Advertisement
E-Paper

বাজির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাজল বক্স

কিছু অভিযোগ পেয়ে পুলিশ-প্রশাসনের লোকেরা ছুটলেন বটে, কাজের কাজ হল না কিছুই। পরিবেশপ্রেমী সংস্থা ন্যাস গ্রুপের সম্পাদক অরূপ গুহ বলেন, “আসলে ওই পুজোর সময়ে কিছুটা প্রচার হয়। তার পরে আর হয় না। সারা বছর ধরে প্রচার করতে হবে। প্রয়োজনে হাসপাতালের হৃদরোগ থেকে চোখ-কানের বিভাগ থেকেও প্রচার করতে হবে।”

নমিতেশ ঘোষ

শেষ আপডেট: ২৮ অক্টোবর ২০১৯ ০২:৫০
দূষণ: রাস্তার উপরেই চলছে বাজি পোড়ানো। সেই ধোঁয়া মিশছে বাতাসে। কোচবিহারে রবিবার রাতে। ছবি: হিমাংশুরঞ্জন দেব

দূষণ: রাস্তার উপরেই চলছে বাজি পোড়ানো। সেই ধোঁয়া মিশছে বাতাসে। কোচবিহারে রবিবার রাতে। ছবি: হিমাংশুরঞ্জন দেব

শুরু হয়েছিল আগের রাত থেকেই। তা কয়েক’শ গুণ বেড়ে গেল কালীপুজোর রাতে। রবিবার দুপুর থেকেই শব্দবাজির প্রকোপ বাড়তে থাকে। সেই সঙ্গেই পাল্লা দিয়ে চলতে থাকে আতসবাজি পোড়ানো। রাত ১০টার পরে বহু এলাকা ধোঁয়ায় ঢাকা পড়ে যায়। গতবারে পুজোয় এই বাজির প্রকোপেই এক ব্যবসায়ীর মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছিল। তার পরেও রোখা গেল না কিছুই। শব্দ দূষণ ও বায়ু দূষণে এ বারেও হাঁসফাঁস করল রাজনগর কোচবিহার। তারস্বরে মাইকও বাজল বহু জায়গায়।

কিছু অভিযোগ পেয়ে পুলিশ-প্রশাসনের লোকেরা ছুটলেন বটে, কাজের কাজ হল না কিছুই। পরিবেশপ্রেমী সংস্থা ন্যাস গ্রুপের সম্পাদক অরূপ গুহ বলেন, “আসলে ওই পুজোর সময়ে কিছুটা প্রচার হয়। তার পরে আর হয় না। সারা বছর ধরে প্রচার করতে হবে। প্রয়োজনে হাসপাতালের হৃদরোগ থেকে চোখ-কানের বিভাগ থেকেও প্রচার করতে হবে।”

শুধু সদর কোচবিহার নয়, একই অবস্থা ছিল জেলার দিনহাটা, তুফানগঞ্জে, মাথাভাঙাতেও। পরিস্থিতি কিছুটা অন্যরকম ছিল মেখলিগঞ্জে। পরিবেশপ্রেমীদের অভিযোগ, শব্দ মাত্রা মাপার বা দূষণ মাপার তেমন কোনও পরিকাঠামো নেই জেলায়। নির্দিষ্ট কিছু বাধা ধরা নিয়ম নিয়েই ঘুরে বেড়াতে হয় পুলিশ-প্রশাসনের কর্তাদের। শব্দাসুরকে রোখা গেলনা তুফানগঞ্জেও। সুপ্রিম কোর্টের রায়কে উপেক্ষা করেই রাত দশটার পরেও তুফানগঞ্জ মহকুমার বিভিন্ন এলাকায় ফেটেছে নিষিদ্ধ শব্দবাজি।

তুফানগঞ্জ শহরে সতেরো জন লাইসেন্সপ্রাপ্ত বাজি বিক্রেতা রয়েছেন। তাঁদের দাবি যাঁরা লাইসেন্স নিয়ে বাজি বিক্রি করেছেন, সে রকম কোনও দোকানদার নিষিদ্ধ শব্দবাজি বিক্রি করেনি। তাঁরা জানান, অসাধু ব্যবসায়ীরাই শব্দবাজি বিক্রি করেছেন। তুফানগঞ্জের এসডিপিও জ্যাম ইয়াং জিম্বা বলেন, “পরিস্থিতির দিকে রাতভর নজরদারি করা হয়েছে।”

দিনহাটা, মাথাভাঙা ও হলদিবাড়িতেও রাতভর শব্দবাজির আওয়াজ পাওয়া যায়। দিনহাটার টেলিফোন এক্সচেঞ্জ মোড়ের প্রবীণ বাসিন্দা মেঘনাথ দে বলেন, “একটু বেশি রাতের দিকে রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করার সময় ধোঁয়ায় শ্বাসকষ্ট হচ্ছিল। রাতে ঘুমোতেও সমস্যা হয়। পুলিশকে আরও কড়া ব্যবস্থা নিতে হবে।”

কালীপুজোয় যখন শব্দ বাজির দাপটে বিভিন্ন এলাকায় অতিষ্ঠ সাধারণ মানুষ তখন মেখলিগঞ্জ শহর ও পার্শ্ববর্তী এলাকার পরিস্থিতি সম্পূর্ণ ভিন্ন।

শব্দবাজি নিয়ে তেমন কোন অভিযোগই ছিল না গত বছর। এবছরও শব্দবাজি নিয়ে কঠোর পুলিশ। সেকারণে শনিবার রাত নিশ্চিন্তেই কাটান সাধারণ মানুষ। রবিবার অবশ্য শব্দবাজির দাপট অনেক এলাকা থেকেই উঠে এসেছে।

মেখলিগঞ্জ হাসপাতালের চিকিৎসক অমিয়কুমার বিশ্বাস বলেন, “তুবড়ি তারাবাতিতে প্রচুর পরিমাণ বারুদ থাকে। যা পরিবেশের ক্ষতির পাশাপাশি শিশু ও বৃদ্ধদের শ্বাসকষ্টের সমস্যা বাড়িয়ে তোলে। সে কারণে আলোর উৎসবে এ সব ব্যবহারে নিয়ন্ত্রণ জরুরি।”

পাশাপাশি মাস্ক ব্যবহারের মতো একাধিক সতর্কতা জরুরি বলে মনে করেন তিনি। দিনহাটা হাসপাতালের চিকিৎসক উজ্জ্বল আচার্য বলেন, “শব্দবাজি বা আতসবাজি সব থেকেই দূষণ ছড়ায়। এর মাত্রা বেড়ে গেলে তা প্রাণঘাতীও হয়। তাই সবাইকে সচেতন ভাবে চলা উচিত।”

Firecracker Kali Puja 2019
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy