Advertisement
E-Paper

তবু স্কুল মিলছে না ওবামার

জন্ম থেকেই দুর্ভোগ তার সঙ্গী। জন্মের সময় ওর মাকে ফিরিয়ে দিয়েছিল হাসপাতাল। তাই মেলেনি ‘বার্থ সার্টিফিকেট’। এ বার জন্মের শংসাপত্র নেই বলে মুখ ফিরিয়েছে স্কুলও। তফাত একটাই। জন্মের সময় সে ছিল ছিটমহলে। এখন কিন্তু কোচবিহারের বাসিন্দা, ভারতের নাগরিক। তবু বিড়ম্বনা ঘুচলো না ছোট্ট জেহাদ হোসেন ওবামার।

নমিতেশ ঘোষ

শেষ আপডেট: ০১ অগস্ট ২০১৬ ০২:৪৫
স্কুল নেই। মায়ের কাছেই পাঠ ওবামার। ছবি: হিমাংশুরঞ্জন দেব।

স্কুল নেই। মায়ের কাছেই পাঠ ওবামার। ছবি: হিমাংশুরঞ্জন দেব।

জন্ম থেকেই দুর্ভোগ তার সঙ্গী। জন্মের সময় ওর মাকে ফিরিয়ে দিয়েছিল হাসপাতাল। তাই মেলেনি ‘বার্থ সার্টিফিকেট’। এ বার জন্মের শংসাপত্র নেই বলে মুখ ফিরিয়েছে স্কুলও। তফাত একটাই। জন্মের সময় সে ছিল ছিটমহলে। এখন কিন্তু কোচবিহারের বাসিন্দা, ভারতের নাগরিক। তবু বিড়ম্বনা ঘুচলো না ছোট্ট জেহাদ হোসেন ওবামার।

মার্কিন রাষ্ট্রপতির নামে নাম রেখেছিলেন বাপ-মা। তাই ঠিক এক বছর আগে ছিটমহল বিনিময়ের সময় থেকেই নাম মাহাত্ম্যে পরিচিত ওবামা। দিন কয়েক আগে পাঁচ বছরের ছেলেকে নিয়ে গাঁওচুলকা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি করাতে গিয়েছিলেন বাবা শাহজাহান শেখ। তা-ও দু’দুবার। কিন্তু দুবারই জন্মের শংসাপত্র নেই বলে ওবামাকে ফিরিয়ে দিয়েছেন শিক্ষকরা। স্থানীয় পঞ্চায়েত প্রধানের শংসাপত্র নিয়ে গিয়েও কাজ হয়নি। শেষ পর্যন্ত মহকুমাশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ জানিয়েছেন শাহজাহান।

স্কুলের তরফে অবশ্য দাবি করা হয়েছে, ভর্তি নেওয়া হবে না, এমনটা বলা হয়নি। জন্মের তারিখ-সহ একটি দরখাস্ত নিয়ে যেতে বলা হয়। স্কুলের প্রধান শিক্ষক ভুজেন্দ্রনারায়ণ ইশোর বলেন, “স্কুলে জন্মের তারিখ উল্লেখ প্রয়োজন। পঞ্চায়েত থেকে আনা বসবাসের শংসাপত্রে জন্মের তারিখ থাকে না। তাই সাদা কাগজে দরখাস্ত আনতে বলা হয়।”

স্কুলের দাবি মানতে চাননি শাহজাহান শেখ। ওবামার জন্মের সময়কার কথা তুলে তাঁর আক্ষেপ, “তখন তো ছিটমহলের বাসিন্দা ছিলাম। তাই সমস্যা হলেও মেনে নিয়েছিলাম। কিন্তু এখন দেশের নাগরিক। এখনও কি দুর্ভোগ পিছু ছাড়বে না?’’

এমন নানা দুর্ভোগের বারমাস্যা এখন সাবেক ছিটমহলবাসীদের অনেকেরই সঙ্গী। নাগরিকত্ব মিললেও ন্যূনতম সুযোগ-সুবিধা তাঁরা পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ। তাই গল ব্লাডারে পাথর ধরা পড়ার পরে সরকারি হাসপাতালে কবে অস্ত্রোপচার হবে, সেই অপেক্ষায় বসে থাকতে হয় পোয়াতুর কুঠির বাসিন্দা নুর মহম্মদ হোসেনের স্ত্রী হাসিতন বিবিকে। এবং তীব্র যন্ত্রণা নিয়ে। হাতে টাকা নেই। নেই স্বাস্থ্য বিমা যোজনার কার্ডও।

এই সব টুকরো কষ্টে গাঁথা ছিটমহল ক্যাম্পের ছবি দাওয়ায় বসে দেখেন, শোনেন শতায়ু আজগর আলি। চলাফেরা করতে পারেন না বিশেষ। তাঁর প্রশ্ন, ‘‘এই কষ্ট আর কত দিন?’’ এই কথাটা গুমরে মরে ক্যাম্পের বাতাসে।

SCHOOL birth certificate
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy