Advertisement
০৫ মে ২০২৪

ভোটের টুকিটাকি

উত্তর দিনাজপুরের হেমতাবাদ বিধানসভা কেন্দ্রের দলীয় প্রার্থীকে মেনে নিতে না পেরে তৃণমূলে যোগ দিলেন হেমতাবাদ ব্লকের চৈনগর ও বিষ্ণুপুর পঞ্চায়েতের বিজেপির শতাধিক কর্মী। রবিবার দুপুরে হেমতাবাদ ব্লক তৃণমূল কার্যালয়ে গিয়ে তাঁরা শাসক দলে যোগ দেন।

শেষ আপডেট: ২১ মার্চ ২০১৬ ০২:১১
Share: Save:

শতাধিক কর্মীর দলত্যাগ চাপে জেলা বিজেপি

উত্তর দিনাজপুরের হেমতাবাদ বিধানসভা কেন্দ্রের দলীয় প্রার্থীকে মেনে নিতে না পেরে তৃণমূলে যোগ দিলেন হেমতাবাদ ব্লকের চৈনগর ও বিষ্ণুপুর পঞ্চায়েতের বিজেপির শতাধিক কর্মী। রবিবার দুপুরে হেমতাবাদ ব্লক তৃণমূল কার্যালয়ে গিয়ে তাঁরা শাসক দলে যোগ দেন। তাঁদের হাতে দলীয় পতাকা তুলে দেন তৃণমূলের জেলা সাধারণ সম্পাদক শুভ্র রায়চৌধুরী। দলে হেমতাবাদ ব্লক সভাপতি মৃত্যুঞ্জয় দত্ত, টিএমসিপির জেলা সাধারণ সম্পাদক বিজয় সরকার প্রমুখ। এই জেলায় প্রার্থী নিয়ে বিজেপির নেতা কর্মীদের অসন্তোষ এই প্রথম নয়। গত শনিবার চাকুলিয়া বিধানসভা কেন্দ্রের দলীয় প্রার্থী অসীম মৃধাকে বদল করে তাঁর জায়গায় দলের চাকুলিয়া মন্ডল সভাপতি শ্রীকান্ত সিংহকে প্রার্থী করার দাবিতে বিজেপির নেতা কর্মীরা দু’ঘন্টা দলের জেলা সভাপতি নির্মল দামকে ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখান। ওই ঘটনার ২৪ ঘন্টার মধ্যে এ দিন হেমতাবাদের দলীয় প্রার্থীকে মেনে নিতে না পেরে দলের কর্মীদের শাসক দলে যোগ দেওয়ার ঘটনায় অস্বস্তিতে পড়েছেন বিজেপির জেলা নেতৃত্ব। বিজেপির জেলা সভাপতি নির্মল দামের দাবি, দলের রাজ্য কমিটি যোগ্যদের প্রার্থী করেছে। তাঁর পাল্টা অভিযোগ, নির্বাচনের আগে বিজেপিকে দুর্বল করতে নানা প্রলোভন দেখিয়ে শাসক দল বিজেপির কর্মীদের তৃণমূলে যোগ দিতে বাধ্য করছে। এতে দলের কোনও ক্ষতি হবে না বলে তাঁর দাবি। হেমতাবাদ ব্লক তৃণমূল সভাপতি মৃত্যুঞ্জয় দত্তের দাবি, তৃণমূল কাউকে প্রলোভন দেখিয়ে দলে আনেনি। বিজেপির কর্মীরা এ দিন স্বেচ্ছায় তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন বলে দাবি তাঁর।

শৌচকর্ম করায় মারধর যুবককে, অভিযুক্ত তৃণমূল

দলীয় কার্যালয় ঘেঁষে একটি নিকাশি নালায় প্রস্রাব করায় কাপড়ের দোকানের এক কর্মীকে মারধরের অভিযোগ উঠল এক তৃণমূল যুব নেতার বিরুদ্ধে। শনিবার রাতে ঘটনাটি ঘটে মেখলিগঞ্জের জামালদহে। অভিযুক্ত যুব নেতার নাম অমূল্য বর্মন। তিনি জামালদহ অঞ্চল তৃণমূল কংগ্রেসের যুব সভাপতির দায়িত্বে আছেন। যাকে মারধর করা হয়েছে সেই দোকান কর্মীর নাম সনাতন বর্মন। রবিবার সকাল থেকে ওই ঘটনায় অভিযুক্ত তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবিতে সরব হন স্থানীয় ব্যবসায়ী ও দোকান কর্মচারীদের একাংশ। কর্মচারীদের একাংশ কাজে যোগ না দেওয়ায় দুপুর পর্যন্ত বাজারের কাপড়ের দোকানগুলি বন্ধ থাকে। পরে বিষয়টি নিয়ে পুলিশে অভিযোগ জানান ওই কর্মী। ওই ঘটনায় তৃণমূলের নেতাদের বিরুদ্ধে সরব হয়েছে বামেরাও। তৃণমূলের দাবি, বাম সমর্থক ওই যুবক বারণ করা সত্ত্বেও ওইখানে প্রস্রাব করেন। মেখলিনগঞ্জের এসডিপিও আশিস সুব্বা বলেন, “অভিযোগ খতিয়ে দেখা হবে।” সনাতনবাবুর দাবি, ওই দলীয় কার্যালয় ঘেঁষেই নিকাশি নালায় বহুদিন ধরেই সবাই প্রস্রাব করেন। এ দিন বারণ করার পর তিনি ভুল স্বীকার করলেও তাঁকে মারধর করা হয় বলে তাঁর অভিযোগ। ভোটের মুখে এমন ঘটনায় অস্বস্তিতে পড়েছেন স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব। মেখলিগঞ্জে তৃণমূলের প্রার্থী অর্ঘ্য রায়প্রধান বলেন, “ঘটনাটি শুনেছি। খুব বড় কিছু নয়।’’ এলাকার বাম প্রার্থী পরেশ অধিকারীর অভিযোগ, ‘‘তৃণমূলের ঔদ্ধত্য মারাত্বক জায়গায় চলে গিয়েছে।’’

প্রকাশ্যে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব

রবিবার দক্ষিণ দিনাজপুরের কুমারগঞ্জের সমজিয়াতে তৃণমূল প্রার্থীর হয়ে ভোট প্রচারে দলের একাংশ নেতা কর্মীর অনুপস্থিতি নিয়ে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব ফের প্রকাশ্যে এলো। ওই কেন্দ্রের বিদায়ী বিধায়ক মাহমুদা বেগমকেও প্রচারে দেখা যাচ্ছে না বলে অভিযোগ উঠেছে। পাশাপাশি এলাকার প্রাক্তন তৃণমূল অঞ্চল সভাপতি সুকলাল হাঁসদা, সমজিয়ার প্রবীণ তৃণমূল নেতা সেকেন্দার আলি সরকার ও তাঁদের অনুগামীরা বিধানসভায় দলের প্রার্থী তোরাফ হোসেন মণ্ডলের প্রচার সভায় উপস্থিত না থাকায় তুমুল বিতর্ক শুরু হয়েছে। এ দিন প্রকাশ্যে ক্ষোভ প্রকাশ করে বিপ্লব মিত্রের অনুগামী সুকলাল হাঁসদা অভিযোগ করেন, কুমারগঞ্জ কেন্দ্রের প্রার্থী তোরাফ হোসেন মণ্ডল আসলে সিদ্দিকুল্লা চৌধুরীর পিডিসিআইয়ের দলের সমর্থিত প্রার্থী। এলাকার মানুষকে বোকা বানাতে তৃণমূলের প্রতীক দিয়ে বিষয়টি আড়াল করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি। তাছাড়া প্রচার সম্পর্কে কিছুই জানানো হচ্ছে না বলে সেকেন্দার আলিও অভিযোগ তুলে সরব হয়েছেন। বিদায়ী বিধায়ক মাহমুদা বেগম বলেন, ‘‘টিকিট না পেয়ে মন খারাপ হলেও প্রচারে আমি আছি।’’ অন্যদিকে সকলকে নিয়ে চলার চেষ্টা করছেন বলে দাবি করে বলে তৃণমূল প্রার্থী তোরাফ হোসেন মণ্ডল বলেন, ‘‘আমি তৃণমূলের মনোনীত প্রার্থী। পিডিসিআইয়ের সঙ্গে আসন সমঝোতা করে ভোটের লড়াই হচ্ছে।’’

প্রার্থী কেরকেট্টা

মালবাজার বিধানসভা কেন্দ্রে সিপিএমের প্রার্থী হচ্ছেন অগাষ্টুস কেরকেট্টা। রবিবার বিকালে কলকাতায় আলিমুদ্দিন স্ট্রীটে বামফ্রন্টের সভা থেকে অগাষ্টুসের নাম ঘোষণা করা হয়। এরপর মালবাজার থেকে জলপাইগুড়ি জেলার সিপিএম নেতা চানু দে বলেন, ‘‘অগাষ্টুস বিধানসভা নির্বাচনে নতুন মুখ।’’ ধর্মনিরপেক্ষ জোটের প্রার্থী হিসাবে অগাষ্টুস কেরকেট্টার গ্রহণযোগ্যতা প্রশ্নাতীত বলেও দাবি করেন তিনি। বছর ৪৭-এর অগাষ্টুস কেরকেট্টা ১৯৯৮ থেকে প্রত্যক্ষ রাজনীতি করছেন। মালবাজারের ডামডিম পঞ্চায়েতের সাইলি চা বাগান লাগোয়া বাজার এলাকায় বাড়ি তাঁর। এখন মালবাজার পঞ্চায়েত সমিতির পূর্ত কর্মাধক্ষ্যের পদে রয়েছেন অগাষ্টুস। দল তাঁকে প্রার্থী করায় খুশি তিনি। প্রাথী বলেন, ‘‘তৃণমূলের শাসন সকলেই দেখেছেন , মানুষ এবারে জোট বেঁধেছে তাই আমরা প্রত্যয়ী হয়েই লড়াইতে নেমেছি।’’ মালবাজার আসনে সিপিএমের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে প্রচার চালাবে কংগ্রেস। প্রার্থীর নাম চূড়ান্ত হতেই একথা জানান কংগ্রেসের জলপাইগুড়ি জেলা সভাপতি নির্মল ঘোষদস্তিদার।

তৃণমূলে যোগ

নির্বাচনের আগে কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিলেন বিধায়ক দেবপ্রসাদ রায়ের ঘনিষ্ট নেতারা। রবিবার বিকেলে আলিপুরদুয়ারে তৃণমূল কংগ্রেসের দলীয় কার্যালয়ে ওই দলবদল হয়। কংগ্রেসের জেলার সাধারাণ সম্পাদক রাজদীপ মুখোপাধ্যায়-সহ বেশ কয়েকজন নেতা দলবদল করেন। তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা সভাপতি সৌরভ চক্রবর্তী তাঁদের হাতে দলীয় পতাকা তুলে দেন। রাজদীপবাবু বলেন, “কংগ্রেস ও সিপিএমের রাজনৈতিক জোট আমরা মানতে পারিনি তাই দলবদল।” কংগ্রেসের জেলাসভাপতি বিশ্বরঞ্জন সরকার বলেন, “দেবপ্রসাদ রায় ঘনিষ্ট নেতারা দীর্ঘ দিন ধরে তৃণমূলের হয়েই কাজ করছিল।’’ এবার তাঁদের মুখোশট খুলে গেল বলে জানান তিনি। দেবপ্রসাদ রায় দল বদল প্রসঙ্গে কিছু বলতে চাননি।

প্রার্থীতে আপত্তি

কালচিনিতে কংগ্রেস প্রার্থী নিয়ে আপত্তি তুলেছেন এনইউপিডব্লিউ কেন্দ্রীয় কমিটির সম্পাদক। কংগ্রেসের কালচিনি বিধানসভার প্রার্থী অভিজিৎ নার্জিনারি বলেন,‘‘এনইউপিডব্লিউ-র কেন্দ্রীয় কমিটির সম্পাদক প্রভাত মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করেছি। উনি কাজ শুরু করতে বলেছেন।’’ কোনও সমস্যা নেই বলে দাবি তাঁর। প্রভাতবাবু অবশ্য বলেন, “আমরা চা বলয়ের প্রার্থী চাইলেও তা মানা হয়নি। শনিবার কর্মী সমর্থকদের সঙ্গে বৈঠক করে আগামী সিদ্ধান্ত নেব।”

আসবেন মমতা

চাঁচলে দলের প্রার্থীদের হয়ে প্রচারে আসবেন মুখ্যমন্ত্রী। চাঁচল মহকুমায় চারটি বিধানসভার প্রার্থীদের সমর্থনে মুখ্যমন্ত্রী একটিই সভা করবেন বলে জানা গিয়েছে। রবিবার চাঁচলে কর্মিসভায় এ কথা জানান দলের মালদহের পর্যবেক্ষক শুভেন্দু অধিকারী। তবে মুখ্যমন্ত্রীর প্রচারে আসার দিনক্ষণ এখনও স্থির হয়নি বলে জানিয়েছেন সাংসদ।

শতাধিক কর্মীর দলত্যাগ চাপে জেলা বিজেপি

উত্তর দিনাজপুরের হেমতাবাদ বিধানসভা কেন্দ্রের দলীয় প্রার্থীকে মেনে নিতে না পেরে তৃণমূলে যোগ দিলেন হেমতাবাদ ব্লকের চৈনগর ও বিষ্ণুপুর পঞ্চায়েতের বিজেপির শতাধিক কর্মী। রবিবার দুপুরে হেমতাবাদ ব্লক তৃণমূল কার্যালয়ে গিয়ে তাঁরা শাসক দলে যোগ দেন। তাঁদের হাতে দলীয় পতাকা তুলে দেন তৃণমূলের জেলা সাধারণ সম্পাদক শুভ্র রায়চৌধুরী। দলে হেমতাবাদ ব্লক সভাপতি মৃত্যুঞ্জয় দত্ত, টিএমসিপির জেলা সাধারণ সম্পাদক বিজয় সরকার প্রমুখ। এই জেলায় প্রার্থী নিয়ে বিজেপির নেতা কর্মীদের অসন্তোষ এই প্রথম নয়। গত শনিবার চাকুলিয়া বিধানসভা কেন্দ্রের দলীয় প্রার্থী অসীম মৃধাকে বদল করে তাঁর জায়গায় দলের চাকুলিয়া মন্ডল সভাপতি শ্রীকান্ত সিংহকে প্রার্থী করার দাবিতে বিজেপির নেতা কর্মীরা দু’ঘন্টা দলের জেলা সভাপতি নির্মল দামকে ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখান। ওই ঘটনার ২৪ ঘন্টার মধ্যে এ দিন হেমতাবাদের দলীয় প্রার্থীকে মেনে নিতে না পেরে দলের কর্মীদের শাসক দলে যোগ দেওয়ার ঘটনায় অস্বস্তিতে পড়েছেন বিজেপির জেলা নেতৃত্ব। বিজেপির জেলা সভাপতি নির্মল দামের দাবি, দলের রাজ্য কমিটি যোগ্যদের প্রার্থী করেছে। তাঁর পাল্টা অভিযোগ, নির্বাচনের আগে বিজেপিকে দুর্বল করতে নানা প্রলোভন দেখিয়ে শাসক দল বিজেপির কর্মীদের তৃণমূলে যোগ দিতে বাধ্য করছে। এতে দলের কোনও ক্ষতি হবে না বলে তাঁর দাবি। হেমতাবাদ ব্লক তৃণমূল সভাপতি মৃত্যুঞ্জয় দত্তের দাবি, তৃণমূল কাউকে প্রলোভন দেখিয়ে দলে আনেনি। বিজেপির কর্মীরা এ দিন স্বেচ্ছায় তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন বলে দাবি তাঁর।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

election news assembly election news in brief
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE