মালদহের বার্লো বালিকা বিদ্যালয়ের প্রাথমিক বিভাগের তিন ছাত্রীর গায়ে জল ঢেলে দেওয়ার অভিযোগ উঠল স্কুল সংলগ্ন একটি বাড়ির এক বাসিন্দার বিরুদ্ধে। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে মঙ্গলবার সকালে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে স্কুল চত্বর। বিষয়টি জানাজানি হতেই অভিভাবকরা ওই ব্যক্তির উপর চড়াও হয়ে তাকে বেধড়ক মারধর করে। পরে পুলিশ গিয়ে তাকে উদ্ধার করে। ওই ব্যক্তিকে আটক করা হয়েছে।
অভিযোগ, এ দিন সকাল ন’টা নাগাদ স্কুলবাড়ির পেছন দিকে শৌচালয়ে গেলে খুদে ওই ছাত্রীদের গায়ে জল ঢেলে দেন মানব চৌধুরী নামে ওই ব্যক্তি। পাশাপাশি স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকাদেরও এ দিন তিনি অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করেন তিনি। স্কুল ছুটির পর মেয়েদের নিতে এসে অভিভাবকরা বিষয়টি জানতে পেরে ক্ষোভে ফেটে পড়েন। প্রথমে উত্তেজিত অভিভাবকরা স্কুল লাগোয়া পুলিশ সুপারের বাংলোর সামনে বিক্ষোভ দেখানো শুরু করেন। তারপরেই তারা চড়াও হন ওই ব্যক্তির বাড়ি। মারধর করা হয় তাকে। খবর পেয়ে ইংরেজবাজার থানার পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেয় এবং ওই ব্যক্তিকে উদ্ধার করে নিয়ে আসে। স্কুলের তরফে প্রধান শিক্ষিকা মানববাবুর নামে থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন। অপরদিকে মানববাবুর পরিবারের তরফেও প্রধান শিক্ষিকার বিরুদ্ধে লোক পাঠিয়ে মারধরের পাল্টা অভিযোগ করা হয়েছে। ইংরেজবাজার থানার আইসি পূর্ণেন্দু কুণ্ডু বলেন, ‘‘দু’তরফেই অভিযোগ হয়েছে। ঘটনার তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। মানববাবুকে আটক করা হয়েছে।’’
ইংরেজবাজার রামকৃষ্ণ মিশন রোড ও পুলিশ সুপারের বাংলোর কাছেই মালদহের ঐতিহ্যবাহী বার্লো বালিকা প্রাথমিক বিদ্যালয়। পাশেই রয়েছে উচ্চ বিদ্যালয়টি। প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পেছন দিকে রয়েছে স্কুলের প্রাথমিক বিভাগের শৌচাগার। তার ওপারেই মানব চৌধুরীর বাড়ি। জানা গিয়েছে, তাঁর বাড়ির পাশে স্কুলের ওই শৌচাগারটি নিয়ে অনেক দিন ধরেই কর্তৃপক্ষের সঙ্গে তাঁর ঝামেলা চলছে। এ দিন স্কুল চলাকালীন নার্সারি ও দ্বিতীয় শ্রেণির পড়ুয়া তিন ছাত্রী শৌচাগারে ঢোকার সময় মানববাবু তাঁর দোতলা ঘর থেকে এক বালতি জল ওই তিন ছাত্রীর গায়ে ঢেলে দেন। ছাত্রীদের চিৎকারে শিক্ষক-শিক্ষিকারা ছুটে যান। অভিযোগ, ওই ব্যক্তি তখন তাঁদেরও গালিগালাজ করেন। স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা গীতালি মণ্ডলের অভিযোগ, ওই ব্যক্তি দীর্ঘদিন ধরেই স্কুলের পড়ুয়া ও ছাত্রীদের উপর নানাভাবে অত্যাচার চালাচ্ছেন। কখনও গালিগালাজ করছেন, কখনও ছাত্রীদের লক্ষ্য করে ঢিল ছুড়ছেন। এমন কী গত ২০ তারিখ স্কুলে ঢুকে শৌচাগারে তালা ঝুলিয়ে দিয়ে যান তিনি। পরের দিন ওই শৌচাগার ব্যবহার করতে পারেনি ছাত্রীরা। পুলিশ এসে তালা ভেঙে ঢোকার ব্যবস্থা করে।
গীতালিদেবী বলেন,‘‘সেদিনই বিষয়টি জানিয়ে ইংরেজবাজার থানায় ওই ব্যাক্তির বিরুদ্ধে অভিযোগ জানানো হয়েছিল। কিন্তু কোনও অজ্ঞাত কারণে কোনও পদক্ষেপই করেনি পুলিশ। এ দিন তিন ছাত্রীর গায়ে সে জল ঢেলে দেওয়া হল। তারপর স্কুলের বাইরে কারা কী করেছে তা আমার জানা নেই।’’ মানববাবুর প্রতিবেশীদের অভিযোগ, ওই শৌচালয় নিয়মিত পরিষ্কার না হওয়ায় গন্ধে টেকা দায়। মানববাবু তারই প্রতিবাদ করে আসছেন। কিন্তু এ দিন তাঁকে অন্যায়ভাবে মারধর করা হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy