গর্বিত: ছেলের কথা বলতে গর্বে বুক ফুলে ওঠে চক্রবর্তী দম্পতির।
স্কুলে পড়ার সময় পর্যন্ত বাড়িতে টিভি ছিল না। ব্যাগ রেখে পাশের বাড়িতে ক্রিকেটের স্কোর দেখতে যেত বুম্বা। ভারত হেরে গেলে সে দিন চোখের জল আসত তার।
ও পার বাংলার ময়মনসিংহ থেকে আসা, শিলিগুড়ির ভারতনগরের সেই সাদামাঠা শিক্ষক পরিবারে বেড়ে ওঠা সেই বুম্বা এখন সমুদ্র বিজ্ঞানী পার্থসারথি চক্রবর্তী। যাঁকে গবেষণার স্বীকৃতি হিসেবে এ বছর শান্তিস্বরূপ ভাটনগর পুরস্কার দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছে কেন্দ্রীয় সরকার।
খবরটা পেয়ে পার্থসারথি প্রথমে ফোনে জানিয়েছিলেন মা কল্যাণীদেবীকে। হাকিমপাড়া বালিকা বিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষিকা কল্যাণীদেবী ছেলের এই সাফল্যে আপ্লুত। বলেন, ‘‘এত ব্যস্ত থাকে কাজে, তা-ও সারাদিনে বেশ কয়েক বার ফোন করে খবর নেয়।’’ কেবল গবেষণাই নয়, পার্থসারথির আগ্রহ ক্রিকেট খেলা থেকে গান-বাজনা, সব দিকেই। গোয়ায় কর্মরত এই বিজ্ঞানী হাজার কাজের মধ্যেও বন্ধুদের আসরে একতারায় সুর তোলেন নিয়মিত।
পার্থসারথিবাবুর বাবা নিখিলচন্দ্র চক্রবর্তী অবসর নিয়েছেন বাগডোগরা চিত্তরঞ্জন হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক হিসেবে। বাড়ির বড় ছেলে, অর্থাৎ পার্থসারথির দাদা পিনাকী ১৪তম অর্থ কমিশনের উপদেষ্টা হিসেবেও কাজ করেছেন।
ছোট ছেলের সাফল্যে বাবাও বেশ খুশি। তিনি বলেন, ‘‘দুই ছেলেকে কোনও দিনও পড়ার জন্য বকাবকি করতে হয়নি। তবে ওদের শিখিয়েছি, সুখে একেবারে আত্মহারা না হতে বা দুঃখে একেবারে ভেঙে না পড়তে।’’ তাঁর কথায়, কোনও দিনই ছেলেরা পড়াশোনায় ফাঁকি দিত না।
পুজোর ছুটিতে বাড়ি ফিরতে পারেন পার্থসারথি। তখন তিনি আবার পুরনো বুম্বা-ই হয়ে যেতে চান। পরিবার জানাচ্ছে, সকলের সঙ্গে সহজেই মেশার ক্ষমতা রয়েছে তাঁর, যে মনে হবে না, এই ছেলেটিই দেশের শীর্ষে থাকা বিজ্ঞানীদের এক জন।
পাশেই থাকেন বুম্বাদের দুই মাসি। ছোট মাসি নারায়ণী সরকার, বড় মাসি রত্না সরকারদের সঙ্গে আড্ডা দিতেও বুম্বা ভালবাসেন। পুজোর সময়ে সেই আড্ডা আবার জমবে, অপেক্ষায় ওঁরাও। আর অপেক্ষা, কবে এসে ছোট ছেলে ইলিশ মাছের পদ রান্না করে দেওয়ার জন্য আব্দার করবে। তা সে ছোট ছেলে এখন যতই বড় হোক না কেন!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy