বিজেপির কোচবিহার জেলা সহ সভাপতি ব্রজগোবিন্দ রায়ের বাড়িতে দুষ্কৃতী হামলার অভিযোগ উঠেছে। শুক্রবার রাত সাড়ে ১০ টা নাগাদ ঘটনাটি ঘটে দিনহাটা থানার ভেটাগুড়ি এলাকায়। ব্রজগোবিন্দবাবুর ঘরের ভিতরে ঢুকে আসবাবপত্র, টেলিভিশন সহ একাধিক জিনিসপত্র ভাঙচুর করে দুস্কৃতীদের ওই দল। পিছনের দরজা দিয়ে পালিয়ে যান ব্রজগোবিন্দবাবু ও তাঁর স্ত্রী। বিজেপির অভিযোগ, ওই ঘটনার পিছনে তৃণমূলের দুষ্কৃতীদের হাত রয়েছে।
এর আগেও তিনবার বিজেপির ওই নেতার উপরে শাসক দলের দুষ্কৃতীরা হামলা করে বলে অভিযোগ। একবার তাঁর মাথা ফাটিয়ে দেওয়া হয়। এ বারে তাঁকে খুন করার উদ্দ্যেশেই দুস্কৃতীরা হামলা চালায় বলে সন্দেহ করছেন তাঁরা। তৃণমূল অবশ্য অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে। তাঁদের দাবি, প্রচারে আসার জন্য মিথ্যে অভিযোগ করছে বিজেপি।
কোচবিহারের পুলিশ সুপার রাজেশ যাদব বলেন, “অভিযোগ পেয়ে তদন্ত শুরু করা হয়েছে। রাজনৈতিক কোনও কারণের কথা অভিযোগপত্রে বলা হয়নি।” ব্রজগোবিন্দবাবু জানান, তিনি অভিযোগপত্রে গত এক বছরে কয়েকবার তৃণমূলের দুষ্কৃতীরা তাঁর উপরে হামলা করেছে সে কথা উল্লেখ করেছেন। সেখান থেকেই তাঁর সন্দেহ হচ্ছে এই ঘটনার পিছনেও শাসক দল রয়েছে। তিনি বলেন, “বিজেপির সংগঠন মজবুত করার কাজে নামায় এর আগেও আমার উপরে হামলা করা হয়। আমাকে মারধর করা হয়। বাড়িতে আগুন লাগানোর চেষ্টাও হয়। এবারের ঘটনার পিছনেও তৃণমূল রয়েছে বলে সন্দেহ আমার। এ ছাড়া অন্য কোনও কারণ থাকতে পারে না।” বিজেপির কেন্দ্রীয় কমিটির নেতা নিত্যানন্দ মুন্সি বলেন, “ব্রজগোবিন্দবাবু ওই এলাকাতে বিজেপির সংগঠন অনেক মজবুত করেছেন। তাঁর নেতৃত্বেই সেখানে সংগঠন বাড়ছে। সে কারণেই তাঁর উপরে বার বার হামলা করছে শাসক দল। এবারে তাঁকে খুন করার উদ্দেশ্যেই হামলা হয়েছিল বলে মনে হচ্ছে আমাদের।”
তৃণমূলের কোচবিহার জেলার সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষ অবশ্য দাবি করেন, ভেটাগুড়িতে বিজেপির কোনও সংগঠন নেই। তিনি বলেন, “হঠাৎ করে একটা অভিযোগ তুলে বাজার গরম করার চেষ্টা করা হচ্ছে।”
ব্রজগোবিন্দবাবু হাইস্কুলের শিক্ষক। দিনহাটা যাওয়ার প্রধান সড়কের ধারে ভেটাগুড়ি বাজার সংলগ্ন এলাকাতে তাঁদের বাড়ি। এদিন তিনি ও তাঁর স্ত্রী বাড়িতে ছিলেন। তাঁর দুই ছেলেও রয়েছে। বড় ছেলে চাকরি সূত্রে বাইরে থাকেন। ছোট ছেলে ব্যবসার কাজে এদিন বাড়ির বাইরে ছিলে। ব্রজবাবু জানান, রাত ১২ টার পরে বাড়ির সামনে একটু হল্লা শুনতে পান। টের পান তাঁদের বাড়ির গ্রিল কেউ ভাঙার চেষ্টা করছে। সঙ্গে ব্রজগোবিন্দবাবুর নাম ধরে গালি দিচ্ছে। ভয়ে ঘর ছেড়ে পালিয়ে যাওয়া ছাড়া অন্য কিছু ভাবেননি ওই বিজেপি নেতা। পিছনের দরজা দিয়ে বেরিয়ে ধান ক্ষেতের মধ্যে গিয়ে লুকিয়ে পড়েন। সেখান থেকে মোবাইলে দলের নেতা এবং পুলিশকে বিষয়টি জানান। দু’ঘন্টা পরে পুলিশ সেখানে পৌঁছলে তাঁরা ধান ক্ষেত থেকে বেরিয়ে আসেন। বাড়িতে ফিরে দেখেন ঘরের সবকিছু তছনছ করা। আসবাবপত্র, টেলিভিশন ভেঙে দিয়েছে দুস্কৃতীরা।
তিনটি বাইকে চেপে দুষ্কৃতীরা গিয়েছিল বলে তিনি প্রতিবেশীদের কাছে জানতে পেরেছেন। তিনি অভিযোগ করেন, গত ফেব্রুয়ারি মাসে দলের মিটিং করার সময় তৃণমূল হামলা করে। তাঁর মাথা ফাটিয়ে দেওয়া হয়। তাঁর আগে আরও দুবার হামলা হয়। তিনি বলেন, “এখন বাড়িতে থাকতে ভয় হচ্ছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy