Advertisement
E-Paper

ছন্দে ফিরতে চাইছে পাহাড়

নিমকিদাড়া এলাকায় বুলডোজার দিয়ে ধস সরানোর কাজ চলছে। সামনে দাঁড়িয়ে শূন্য দৃষ্টিতে সেদিকেই তাকিয়েছিলেন সত্তরোর্ধ্ব বৃদ্ধ। দু’দিন আগে সেখানে রাস্তার ধারে দুটি বাড়ির মাঝখানের বিশাল অংশ ধসে গিয়েছে। রাস্তার একটা বড় অংশ জুড়ে পাহাড় প্রমাণ মাটি-পাথরের চাঁই পড়ে রয়েছে। বুলডোজার দিয়েও তাকে বাগে আনা যাচ্ছে না।

সংগ্রাম সিংহ রায়

শেষ আপডেট: ০৪ জুলাই ২০১৫ ০২:৫০
১০ নম্বর জাতীয় সড়কে ধস নেমে সিকিম কার্যত বিচ্ছিন্ন। নানা জায়গায় এমনই হাল রাস্তার।

১০ নম্বর জাতীয় সড়কে ধস নেমে সিকিম কার্যত বিচ্ছিন্ন। নানা জায়গায় এমনই হাল রাস্তার।

নিমকিদাড়া এলাকায় বুলডোজার দিয়ে ধস সরানোর কাজ চলছে। সামনে দাঁড়িয়ে শূন্য দৃষ্টিতে সেদিকেই তাকিয়েছিলেন সত্তরোর্ধ্ব বৃদ্ধ। দু’দিন আগে সেখানে রাস্তার ধারে দুটি বাড়ির মাঝখানের বিশাল অংশ ধসে গিয়েছে। রাস্তার একটা বড় অংশ জুড়ে পাহাড় প্রমাণ মাটি-পাথরের চাঁই পড়ে রয়েছে। বুলডোজার দিয়েও তাকে বাগে আনা যাচ্ছে না।

এই দৃশ্য দেখতে দেখতেই আপন মনে বিড়বিড় করে চলেছেন। এগিয়ে গিয়ে জিজ্ঞাসা করতেই আঙুল তুলে ধসের অনেকটা উপরের দিকে দেখালেন। সেখানে তাকিয়ে যা দেখা গেল তাতে আঁতকে উঠতে হয়। পাহাড়ের যেটুকু অংশ ধসে গিয়েছে, তার খানিকটা উপরে বড় বড় কয়েকটি গাছ বিপজ্জনকভাবে ঝুঁকে রয়েছে। দেখে বোধ হচ্ছে, আলতো হাওয়াতেই বুঝি পড়ে যাবে।

বৃদ্ধের নাম গণেশ সুব্বা। বাড়ি পাশের কাকদাড়ায়। যেখানে ধস পড়েছে আগের দিন বেশ রাত পর্যন্ত সেখানে দাঁড়িয়েছিলেন। সেখানে একটি বাড়ি ছিল। সেটি সম্পূর্ণ অদৃশ্য হয়ে গিয়েছে প্রকৃতির তাণ্ডবে। তিনি খুঁজছেন ওই নিশ্চিহ্ন হয়ে যাওয়া বাড়ির লোকজনকে। কাউকে পাচ্ছেন না। তিনি জনে জনে প্রশ্ন করছেন, ‘‘বাড়ির মালিক কোথায়?’’ কিন্তু কোনও উত্তর মেলে না।

ভূমিকম্পের পরে ফের ধসের কবলে পাহাড়। গণেশবাবু বললেন, ‘‘একটা বিপদ কাটতে না কাটতেই আরেকটা। কী যে হচ্ছে পাহাড়ে! রাতে ঘুমোতে যাচ্ছি। সকালে উঠে দেখছি পড়শির বাড়িটাই নেই।’’

কার্শিয়াং থেকে একটু উপরে রক্তিখোলাতেও পাহাড় ও রাস্তা ভেঙে খাদে পড়েছে। সেখানকার এক বাসিন্দা কল্যাণ প্রধান বলেন, ‘‘রাতে শোওয়ার আগে যা দেখেছিলাম। এখ সকালে উঠে আরেক দৃশ্য দেখছি। পাহাড়ের মাটি কী এতটাই আলগা হয়ে গিয়েছে!’’ ওই এলাকায় ধস সরানোর কাজ চলছে। মাঝে মধ্যেই রাস্তা আটকে দেওয়া হচ্ছে। ফলে, হাট-বাজারে যেতে পারছেন না কেউই।

একদিকে ধস সরানোর কাজ চলছে, আবার হুড়মুড়িয়ে ওপর থেকে পাথর, মাটির চাঁই ভেঙে পড়েছে। এভাবেই শুক্রবার সারাদিনই ঢিমেতালে কাজ হয়েছে দার্জিলিং পাহাড়ের ধসে যাওয়া এলাকাগুলিতে। নতুন করে বড় ধসের কোনও খবর না পাওয়া গেলেও আগের ধস সরাতেই হিমসিম খেতে হয়েছে। এদিনও সারাদিনই দফায় দফায় বৃষ্টি হয়েছে দার্জিলিংয়ের একাধিক এলাকায়। তার উপরে ভূমিকম্প ও বৃষ্টিতে পাহাড়ের মাটি নরম হয়ে রয়েছে বলে খবর মেলায় ফের নতুন করে আতঙ্ক ছড়িয়েছে দার্জিলিংয়ের বাসিন্দাদের মধ্যে। দার্জিলিং, নিমকিদাড়া, শ্বেতীখোলা, রক্তিখোলা এলাকায় মানুষের মধ্যের আতঙ্ক এখনও কাটেনি। তারই মধ্যে ছন্দে ফেরার মরিয়া চেষ্টা চলছে।

ছবি: বিশ্বরূপ বসাক।

hill darjeeling sangram singha roy earthquake
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy