এক লক্ষের কাছাকাছি পরিবারের জব কার্ড রয়েছে। কিন্তু কাজ নেই। চলতি আর্থিক বছর শুরুর পরে দেড় মাস কেটে গেলেও শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদ এলাকায় একশো দিনের কাজ শুরুই হয়নি। মহকুমা পরিষদের চারটি ব্লকের মধ্যে তিনটির থেকেই কাজের আবেদন মহকুমা পরিষদ তথা জেলায় এসে পৌঁছয়নি।
গত বছরের শেষের দিকে প্রকল্পের আর্থিক বরাদ্দ না থাকায় মজুরি দেওয়া বন্ধ হয়ে গিয়েছিল মহকুমা পরিষদ এলাকায়। জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, বর্তমানে বরাদ্দ নিয়ে সমস্যা নেই। জেলার হাতে এই মুহূর্তে প্রায় ১০ কোটি টাকা রয়েছে, পরবর্তী বরাদ্দও দ্রুত মিলবে বলে জানানো হয়েছে। তবু কাজ চেয়ে আবেদনই জমা পড়েনি।
সমস্যা তৈরি হয়েছে কাজ পরিচালনা নিয়েও। গত বছরের জুলাই মাসে মহকুমা পরিষদের বোর্ডের মেয়াদ ফুরিয়ে গিয়েছে। একই সঙ্গে পঞ্চায়েত সমিতি এবং গ্রাম পঞ্চায়েতের বোর্ডেরও মেয়াদও শেষ হয়েছে। শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদের ত্রি-স্তর পঞ্চায়েত সমিতির কোনও স্তরেই নির্বাচিত বোর্ড নেই। বোর্ডের পরিবর্তে ‘কাস্টোডিয়ান’ এবং প্রশাসক দিয়ে কাজ চলছে। যার প্রভাব সরাসরি এসে পড়েছে একশো দিনের কাজে। নির্বাচিত বোর্ড না থাকায় অনেক গ্রাম পঞ্চায়েতে চলতি আর্থিক বছরে কী কাজ কবে, কারা কাজ করবেন তার তালিকাই তৈরি করা সম্ভব হয়নি বলে জানা গিয়েছে। একই ভাবে মহকুমা পরিষদেও বোর্ড না থাকায় গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান বা উপ প্রধানদের নির্দেশ দিয়ে কাজের তালিকা আনানোও সম্ভব হয়নি।
শিলিগুড়ির মহকুমা শাসক দ্বীপাপ প্রিয়া মহকুমা পরিষদ এলাকায় একশো দিনের কাজ প্রকল্পের ‘নোডাল অফিসার’। গত বুধবার তিনি মহকুমা পরিষদ এবং বিভিন্ন ব্লকের আধিকারিকদের নিয়ে বৈঠকও করেছেন। দ্রুত কাজের তালিকা চেয়ে পাঠানো হয়েছে বিভিন্ন ব্লক থেকে। দ্বীপাপ প্রিয়া বলেন, ‘‘টাকার অভাব বর্তমানে নেই। দ্রুত কাজ শুরু হবে। বোর্ড থাকলে একেবারে নীচুস্তর থেকে কাজের তালিকা তৈরি করা সম্ভব হয়, সে ক্ষেত্রে কিছুটা সমস্যা হয়েছে।’’
মহকুমা পরিষদের চারটি ব্লকের মধ্যে পরিবার পিছু জব কার্ডের সংখ্যা বেশি ফাঁসিদেওয়াতে। একমাত্র এই ব্লক থেকেই চলতি বছরে কাজের আবেদন পাঠানো হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। একশো দিনের কাজের সেল সূত্রের খবর, ফাঁসিদেওয়া থেকে ৭৯টি পরিবার কাজ চেয়ে পাঠিয়েছে। খড়িবাড়িতে ১৮ হাজার ২৫৫টি পরিবারের জব কার্ড রয়েছে, মাটিগাড়ায় ২২ হাজার এবং নকশালবাড়িতে ২৩ হাজারের কিছু বেশি পরিবারের জব কার্ড রয়েছে। হাজার হাজার পরিবারের জব কার্ড থাকলেও, তিনটি ব্লকে একজনও কাজ চেয়ে আবেদন করল না কেন স্বাভাবিক ভাবেই তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। যদিও, প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, মূল সমস্যা হয়েছে, নজরদারির। নির্বাচিত বোর্ড থাকলে, নিয়মিত গ্রাম সভা হয়, একশো দিনের কাজের তালিকা নিয়েও বিভিন্ন বুথে সভা হয়। সেই সভাতেই কাজ প্রাপকদের তালিকা তৈরি হয়। গত বছরের জুলাই মাস থেকে সেই সভাগুলি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় প্রকল্পে কর্মপ্রার্থীদের তালিকাও তৈরি করা যায়নি বলে ব্লক সূত্রে জানা গিয়েছে। প্রশাসনের আধিকারিকদের একাংশের দাবি, নজরদারির অভাবেই প্রকল্পের গতি শ্লথ হয়ে পড়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy