Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
মত আলোচনায়

গবেষণাকে কাজে লাগাতে চাই উদ্যোগ

এক সময় কলকাতা ছিল দেশে বিজ্ঞান চর্চার অন্যতম পীঠস্থান। এখন সে অবস্থা নেই। রাজ্যের গবেষণা, নিত্য নতুন তথ্য প্রযুক্তি মানুষের কাজে, সমাজের উন্নয়নে ব্যবহারের জন্য সরকারের উদ্যোগ নেই। এ ব্যাপারে মুখ্যন্ত্রীর উপদেষ্টা কমিটি থাকা দরকার বলে মনে করেন ইন্ডিয়ান ইন্সস্টিটিউট অফ সায়েন্সের প্রাক্তন অধ্যাপক তথা বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালেয় অধ্যাপক বিদ্যেন্দুমোহন দেব।

উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের আলোচনাসভা। —নিজস্ব চিত্র।

উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের আলোচনাসভা। —নিজস্ব চিত্র।

সৌমিত্র কুণ্ডু
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ০৪ জুন ২০১৫ ০২:৩৪
Share: Save:

এক সময় কলকাতা ছিল দেশে বিজ্ঞান চর্চার অন্যতম পীঠস্থান। এখন সে অবস্থা নেই। রাজ্যের গবেষণা, নিত্য নতুন তথ্য প্রযুক্তি মানুষের কাজে, সমাজের উন্নয়নে ব্যবহারের জন্য সরকারের উদ্যোগ নেই। এ ব্যাপারে মুখ্যন্ত্রীর উপদেষ্টা কমিটি থাকা দরকার বলে মনে করেন ইন্ডিয়ান ইন্সস্টিটিউট অফ সায়েন্সের প্রাক্তন অধ্যাপক তথা বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালেয় অধ্যাপক বিদ্যেন্দুমোহন দেব।

বুধবার উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘সায়েন্স ইন বেঙ্গল’ শীর্ষক আলোচনাসভায় তিনি এ কথা জানিয়েছেন। কলকাতার ইন্ডিয়ান স্ট্যাটিস্টিক্যাল ইন্সস্টিটিউটের অধ্যাপক শঙ্কর পাল, প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের ন্যাচারাল সায়েন্সের অধ্যাপক সব্যসাচী ভট্টাচার্যের মতো ব্যক্তিরাও অতীতে বাংলার বিজ্ঞান চর্চায় উৎকষের্র বিষয়টি তুলে ধরেন।

উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজ্যের বিজ্ঞান এবং তথ্য প্রযুক্তি দফতর, পশ্চিমবঙ্গ স্টেট কাউন্সিল অফ সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজির সহায়তায় এই কনফারেন্স হচ্ছে। বিদ্যেন্দুমোহনবাবু বলেন, ‘‘শিল্পপতিদের নিয়ে বিদেশে গেলেই হবে না। দেশে, এ রাজ্যে কিছু নেই এই মনোভাব ঠিক নয়। কলকাতা এক সময় দেশের বিজ্ঞান চচার্র একটি অন্যতম কেন্দ্র ছিল। এখন আর তা নেই। বিজ্ঞান চর্চা এবং সমাজের উন্নয়নে প্রযুক্তি হিসেবে তাকে কাজে লাগাতে মুখ্যমন্ত্রীর উপদেষ্টা কমিটি থাকা দরকার।’’ তাঁর মত, ‘‘রাজ্যের গবেষণায় যাঁরা সাফল্য পাচ্ছেন এমন ব্যক্তিত্ব, শিল্পপতি, প্রযুক্তিবিদদের নিয়ে ওই কমিটি করতে হবে। রাজ্যে নিত্য নতুন যে সব গবেষণা হচ্ছে, সেগুলিকে কী করে শিল্পোদ্যোগীরা কাজে লাগাবেন, সে বিষয়ে পরিকল্পনা নেবে ওই কমিটি।’’

উদাহরণ স্বরূপ তিনি বলেন, ‘‘রাজ্যের বিভিন্ন শহরে ছেয়ে যাওয়া টোটো গাড়ি চিন থেকে রফতানি হচ্ছে বলে জেনেছি। অথচ দেশীয় প্রযুক্তিতে রাজ্যে এই কাজ যে হয়নি তা নয়। তাকে তুলে ধরার ব্যবস্থা নেই।’’ তিনি মনে করেন শহরের আবর্জনা থেকে বিজ্ঞানসম্মত উপায়ে গ্যাস তৈরি করে বিদ্যুৎ তৈরির মতো গবেষণা এ রাজ্যে হচ্ছে। অথচ তাকে কাজে লাগানোর জন্য প্রয়োজনীয় সহায়তা নেই। বিদ্যেন্দুবাবুর মতে শিল্পপতিরা সে সব গবেষণাকে ভিত্তি করে উদ্যোগী হতে পারেন।

এক সময় ওয়েস্ট বেঙ্গল সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি ভাল গবেষণামূলক কাজকে পুরস্কৃত করত। কিন্তু শুধু পুরস্কার দেওয়ার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকলেই হবে না, ওই গবেষণাকে কাজে লাগানোর মতো উদ্যোগ নিতে হবে। গবেষণার কাজে সরকার টাকা খরচ করছে। অথচ বাস্তব ক্ষেত্রে তাকে কাজে লাগানোর উদ্যোগ নেই। সব্যসাচীবাবু এ দিন কলকাতার বিজ্ঞানচর্চা এবং দেশের বিজ্ঞানচচার্র অতীত তুলে ধরেন পাওয়ার পয়েন্ট উপস্থাপনায়। আইএসআই-এর শঙ্করবাবু জানান, আগে কলকাতা বিজ্ঞান চচার্র ক্ষেত্রে সেন্টার অফ এক্সেলেন্স ছিল। এখন ছাত্রছাত্রীরা বেঙ্গালুরু, মুম্বইতে যাচ্ছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE