Advertisement
E-Paper

রক্তাল্পতা নিরাময়ে বাড়ি বাড়ি গিয়ে ট্যাবলেট

জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ছ’মাস থেকে পাঁচ বছর পর্যন্ত বয়সের শিশুদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে আশা এবং স্বাস্থ্যকর্মীরা ওষুধ পৌঁছে দিয়ে আসছেন।

মেহেদি হেদায়েতুল্লা

শেষ আপডেট: ০৪ মার্চ ২০১৯ ০৪:৫৭

অনেক শিশু রক্তাল্পতায় ভোগে। কয়েকটি ট্যাবলেট খেলেই সেই রোগ নিরাময় সম্ভব হলেও বিভিন্ন সময়ে সংশ্লিষ্ট পরিবারের পক্ষে শিশুদের তা দেওয়া সম্ভব হয় না, যার ফল ভোগ করতে হয় শিশুদের। সমস্যাটির সমাধানে এ বার উত্তর দিনাজপুরের শিশুদের বাড়ি বাড়ি ওষুধ খাওয়ানো শুরু করেছে স্বাস্থ্য দফতর। জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে এই প্রকল্প চালু করা হয়েছে বলে খবর।

জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ছ’মাস থেকে পাঁচ বছর পর্যন্ত বয়সের শিশুদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে আশা এবং স্বাস্থ্যকর্মীরা ওষুধ পৌঁছে দিয়ে আসছেন। দফতর সূত্রেই খবর, ‘নিপি’(ন্যাশনাল আয়রন প্লাস ইনিশিয়েটিভ) নামে এই প্রকল্পে সপ্তাহে একদিন করে দেওয়া হচ্ছে এই ট্যাবলেট। একই ভাবে প্রাথমিক পড়ুয়াদের ‘জুনিয়ার উইফস’ প্রকল্পের কর্মসূচির অধীনে প্রতি সোমবার মিড-ডে মিল খাওয়ার পরে পড়ুয়াদের এই ট্যাবলেট দেওয়া হয় বলে খবর। কর্মসূচির সুষ্ঠু রূপায়ণের জন্য এর মধ্যেই জেলা প্রশাসন ও স্বাস্থ্য দফতরের কর্তারা একাধিক বৈঠক করেছেন। সূত্রের খবর, বৈঠকে আলোচনা হয় কর্মসূচি রূপায়নের নানা দিক নিয়ে। সূত্রের খবর, অভিভাবকদেরও সচেতন করা হবে। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, প্রকল্পের অধীন স্বাস্থ্যকর্মীদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার পাশাপাশি স্কুলগুলোতে ট্যাবলেট বিলি করার কাজ চলছে। স্কুলগুলোতে ভাল সাড়া পাওয়া যাচ্ছে।

উত্তর দিনাজপুর জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক প্রকাশ মৃধা বলেন, ‘‘রক্তাল্পতা রোধে এ বার ৬ মাস থেকে শুরু করে ৫ বছর এবং প্রাথমিকের পড়ুয়াদের ট্যাবলেট খাওয়ানো হচ্ছে। সে জন্যই এই কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে।’’ সূত্রের খবর, রক্তাল্পতা রোধে ওষুধ খাওয়ানোর কর্মসূচি নতুন নয়। তবে এতদিন প্রাক প্রাথমিক স্তরে এই কর্মসূচি হয়নি। ষষ্ঠ থেকে দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রছাত্রীদের ট্যাবলেট খাওয়ানো হত।

জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, এই ছোট গোলাপি রঙের ট্যাবলেটে ৪৫ মিলিগ্রাম এলিমেন্টাল আয়রন ও ৪০০ মাইক্রোগ্রাম ফোলিক অ্যাসিড রয়েছে। ট্যাবলেটটি সব সময় খাবার পরেই খাওয়াতে হবে। খালি পেটে খাওয়ানো যাবে না। ইসলামপুরের কালুঘাট প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষক দেবাশিস দত্ত বলেন, ‘‘আমাদের স্কুলের পড়ুয়াদের জন্য আয়রন ট্যাবলেট এসে গিয়েছে। আমরা তা খাওয়ানো শুরুও করে দিয়েছি।’’

জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, এক সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, শিশু এবং প্রাক-প্রাথমিক পড়ুয়াদের মধ্যে রক্তাল্পতা জনিত সমস্যা বেশি। স্কুল পড়ুয়ারা এর ফলে দুর্বল হয়ে পড়ে। পড়াশোনায় মন বসে না। রক্তাল্পতার জেরে শিশুদের মস্তিকের বিকাশও কম হয়। ফলে এই সমস্যার সমাধানে উদ্যোগী হতেই হবে। এই ট্যাবলেট পুরোপুরি নিরাপদ বলে জানিয়েছেন জেলার স্বাস্থ্যকর্তারা। জেলার এক স্বাস্থ্যকর্তার দাবি, ‘‘প্রথম দিকে কারও বমি ভাব, মুখে বিস্বাদ ইত্যাদি উপসর্গ দেখা দিতে পারে। কিন্তু এটা সাময়িক। এ জন্য ট্যাবলেট খাওয়া বন্ধ করার কোনও দরকার নেই। ধীরে ধীরে এই সমস্যাগুলো নিজেই থেকেই কমে যাবে।’’

শিশুরোগ বিশেষজ্ঞদের দাবি, শিশুদের কথা মাথায় রেখেই ডোজ় তৈরি করা হয়েছে। আয়রন-ফলিক অ্যাসিড ট্যাবলেট প্রাপ্তবয়স্কের ডোজের এক পঞ্চমাংশ শিশুদের দেওয়া হয়। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানানো হয়েছে, কর্মসূচি সার্থক করতে পঞ্চায়েত জনপ্রতিনিধিদের সাহায্য নেওয়া হচ্ছে।

Health Department Anemia Tablet Children Anemia
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy