Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

আগুনে পুড়ে ছাই আম্বুটিয়া চা কারখানা

আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে গেল আম্বুটিয়া চা বাগানের দোতলা কারখানা। প্রাথমিক তদন্তে অনুমান, সোমবার রাত সাড়ে ন’টা নাগাদ শর্ট সার্কিট থেকে আগুন লাগে সেখানে। কারখানার যে-ঘরে চা পাতা শুকোনো হয়, আগুন ছড়িয়ে পড়ে সেই ঘর থেকেই। তবে কোনও শ্রমিক আহত হননি। কর্তৃপক্ষের দাবি, এই অগ্নিকাণ্ডে পুড়ে গিয়েছে কারখানায় মজুত প্রায় পাঁচ হাজার কেজি কাঁচা পাতা। তাঁদের অনুমান, এর দরুন ক্ষতির অঙ্ক দাঁড়াবে ৭৫ লক্ষ থেকে এক কোটি টাকা।

রেজা প্রধান
কার্শিয়াং শেষ আপডেট: ২০ অগস্ট ২০১৪ ০২:৪৬
Share: Save:

আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে গেল আম্বুটিয়া চা বাগানের দোতলা কারখানা।

প্রাথমিক তদন্তে অনুমান, সোমবার রাত সাড়ে ন’টা নাগাদ শর্ট সার্কিট থেকে আগুন লাগে সেখানে। কারখানার যে-ঘরে চা পাতা শুকোনো হয়, আগুন ছড়িয়ে পড়ে সেই ঘর থেকেই। তবে কোনও শ্রমিক আহত হননি। কর্তৃপক্ষের দাবি, এই অগ্নিকাণ্ডে পুড়ে গিয়েছে কারখানায় মজুত প্রায় পাঁচ হাজার কেজি কাঁচা পাতা। তাঁদের অনুমান, এর দরুন ক্ষতির অঙ্ক দাঁড়াবে ৭৫ লক্ষ থেকে এক কোটি টাকা।

বাগানের ডিরেক্টর অনিল বনশল বলেন, “আগুন লাগার সময়ে কারখানায় কাজ চলছিল। ফায়ার অ্যালার্মও বেজেছিল। স্থানীয় বাসিন্দা এবং দমকলকর্মীরা আগুন নেবাতে চেষ্টা করেন। কিন্তু তা সত্ত্বেও কারখানা রক্ষা করা সম্ভব হয়নি।”

তবে বাগান কর্তৃপক্ষের আশ্বাস, এর জন্য কর্মীদের মজুরি বা বোনাস বন্ধের কোনও আশঙ্কা নেই। বরং আজ বুধবার থেকেই চা বাগানের কাজকর্ম স্বাভাবিক হয়ে যাবে। আপাতত ওই বাগান থেকে তোলা চা পাতা প্রক্রিয়াকরণের জন্য সংস্থারই অন্য কোনও কারখানায় পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন কর্তৃপক্ষ।

সোমবার রাতে আগুনে ভস্মীভূত হয় কার্শিয়াঙের আম্বুটিয়া চা বাগানের কারখানা।
মঙ্গলবার রবিন রাইয়ের তোলা ছবি।

এই অগ্নিকাণ্ড দুর্ঘটনা হলেও রাজ্যের চা শিল্পের পক্ষে তা ফের ধাক্কা বলে মনে করছেন অনেকে। কারণ, স্বাদ ও গন্ধে আম্বুটিয়ার চায়ের প্রসিদ্ধি বিশ্বজোড়া। বিদেশের বাজারে তার কদর এতখানিই যে, প্রায় পুরো চা-ই চলে যায় রফতানি খাতে। এবং অধিকাংশ ক্ষেত্রেই সংস্থা কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে তা সরাসরি কিনে নেন বিভিন্ন দেশের আমদানিকারীরা।

দার্জিলিং জেলায় আম্বুটিয়া গোষ্ঠীর দশটি বাগান রয়েছে। তার মধ্যেই একটি এই আম্বুটিয়া চা বাগান। অন্যগুলির মধ্যে রয়েছে চংটং, হ্যাপি ভ্যালি, নাগরি ইত্যাদি।

কার্শিয়াং থেকে ১০ কিলোমিটার দূরে আম্বুটিয়া চা বাগানের প্রতিষ্ঠা ১৮৬১ সালে। তবে সেখানে কারখানা তৈরি হয় আরও পরে। ১৯২০ সালে ওই কারখানায় চা পাতা প্রক্রিয়াকরণ শুরু হয়। পরে ২০০২ সালে সংস্কার করে সেই কারখানাকে বিশ্ব মানের করে তোলা হয়েছিল বলে কর্তৃপক্ষের দাবি। বছরে সেখানে চা উৎপাদন প্রায় দেড় লক্ষ কেজি। ৯৬৬ হেক্টর জমির উপর গড়ে ওঠা বাগানে শুধু চা বাগিচাই রয়েছে ৩৫০ একর জুড়ে। কর্মী সংখ্যা ৯১১।

সংশ্লিষ্ট সূত্রের খবর, এই আম্বুটিয়া বাগানের কারখানায় সোমবার রাতে যখন আগুন লাগে, তখন তার ভিতরে ছিলেন ২০ জন কর্মী। স্থানীয় বাসিন্দারা জল-বালি ছিটিয়ে আগুন নেবাতে চেষ্টা করেন। আসে দমকলের দু’টি ইঞ্জিনও। তবে লাভ হয়নি। এক ঘণ্টার আগুনে পুড়ে যায় পুরো কারখানাই।

বাগানের কর্মী রাজেন্দ্র রাজপুত বলেন, “হঠাৎ সাইরেন শুনে বাড়ির বাইরে বেরিয়ে আসি। ততক্ষণে জ্বলতে থাকা কারখানার সামনে বহু মানুষ জড়ো হয়েছেন। আমরা আগুন নেবানোর জন্য অনেক চেষ্টা করলেও তা শেষ পর্যন্ত সম্ভব হয়নি।” আর এক কর্মী অরুণ রাইয়ের আশঙ্কা, “বাগানের একমাত্র কারখানা পুড়ে যাওয়ায় তার প্রভাব হয়তো উৎপাদনের উপর পড়বে।” তবে তাঁর আশা, বাগান কর্তৃপক্ষ কাজ চালিয়ে যাবেন। সেই আশ্বাস অবশ্য সংস্থাও এ দিন দিয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

reza pradhan ambutia tea estate fire
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE