ছিটমহল আন্দোলনের নেতা দীপ্তিমান সেনগুপ্তর সঙ্গে বিজেপির সখ্য বেড়েছে বলে দাবি করা হয়েছে। দিন কয়েক আগে বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ সাবেক ছিটমহল পরিদর্শনে যান। সেই সময় দীপ্তিমানবাবুকেও দেখা যায় তাঁর সঙ্গে। শুধু তাই নয়, কলকাতা গিয়েও দিলীপবাবুর সঙ্গে দেখা করেন ছিটমহল আন্দোলনকারী নেতা। যদিও দুই পক্ষের কেউই এখনও প্রকাশ্যে বিষয়টি বলতে চাইছেন না। সংগঠন সূত্রের খবর, সংখ্যালঘু অধ্যুষিত সাবেক ছিটমহলগুলি থেকে দীপ্তিমানবাবু কত জনকে বিজেপিতে নিয়ে যেতে পারবেন, তা এখনও পরিষ্কার নয়।
দীপ্তিমানবাবু বলেন, “কেন্দ্রীয় সরকারের বরাদ্দ টাকা খরচের হিসেবের শ্বেতপত্র প্রকাশের দাবি নিয়ে বিজেপির সঙ্গে আমাদের সখ্য হয়েছে। তাঁরা আমাদের সঙ্গে একমত। তবে রাজনৈতিক কোনও সিদ্ধান্ত আমরা নিইনি। এটা প্রত্যেকের ব্যক্তিগত মত। আমার কী মত, তা সময় হলেই প্রকাশ পাবে।” তাঁর আরও সংযোজন, “কে আমার সঙ্গে কোথায় যাবেন, তা বড় কথা নয়। সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার সবার আছে। যা সিদ্ধান্ত নেব একা নেব।”
বিজেপির কোচবিহার জেলা সভাপতি নিখিলরঞ্জন দে জানান, দীপ্তিমানবাবুর দলে যোগ দেওয়া নিয়ে কোনও তথ্য তাঁর কাছে নেই। তিনি বলেন, “অনেকেই আমাকে এ ব্যাপারে জিজ্ঞেস করেছেন। এটুকু বলতে পারি, দীপ্তিমানবাবু দলে আসতে চাইলে স্বাগত জানানো হবে।” তৃণমূলের দিনহাটার বিধায়ক উদয়ন গুহ বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্যোগেই ছিটমহল বিনিময় হয়েছে। সে কথা সবাই জানে। কে কোন দলে যাচ্ছে তা বড় কথা নয়। উন্নয়ন কাজ শুরু হয়েছে। সাবেক ছিটমহলের মানুষ আমাদের সঙ্গেই আছেন। কিছু মানুষকে ভুল বোঝানোর চেষ্টা হচ্ছে। তাঁরাও ভবিষ্যতে আমাদের সঙ্গেই থাকবেন।”
সংগঠন সূত্রের খবর, ছিটমহল বিনিময় আন্দোলনের দাবিতে দীপ্তিমানবাবুরা দীর্ঘদীন ধরে আন্দোলন করেছেন। বিশেষ করে বাংলাদেশি ছিটমহলগুলিতে তাঁর সংগঠনের জোর ছিল সব থেকে বেশি। ছিটমহল বিনিময় হওয়ার পর থেকেই সাবেক ছিটমহলের বাসিন্দাদের নিয়ে রাজনীতি শুরু হয়। শাসক দল তৃণমূল ছিটমহলের ভিতরে ঢুকে সংগঠন তৈরি করতে শুরু করে। বাম ও বিজেপিও আসরে নামে। গত বিধানসভা নির্বাচনে দীপ্তিমানবাবুর বিরুদ্ধে শাসক দলের বিরুদ্ধে প্রচার করার অভিযোগ ওঠে। ফল প্রকাশের পর দেখা যায় সাবেক ছিটমহলে শাসক দলের প্রার্থীর ভোটও খুব একটা বেশি ছিল না।
এর পরেই দীপ্তিমানবাবুর অনুগামীদের উপর হামলার অভিযোগ উঠতে শুরু করে শাসক দলের বিরুদ্ধে। দীপ্তিমানবাবুরাও পাল্টা আন্দোলনে যান। উন্নয়নে বরাদ্দের টাকা খরচে দুর্নীতির অভিযোগ তোলেন তাঁরা। কিছু দিন আগে দীপ্তিমানবাবুর বাড়ির সামনের একটি অংশ জবরদখল করে করা হয়েছে বলে অভিযোগ তুলে দিনহাটা পুরসভার তরফে ভেঙে দেওয়া হয়। ওই পুরসভার চেয়ারম্যান বিধায়ক উদয়ন গুহ।
দীপ্তিমানবাবুকে ‘দেশদ্রোহী’ বলেই প্রচার করে তৃণমূল। ওই ঘটনার কয়েক দিনের মধ্যেই বিজেপির রাজ্য সভাপতির সঙ্গে দেখা করেন দীপ্তিমানবাবু। তাঁরই এক অনুগামীর কথায়, “সাবেক ছিটমহল মূলত সংখ্যালঘু অধ্যুষিত। বিজেপি সংখ্যালঘু বিরোধী বলে প্রচার রয়েছে। সে জন্য কারা কারা দাদার সঙ্গে থাকবেন, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy