফাইল চিত্র।

শীতের সকালে চা বাগানের কাজে শ্রমিকেরা।-ফাইল চিত্র।

পাহাড়ে এগিয়ে আসছে ভোট মরসুম। এর মধ্যে বারবার আসছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পরিস্থিতি সামলাতে জোট সঙ্গী বিজেপি নেতৃত্বের দিকে তাকিয়ে ছিলেন মোর্চা নেতৃত্ব। কিন্তু বুধবার সংসদে যে সাধারণ বাজেট পেশ করলেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি, সেখানে পাহাড় নিয়ে বিশেষ উচ্চবাচ্য নেই। তাই বাজেট পেশের পরে ভরদুপুরে ম্রিয়মান হয়ে গেল সিংমারি।

দার্জিলিঙের সিংমারিতেই গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার সদর দফতর। দুপুর থেকে সেখানে মোর্চা সমর্থকদের মুখ ভার। নিচুতলার সমর্থকদের মধ্যে হতাশা স্পষ্ট। একই ছবি কালিম্পং চৌরাস্তা লাগোয়া পার্টি অফিস বা কার্সিয়াঙে মোটর স্ট্যান্ডের অদূরের কার্যালয়টিতেও।

মোর্চা নেতাদেরও অনেকেই উদ্বিগ্ন। কারণ, মোর্চার সমর্থনে বিজেপি দু’দফায় দার্জিলিং লোকসভা আসনটি জেতার পরেও কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘোষণা হয়নি। এ বারও হল না। মোর্চার কেউ কেউ বলছেন, পাহাড়ে উন্নয়নের জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের কাছ থেকে বারবার দরবার করা সত্ত্বেও এ দিন অরুণ জেটলি ছিলেন আশ্চর্য রকমের নিশ্চুপ। এই অবস্থায় স্বাভাবিক ভাবেই বিরূপ সমালোচনা শুরু করে দিয়েছে বিরোধীরা। সে না হয় সহ্য করা গেল। কিন্তু আসন্ন পুরসভা-পঞ্চায়েত এবং জিটিএ ভোটে দলের নিরঙ্কুশ জয় নিশ্চিত করা যাবে কী ভাবে, তাই এখন চিন্তার বিষয় তাঁদের কাছে।

ঘটনাচক্রে, মদন তামাঙ্গ হত্যা মামলার বিচার পর্ব শুরুর হলে বিমল গুরুঙ্গ-সহ প্রথম সারির ১০ জন নেতাকে কলকাতায় থাকার নির্দেশ দিয়েছে উচ্চ আদালত। আপাতত, সকলেই সেখানে রয়েছেন। ফলে বিরোধীরা কিছুটা খোলা ময়দান পেয়ে গিয়েছে বলে মনে করছেন পাহাড়ের লোকেরাই। এই মুহূর্তে মোর্চা নেতারা বাজেট নিয়ে মুখে কুলুপ এঁটেছেন। কয়েক জন জানিয়েছেন, তাঁরা চলতি মাসেই দিল্লি গিয়ে সরাসরি প্রধানমন্ত্রীর কাছে দরবারের চেষ্টা করবেন।

মোর্চার সাধারণ সম্পাদক রোশন গিরি বলেন, ‘‘পূর্ণাঙ্গ বাজেট হাতে পেলে তা ভাল করে বুঝতে হবে। তার পরেই সব বলব। এখন শুধু এটুকু বলতে পারি, আমরা এত সহজে হতাশ হই না।’’ বিজেপির দার্জিলিং জেলার সমতলের সাধারণ সম্পাদক অভিজিৎ রায়চৌধুরী অবশ্য দাবি করেন, হতাশার বিষয়টি ভিত্তিহীন। তিনি বলেন, ‘‘আমাদের দার্জিলিঙের সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী এখানে এলে পাহাড়ের বিষয়ে বিশদে বলবেন।’’

পাহাড়ে তৃণমূলকে আটকাতে শুধু কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয় গড়াই নয়, দার্জিলিঙের পর্যটন, চা, পরিবহণের ব্যাপারে কেন্দ্রের তরফে প্যাকেজ পেতেও চেষ্টা চালিয়েছেন মোর্চা নেতারা। আগে ছিলেন যশোবন্ত সিংহ। তবে সেই সময়ে কেন্দ্রে ক্ষমতায় ছিল কংগ্রেস। ২০১৪ সালে মোর্চার সমর্থনে জেতেন বিজেপির সুরেন্দ্র সিংহ অহলুওয়ালিয়া। পরে তিনি কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী হলে প্রত্যাশা বেড়েছে মোর্চার মধ্যে।

কিন্তু দিনের পর দিন মমতা পাহাড়ে এসে বোর্ড গড়ে বা অন্য ভাবে উন্নয়নের বার্তা দেওয়ার পরে এ দিনের বাজেটে যে তাঁদের হাতে বিশেষ কিছুই রইল না, সেটা মেনে নিচ্ছেন মোর্চা কর্মী-সমর্থকেরা। পাহাড়ে তৃণমূলের মুখপাত্র বিন্নি শর্মাও বলেছেন, ‘‘পাহাড়ে উন্নয়ন করছেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁকে ঘিরে প্রত্যাশার পারদ এখন আকাশছোঁয়া।’’ একই সঙ্গে তাঁর কটাক্ষ, ‘‘মোর্চার দৌড় কতটা, তা-ও এ দিন স্পষ্ট হল।’’

জন আন্দোলন পার্টির নেতা হরকাবাদুর ছেত্রী বলেন, ‘‘মোর্চায় থাকাকালীন অনেক বুঝিয়েছিলাম, যিনি পাহাড়ের উন্নয়নে গতি আনতে পারেন তাঁর হাত ধরেই চলা উচিত। এখন দেখুন, দিল্লি ছোটাছুটি করেও ওঁরা খালি হাতে ফিরেছেন।’’

Disappointment General Budget 2017 Singamari Gorkha Janmukti Morcha
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy