মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রকের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট র্যাঙ্কিং ফ্রেমওয়ার্ক (এনআইআরএফ)-এ ২০১৭ সালে দেশের সেরা দু’শো বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে নাম ছিল গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের। কিন্তু মঙ্গলবার, চলতি বছরের যে র্যাঙ্কিং প্রকাশিত হয়েছে, সেই তালিকায় গৌড়বঙ্গের কোনও নামগন্ধ নেই। এ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক মহলের একাংশে ক্ষোভ ছড়িয়েছে। অভিযোগ উঠেছে, ২০১৬-১৭ আর্থিক বর্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ে নানা অনিয়মের অভিযোগে প্রতিষ্ঠান বিরোধী আন্দোলন, একাধিক তদন্ত, সময়ে পরীক্ষা না-করা, গবেষণা কম হওয়া থেকে শুরু করে নানা ডামাডোলের জেরেই এই তালিকা থেকে ছিটকে গিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়। কর্তৃপক্ষ অবশ্য জানিয়েছেন, আগামী দিনে ঘুরে দাঁড়াতে বাড়তি উদ্যোগ নেওয়া হবে।
টিচিং, লার্নিং অ্যান্ড রিসোর্স, রিসার্চ অ্যান্ড প্রফেশনাল প্র্যাকটিস, গ্র্যাজুয়েশন আউটকামস থেকে শুরু করে পাঁচটি মান-সূচকের ভিত্তিতে মানব সম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রকের পক্ষ থেকে প্রতি বছরই উত্কর্ষতায় দেশের সেরা বিশ্ববিদ্যালয়গুলিকে নিয়ে একটি র্যাঙ্কিং করা হয়। সেই র্যাঙ্কিংয়ে ২০১৫-১৬ আর্থিক বছরে গৌড়বঙ্গ সেই তালিকায় দু’শোর মধ্যে ছিল। মঙ্গলবার মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রকের তরফে প্রকাশিত র্যাঙ্কিংয়ে রাজ্যের একাধিক বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম থাকলেও গৌড়বঙ্গের নাম নেই।
কেন বিশ্ববিদ্যালয় র্যাঙ্কিং থেকে ছিটেকে গেল তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্দরেই। কয়েক জন শিক্ষকের বক্তব্য, ২০১৬-১৭ আর্থিক বছরে বিশ্ববিদ্যালয় ডামাডোলের মধ্যে দিয়ে চলেছে। তারই প্রভাব পড়েছে এই র্যাঙ্কিংয়ে।
র্যাঙ্কিংয়ের মান-সূচকে রয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের বাজেট এবং তার ইউটিলাইজেশন। কিন্তু দেখা গিয়েছে, সে সময়ে রুশা ফান্ড নিয়ে নানা অনিয়মের অভিযোগ ওঠে এবং তা নিয়ে আন্দোলন যেমন হয় তেমনই তদন্ত কমিটিও গঠন হয়। ফলে থমকে যায় কাজ। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তরের পরে পড়ুয়ারা কারা সরকারি চাকরি পেল বা কারা উচ্চ শিক্ষার জন্য অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে গেল বা কারা বেকার থেকে গেল, সে সব তথ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে সংরক্ষিত নেই।
অধ্যাপকদের গবেষণা ও প্রকাশনাও কম। বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনও প্লেসমেন্ট সেল নেই। পরীক্ষা ব্যবস্থা নিয়েও রয়েছে অভিযোগ। ভুলেভরা ফলাফল প্রকাশও এর মধ্যে অন্যতম। পরিকাঠামোর ঘাটতি তো রয়েছেই। বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে এনআইআরএফ-এর দায়িত্বে থাকা উন্নয়ন আধিকারিক রাজীব পুততুণ্ডি বলেন, ‘‘২০১৬-১৭ আর্থিক বর্ষের ভিত্তিতে এই মূল্যায়ন হয়েছে। বেশ কিছু ঘাটতিতেই এমনটা হয়েছে। ২০১৭ সালে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় যখন র্যাঙ্কিংয়ে ছিল তখন অনেক নামী বিশ্ববিদ্যালয় আবেদন করেনি। এ বার আবেদন বেশি। ফলে সে জায়গায় হয়তো গৌড়বঙ্গ পৌঁছতে পারেনি।’’ উপাচার্য স্বাগত সেন বলেন, ‘‘এটা আমার আমলের র্যাঙ্কিং নয়। নানা কারণে মান-সূচকে হয়তো পৌঁছন যায়নি। আগামী দিনে যাতে র্যাঙ্কিংয়ে থাকা যায় সেই চেষ্টা হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy