Advertisement
E-Paper

বহুজাতিক ক্রেতা কম, হোঁচট চা নিলামে

বেশি সংখ্যায় বহুজাতিক ক্রেতা না থাকায় প্যান ইন্ডিয়া নিলাম শুরুর দিনেই শিলিগুড়ি কেন্দ্রে মুখ থুবড়ে পড়ল চা পাতা বিক্রি। বৃহস্পতিবার শিলিগুড়ি নিলাম কেন্দ্রে মাত্র ৮ শতাংশ চা বিক্রি হয়েছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৪ জুন ২০১৬ ০৭:৫৬
বন্ধ হয়ে রয়েছে শিলিগুড়ি টি-অকশন সেন্টারে কেনাবেচা। ছবিটি তুলেছেন বিশ্বরূপ বসাক।

বন্ধ হয়ে রয়েছে শিলিগুড়ি টি-অকশন সেন্টারে কেনাবেচা। ছবিটি তুলেছেন বিশ্বরূপ বসাক।

বেশি সংখ্যায় বহুজাতিক ক্রেতা না থাকায় প্যান ইন্ডিয়া নিলাম শুরুর দিনেই শিলিগুড়ি কেন্দ্রে মুখ থুবড়ে পড়ল চা পাতা বিক্রি। বৃহস্পতিবার শিলিগুড়ি নিলাম কেন্দ্রে মাত্র ৮ শতাংশ চা বিক্রি হয়েছে। প্যান ইন্ডিয়ার নয়া বিধিতে আপত্তি জানিয়ে শিলিগুড়ি নিলাম কেন্দ্রের ক্রেতাদের একাংশ বয়কট করায় এ দিন ৯২ শতাংশ চা অবিক্রিতই থেকে গিয়েছে। মুষ্টিমেয় বহুজাতিক ক্রেতারা শুধু চা কিনেছেন।

বিক্রেতাদের সংগঠন শিলিগুড়ি টি ট্রেডার্স অ্যাসোসিয়েশনের দাবি, দেশ জুড়েই বিক্রেতাদের সংগঠন প্যান ইন্ডিয়ার বিধিনিষেধে প্রতিবাদ করে নিলাম বয়কট করেছে। শিলিগুড়ি চা নিলাম কেন্দ্রের সম্পাদক পঙ্কজ কুমার দাস বলেন, ‘‘কিছু ক্রেতা এ দিন নয়া বিধি নিয়ে প্রতিবাদ জানিয়ে, নিলামে অংশ নেননি। সে কারণেই এই কেন্দ্রের নিলাম বাধা পেয়েছে।’’

চলতি বছরের শুরু থেকেই প্যান ইন্ডিয়া চালু করতে কেন্দ্রীয় সরকার তথা চা পর্ষদ উদ্যোগী হয়। বর্তমানে অধিকাংশ চা নিলাম কেন্দ্রেই নিলাম অনলাইন হয়ে গিয়েছে। প্যান ইন্ডিয়া ব্যবস্থায় দেশের সব চা নিলামের যাবতীয় প্রক্রিয়া অনলাইন ব্যবস্থায় একটি মাত্র সার্ভারে জুড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। নিলাম প্রক্রিয়াকে এক ছাতার তলায় আনতেই এই উদ্যোগ বলে পর্ষদের তরফে জানানো হয়। এই ব্যবস্থায় দেশের সব কেন্দ্রে একই সময়ে নিলাম হবে এবং দেশের যে কোনও প্রান্তে বসে যে কোনও জায়গার চা কেনা সম্ভব হবে। এত দিন এক একটি কেন্দ্রে বিভিন্ন দিনে এবং সময়ে নিলাম হতো এবং এক এলাকার চা অন্য এলাকা থেকে অনলাইনে কেনাতেও নানা জটিলতা ছিল বলে দাবি। সে সব কাটাতেই নতুন ব্যবস্থা চালু হয়। এই ব্যবস্থার নানা বিধি নিষেধকে বিক্রেতাদের একাংশ স্বাগত জানালেও, ক্রেতাদের বিভিন্ন সংগঠন আপত্তি জানিয়েছে।

শিলিগুড়ির বিক্রেতাদের অভিযোগ, প্যান ইন্ডিয়া বিধি নিষেধে ন্যূনতম চা কেনার মাত্রা বাড়িয়ে দিয়েছে। আগে যেখানে ১৫০ কেজি চা কেনার ন্যূনতম পরিমাণ ছিল, তা বাড়িয়ে প্রায় ছ’শো কেজি করে দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়াও নিলামের পরে টাকা পরিশোধের সময় কমানো হয়েছে, কোনও বিক্রেতাকে অগ্রিম অর্থ দেওয়া, এক জন ক্রেতার হয়ে প্রতিনিধির নিলাম অংশ নেওয়া সবই নিষেধ করে দেওয়া হয়েছে বলে বিক্রেতাদের সংগঠনের ক্ষোভ। সংগঠনের সাম্মানিক সম্পাদক অঙ্কিত লোচন বলেন, ‘‘প্যান ইন্ডিয়ার যে নিয়ম নীতি তৈরি করা হয়েছে, তাতে বিক্রেতাদের প্রতিকূলতার দিকে ঠেলে দেওয়া হয়েছে। সে কারণেই প্রতিবাদ হিসেবে আজ বয়কট করেছি।’’ সংগঠনের সভাপতি রাজকুমার ডালমিয়া বলেন, ‘‘আমরা প্যান ইন্ডিয়ার বিরুদ্ধে নয়, শুধু কিছু নিয়মের শিথিলতা চেয়েছি। চা পর্ষদকে স্মারকলিপি দিয়েও কোনও ফল হয়নি।’’

অন্য মতও রয়েছে। যে কোনও কেন্দ্রের চা নিলামে সারা দেশের ক্রেতাদের কাছে কেনায় সমস্যা না থাকায়, চা পাতার দামও বাড়বে বলে দাবি। ক্ষুদ্র চা চাষি সংগঠনের সর্বভারতীয় সংগঠনের সভাপতি বিজয়গোপাল চক্রবর্তী বলেন, ‘‘প্যান ইন্ডিয়া ব্যবস্থা আমাদের কাছে সব সময়েই স্বাগত। চা পাতার দাম বাড়ায় ছোট চাষিরা উপকৃত হবে।’’

শিলিগুড়ি কেন্দ্র থেকে দেশের সর্বাধিক সিটিসি চা পাতা বিক্রি হয়। এ দিন শিলিগুড়িতে মাত্র তিনটি বহুজাতিক সংস্থা চা পাতা কিনেছে। প্রায় সাড়ে চারশো বিক্রেতা নিলামে অংশ নেয়নি। গত বছর ১২৭ মিলিয়ন কেজি চা পাতা বিক্রি হয়েছে এই কেন্দ্র থেকে। লেনদেনের পরিমাণ প্রায় ২৪০০ কোটি টাকা। সপ্তাহে একদিনের নিলামে ৩৫ লক্ষ কেজি চা পাতা বিক্রি হয়। ছোট-বড় মিলিয়ে উত্তরবঙ্গের প্রায় আড়াইশো চা বাগানের পাতা পৌঁছয় এই কেন্দ্রে। যদিও, প্যান ইন্ডিয়া ব্যবস্থা লাগু হওয়ার প্রথম দিনেই বিক্রেতা এবং চা পর্ষদের এই টানাপোড়েনে চা বিক্রিই থমকে থাকল।

Pan india siliguri auction centre tea leave customers
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy