ময়ূর উপাসকদের মধ্যে অন্যতম চন্দ্রগুপ্ত মৌর্য, সর্প বন্দনাকারীদের মধ্যে বাসুকী নাগ, মহিষকুলে মহিষাসুর আর চড়ুই বংশে ক্যাপ্টেন জ্যাক স্প্যারো! পাইরেট বংশে এমন বীরপুঙ্গবের উপাধি কিন্তু স্প্যারো, মানে পক্ষীকুলের এক নিরীহ ক্ষুদ্র ‘চড়ুই পাখি’। যে জ্যাক স্প্যারো বলে, কোন সমস্যাই সমস্যা নয়, সমস্যা হল কী ভাবে দেখছো তাকে!
তা বলে চড়ুইয়ের মতো একটা ছোট্ট পাখির জন্য একটা আস্ত দিন! চড়ুই দিবস যে হতে পারে, ক’বছর আগেও ভাবা যেত না। এ দেশের ‘নেচার ফরএভার সোসাইটি’ নামে এক সংগঠন ২০১০ সাল থেকে প্রত্যেক বছরের ২০ মার্চ এই দিন পালন করছে। ২০১১ সালের এই দিনে গুজরাতের আমদাবাদে শুরু হয় ‘স্প্যারো আওয়ার্ড’ প্রদান। এ পর্যন্ত ৪০টির বেশি দেশ বিশ্ব চড়ুই দিবস পালনে ও চড়ুই রক্ষায় এগিয়ে এসেছে। যে চড়ুই আমাদের সঙ্গে কার্নিশ, কড়িকাঠ, ঘুলঘুলি, জল বেরোবার ফুটোয় গা ঘেঁষাঘেঁষি করার অপরাধে পক্ষীকূলে নিন্দিত (রজনীকান্ত সেনের ‘স্বাধীনতার সুখ’ কবিতায় চড়ুইকেই পাল্টা ঠেস দিয়ে বাবুই পাখি বলেছে, ‘বাবুই হাসিয়া কহে, সন্দেহ কি তাই/ কষ্ট পাই, তবু থাকি নিজের বাসায়/ পাকা হোক, তবু ভাই পরের ও বাসা/ নিজ হাতে গড়া মোর কাঁচা ঘর খাসা’), সেই আমাদের অতি আহ্লাদে, প্রায় গায়ে পড়া পাখিটাই আজ বিপন্ন। বিপন্নতার কারণ তার পরম মিত্র মানুষই।
১৯৮০ সালের পর থেকে গোটা বিশ্বে চড়ুইয়ের সংখ্যা হ্রাস পেয়েছে অনেকটাই। এর একমাত্র কারণ, মানুষের কর্মকাণ্ড। নিয়ন্ত্রণহীন রাসায়নিক দ্রব্যের ব্যবহার, ফসলে কীটনাশক দেওয়ায় চড়ুই তার খাবার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। শস্যদানা, ঘাসের বীজের ফাঁকে পোকার শূককীট, মুককীট বা লেদা পোকা খেয়ে ফসল বাঁচায় চড়ুই।