Advertisement
E-Paper

কাজ রয়েছে দিল্লি যাবেন না করিমুল

 প্রজাতন্ত্র দিবসের বিকেলে রাষ্ট্রপতি ভবনের অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার আমন্ত্রণ পেয়েছেন জলপাইগুড়ির অ্যাম্বুল্যান্স দাদা। তাতে উচ্ছ্বসিত গোটা পরিবার।  কিন্তু দায়িত্ব যে বড় বালাই। সেই সময় এক রোগীর অস্ত্রোপচারের গুরু দায়িত্ব তাঁর কাঁধে। তাই দিল্লি যাচ্ছেন না পদ্মশ্রী করিমুল হক৷

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২২ জানুয়ারি ২০১৮ ০১:৫০
জলপাইগুড়ির অ্যাম্বুল্যান্স দাদা পদ্মশ্রী করিমুল হক৷

জলপাইগুড়ির অ্যাম্বুল্যান্স দাদা পদ্মশ্রী করিমুল হক৷

প্রজাতন্ত্র দিবসের বিকেলে রাষ্ট্রপতি ভবনের অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার আমন্ত্রণ পেয়েছেন জলপাইগুড়ির অ্যাম্বুল্যান্স দাদা। তাতে উচ্ছ্বসিত গোটা পরিবার। কিন্তু দায়িত্ব যে বড় বালাই। সেই সময় এক রোগীর অস্ত্রোপচারের গুরু দায়িত্ব তাঁর কাঁধে। তাই দিল্লি যাচ্ছেন না পদ্মশ্রী করিমুল হক৷ তবে তাঁকে আমন্ত্রণ জানানোয় রাষ্ট্রপতিকে স্যালুট জানাতে ভোলেননি৷

পদ্মশ্রী সম্মান জানানোর পর এ বার জলপাইগুড়ির অ্যাম্বুল্যান্স দাদাকে ২৬ জানুয়ারি রাষ্ট্রপতি ভবনে উপস্থিত থাকার জন্য চিঠি পাঠানো হয়েছে। বাড়িতে সেই আমন্ত্রণপত্র আসার পরে দারুণ খুশি করিমুল ও তাঁর পরিবার। কিন্তু দিল্লি যে যাওয়া হচ্ছে না জানালেন তাও৷ করিমুল হকের কথায়, ‘‘ দিল্লি যাওয়ার খরচ অনেক। তা এই মুহূর্তে আমার কাছে নেই৷ তাছাড়া সেই সময় ক্রান্তির বাসিন্দা এক বৃদ্ধর অস্ত্রোপচার করানোর দায়িত্ব আমার কাঁধে রয়েছে৷ সম্প্রতি অস্ত্রোপচার হওয়া দুই মহিলার ড্রেসিং-ও আমায় করতে হচ্ছে৷ ফলে রাষ্ট্রপতি ভবনে আমার যাওয়া হবে না৷ তবে আমাকে এমন একটি অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানানোয় নতুন রাষ্ট্রপতিকে আমি প্রণাম জানাই৷ আমি খুব খুশি৷ আশা করি আমার সমস্যাটা সবাই বুঝবেন৷’’

সেই ১৯৯৫ সাল থেকে লড়াইটা শুরু হয়েছিল মালবাজারের রাজাডাঙার বাসিন্দা করিমুল হকের৷ ওই বছরই অসুস্থ হয়ে বাড়িতে মারা গিয়েছিলেন তাঁর মা৷ গাড়ির অভাবে তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে পারেননি। তা নিয়ে এখনও মাঝেমধ্যেই তাঁকে বলতে শোনা যায়, ‘‘সে দিন যদি মা-কে হাসপাতালে নিয়ে যেতে পারতাম তবে হয়তো বাঁচাতে পারতাম৷’’

সে দিনের সেই ঘটনার পরেই জেদ চেপে যায়। কেউ যাতে বিনা চিকিৎসায় মারা না যান তার জন্য লড়াইয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েন তিনি৷ কেউ অসুস্থ শুনলেই কারও থেকে মোটর সাইকেল ধার নিয়ে, তো কখনও ভ্যানে চাপিয়ে, তো কখনও আবার সাধারণ সাইকেলে চাপিয়েই তাকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে শুরু করেন তিনি৷ এ ভাবে কয়েক বছর যুদ্ধ চালানোর পর ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ নিয়ে একটি মোটরসাইকেল কেনেন৷ তারপরই শুরু হয় সেটাকেই অ্যাম্বুল্যান্স হিসেবে ব্যবহার। সেই মোটরসাইকেল অ্যাম্বুল্যান্সেই দিনে-রাতে পরের পর রোগীকে হাসপাতালে পৌঁছে দিয়ে প্রাণ বাঁচান করিমুল। তাঁকে দেখে সেই সময় কেউ হেসেছেন, তো কেউ বা তাকে পাগল বলেছেন৷ কিন্তু তাঁর সেই কর্মকাণ্ডের স্বীকৃতিতেই পদ্মশ্রী দেওয়া হয় তাঁকে।

Karimul Haque Delhi Republic Day করিমুল হক
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy