E-Paper

ক্ষয়ক্ষতির আতঙ্কে আম, ধান ঘরে তোলার হিড়িক

আমের ফলন কম, তার উপরে রেমালের প্রভাবে সেই আম ঝরে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তাই রবিবার সকাল থেকেই জেলা জুড়ে বাগানগুলিতে আম পেড়ে নেওয়ার ধুম পড়েছে।

জয়ন্ত সেন  , বাপি মজুমদার 

শেষ আপডেট: ২৭ মে ২০২৪ ০৮:০৮
ও

রেমাল আতঙ্কে রবিবার সকাল থেকেই আম পেড়ে নেওয়া চলছে পুরাতন মালদহের শান্তিপুরে। ছবি: জয়ন্ত সেন।

রেমাল-আতঙ্কে মালদহে আম পেড়ে নেওয়ার ধুম পড়েছে। রবিবার সকাল থেকেই ইংরেজবাজার, পুরাতন মালদহ, মানিকচক, গাজল-সহ জেলার বিভিন্ন ব্লকের চাষিরা আম পেড়ে নিতে শুরু করেছেন। বেশির ভাগ আমি অপরিপক্ব। এ দিকে উদ্বেগ ছড়িয়েছে জেলার বোরো ধান ও আনাজ চাষিদের মধ্যেও। রবিবার সকাল থেকে মাঠ থেকে ধান কেটে ঘরে তুলতে শুরু করেছেন কৃষকরা। সময় বাঁচাতে অনেকে যন্ত্রে ধান ঝাড়াইয়ের কাজ করছেন জোরকদমে।

চাষিরা জানান, এ বছর এমনিতেই আমের ফলন কম হয়েছে। তার উপরে যদি ঝড়ে আম পড়ে যায়, তবে পথে বসতে হবে। তাই অপরিপক্ব হলেও আম পেড়ে বাগান থেকেই ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করে দেওয়া হচ্ছে। অভিযোগ উঠেছে, ওই সমস্ত অপরিপক্ব আম কার্বাইড দিয়ে ভিন্ রাজ্যে বিক্রির জন্য পাঠানো হচ্ছে। আম বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, গোপালভোগ আম পেড়ে নেওয়ার সময় হয়েছে। বাকি আম পরিপক্ব হতে আরও অন্তত দু'সপ্তাহ সময় লাগবে। মালদহ জেলা উদ্যানপালন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, জেলায় এখন ৩১,৮১৩ হেক্টর জমিতে আম চাষ হয়ে থাকে। গত বছর অনুকূল আবহাওয়া থাকায় প্রায় ৩ লক্ষ ৮০০ হাজার টন আমের ফলন হয়েছিল। এবার সেই ফলন দু’লক্ষ টন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তার কারণ হিসেবে জেলা উদ্যানপালন দফতরের আধিকারিকদের দাবি, মূলত আবহাওয়ার খামখেয়ালিপনার জন্যই এই পরিস্থিতি। মালদহ জেলায় সাধারণত ফেব্রুয়ারি মাসের মাঝামাঝি থেকে মার্চ মাসের প্রথম সপ্তাহে মুকুল চলে আসে। কিন্তু এ বার সে সময় শীত জাকিয়ে থাকায় ৬০-৬৫ শতাংশ গাছে মুকুল আসে। তার উপর যে সময় মুকুল ফোটে সে সময় কয়েক দিন ধরে ভারী বৃষ্টি হয়ে যাওয়ায় মুকুলের পরাগরেণু ঝরে পড়ে। স্বাভাবিকভাবেই এবার আমের ফলন অনেক কম হবে।

এ দিকে একেই আমের ফলন কম, তার উপরে রেমালের প্রভাবে সেই আম ঝরে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তাই রবিবার সকাল থেকেই জেলা জুড়ে বাগানগুলিতে আম পেড়ে নেওয়ার ধুম পড়েছে। এ দিন সকালে পুরাতন মালদহ ব্লকের সাহাপুর পঞ্চায়েতের শান্তিপুর এলাকায় গিয়ে দেখা গেল আমবাগান জুড়ে আম পেড়ে নেওয়া চলছে। আম চাষি মফিজউদ্দিন শেখ বলেন, ‘‘আবহাওয়ার খামখেয়ালিপনার জন্য এবার ফলন কম হয়েছে। বাগানে আম বেশ বড় হয়েছে। ঝড়ে আম পড়ে গেলে ক্ষতি হয়ে যাবে। সে কারণে আগাম পেড়ে এ দিন বিক্রি করে দিলাম।’’

কাদিরপুরের ধান চাষি রাম মার্ডি বলেন, ‘‘ধান কয়েক দিন আগে কেটে জমিতে ফেলে রেখেছিলাম। রেমালের ভয়ে এ দিন বাড়তি টাকা দিয়ে শ্রমিক আনিয়ে সেই সব ধান জমি থেকে তুলে নিলাম।’’ রেমাল আতঙ্কে ভুগছেন চাঁচল মহকুমার কৃষকরাও। গৌড়িয়ার রোসনারা বিবি বলেন, “দেড় বিঘে জমিতে ধারদেনা করে ধান চাষ করেছি। নিজেই ধান কেটে ঘরে তুলি প্রতিবার। ঝড়-বৃষ্টি হবে শুনছি। তাই ধান ঘরে তুলছি।” চাঁচল ১ ব্লকের সহকারী কৃষি অধিকর্তা দীপঙ্কর দেব বলেন, “চাষিরা যাতে ক্ষতির মুখে না পড়েন, সে জন্য দফতরের তরফেও সচেতনতার প্রচার চালানো হচ্ছে।”

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Malda Mango Tree

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy