Advertisement
E-Paper

রাজার হালে কালীর দৌড়

ঢাকের তালে তাল মিলিয়ে কাঁধে কালী প্রতিমা নিয়ে পাশাপাশি উর্ধ্বগতিতে ছুটছেন সকলে। আতসবাজির রোশনাইয়ে আলোয় ঝলমল করছে চারদিক। স্থানীয় বাসিন্দা তো বটেই, দূর দূরান্ত থেকে আসা দর্শনার্থীদের ভিড়ে ছয়লাপ গোটা এলাকা।

বাপি মজুমদার

শেষ আপডেট: ০১ নভেম্বর ২০১৬ ০২:৫২
কালী প্রতিমা কাঁধে করে চাঁচলে রাজ আমলের দৌড়। — নিজস্ব চিত্র

কালী প্রতিমা কাঁধে করে চাঁচলে রাজ আমলের দৌড়। — নিজস্ব চিত্র

ঢাকের তালে তাল মিলিয়ে কাঁধে কালী প্রতিমা নিয়ে পাশাপাশি উর্ধ্বগতিতে ছুটছেন সকলে। আতসবাজির রোশনাইয়ে আলোয় ঝলমল করছে চারদিক। স্থানীয় বাসিন্দা তো বটেই, দূর দূরান্ত থেকে আসা দর্শনার্থীদের ভিড়ে ছয়লাপ গোটা এলাকা। বাড়ির ছাদেও তিল ধারণের ঠাঁই নেই। শৃঙ্খলা বজায় রাখতে ছুটোছুটি করছে পুলিশবাহিনী।

কালীপুজো নয়। বিসর্জনের রাতে সেই ‘কালীদৌড়’কে ঘিরেই মেতে ওঠেন চাঁচলের মালতীপুর সহ লাগোয়া এলাকার বাসিন্দারা। সাতটি কালী প্রতিমা কাঁধে নিয়ে সেই কালীদৌড় যে কেমন হতে পারে তা না দেখলে বিশ্বাস করা কঠিন। ৩০০ বছরের পুরনো প্রথা মেনে রবিবার গভীর রাত পর্যন্ত চলল সেই প্রতিযোগিতা।

৮১ নম্বর জাতীয় সড়কের পাশে মালতীপুর দুর্গা মণ্ডপের সামনের খোলা প্রাঙ্গণে ওই কালীদৌড় আজও এক রাজকীয় ব্যাপার। মণ্ডপ থেকে দেবী প্রতিমাকে শক্ত বাঁশের মাচায় চাপিয়ে উদ্যোক্তারা গোটা এলাকা ঘুরে হাজির হন দুর্গা মণ্ডপে কালীদৌড়ের আসরে। দুর্গা মণ্ডপে ঢোকার ৪টি রাস্তা রয়েছে। এক এক করে ঢাকের তালে তালে সেখানে দেবী প্রতিমাকে কাঁধে নিয়ে নাচতে নাচতে হাজির হন পুজোর উদ্যোক্তারা। এর পর সেই মণ্ডপ থেকেই শুরু হয় কালীদৌড় প্রতিযোগিতা। কিছু ক্ষণ পর ফের যে যার পুজো মণ্ডপে ফিরে যান। দেবীকে কাঁধে নিয়ে গোটা এলাকা প্রদক্ষিণ করে ফের ফিরে আসেন দুর্গা মণ্ডপে। তার পর ফের শুরু হয় কালীদৌড়।

মালতীপুরে ওই কালীদৌড় অবশ্য শুরু হয়েছিল চাঁচলের রাজার উদ্যোগে। রাজার পূর্বপুরুষরা তখন এলাকার জমিদার ছিলেন। মালতীপুর কালীমন্দিরে রয়েছে রাজকালী। যা এলাকায় বুড়িকালী নামে পরিচিত। তা ছাড়া এলাকার দরিদ্র মানুষেরা মিলিত ভাবে আর একটি পুজো করতেন, যা পরিচিত ছিল বাজারকালী নামে। পুজোয় চাঁচল থেকে হাতিতে চেপে হাজির হতেন রাজা সহ রাজ পরিবারের লোকজনেরা। এক সময় রাজার খেয়াল হল, দুই কালীর মধ্যে দৌড় প্রতিযোগিতা হবে। দু’পক্ষের উদ্যোক্তাদের কাঁধে প্রতিমা নিয়ে দৌড়তে হবে। বিজয়ীকে পুরস্কৃত করবেন রাজা। রাজা নেই। কিন্তু দৌড় বন্ধ হয়নি। এখন বেড়েছে পুজোর সংখ্যাও। এলাকায় ৭টি পুজো হয়।

প্রতিযোগিতা বলা হলেও এখন আর পুরস্কৃত করার রেওয়াজ নেই! যাঁরা জয়ী হন আত্মতৃপ্তিটুকুই তাঁদের কাছে বড় পাওনা। উদ্যোক্তাদের তরফে আদিত্য দাস বলেন, ‘‘এই কালীদৌড়ের জন্য প্রত্যেকেই আমরা সারাবছর অপেক্ষা করে থাকি।’’

Kali puja
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy