Advertisement
E-Paper

তিন বছরে হয়নি, সেই কাজ তিন ঘণ্টায়

এত লড়াইয়ের পর অবশেষে বকেয়া অর্থ মেলায় তিনি খুশি, তবে বিডিও অফিসের বিরুদ্ধে ক্ষোভও উগরে দেন তিনি। তাঁর কথায়, ‘‘বিডিও দফতরের গাফিলতির জন্যই আমায় এতদিন হয়রানের শিকার হতে হয়েছে৷’’

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০৩:২৭
অনশনে বসেছেন বিমলকৃষ্ণ। ছবি: দীপঙ্কর ঘটক

অনশনে বসেছেন বিমলকৃষ্ণ। ছবি: দীপঙ্কর ঘটক

সাড়ে তিন বছর ধরে আবেদন-নিবেদন করেও যে কাজ হয়নি, অনশনের ধাক্কায় মাত্র সাড়ে তিন ঘণ্টাতেই হয়ে গেল সেই কাজ৷

চাকরি থেকে অবসর নেওয়ার সাড়ে তিন বছর পরও ভবিষ্যনিধি প্রকল্পের বকেয়া দশ শতাংশ অর্থ পাচ্ছিলেন না ময়নাগুড়ির ভোটপট্টির বিমলকৃষ্ণ রায়৷ তবে সোমবার ময়নাগুড়ির বিডিও অফিসে অনশনে বসার পর দুপুরের মধ্যেই তার বকেয়া টাকার চেক ট্রেজারি দফতরে জমা পড়ে যায়৷

ময়নাগুড়িরই সাপ্টিবাড়ি- ২নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের সচিব ছিলেন বিমলবাবু৷ ২০১৪ সালের সেপ্টেম্বর মাসে অবসর নেন তিনি৷ বিমলবাবু জানান, অবসরের আগেই ভবিষ্যৎনিধি প্রকল্পের নব্বই শতাংশ টাকা তিনি তুলে নেন৷ বাকি ছিল দশ শতাংশ অর্থ৷ সে জন্য এই সাড়ে তিন বছর ধরে বারবার করে ময়নাগুড়ি বিডিও অফিসে আবেদন করে যাচ্ছিলেন তিনি৷ বিমলবাবুর অভিযোগ, ‘‘আমি রক্তচাপ ও স্নায়ুর রোগে আক্রান্ত৷ বেঙ্গালুরুতে আমার চিকিৎসা চলছে৷ সামান্য পেনশনের টাকায় সংসার চালিয়ে চিকিৎসার ব্যয়ভার বহন করা কার্যত অসম্ভব৷ সে জন্য দফায় দফায় বিডিওর কাছে ভবিষ্যনিধি প্রকল্পের বাকি নব্বই শতাংশ টাকা দিতে দেওয়ার জন্য আবেদন করি৷ কিন্তু বিডিও দফতরে কোনও কর্তাই আমার কথায় কর্ণপাত করেননি৷ শেষ পর্যন্ত অনশনে বসা ছাড়া আমার কাছে উপায়ও ছিল না৷’’

বিডিও দফতর সূত্রের খবর, এ দিন বেলা দশটা নাগাদ বিডিও দফতর চত্বরেই অনশন শুরু করেন বিমলবাবু৷ তাঁকে সমর্থন জানাতে সেখানে এ গিয়ে যান প্রবীণ নাগরিক ও পেনশনার্সদের সংগঠনও৷ ভবিষ্যনিধি প্রকল্পের অর্থ না পেয়ে অবসরপ্রাপ্ত গ্রাম পঞ্চায়েতের এক কর্মী অনশনে বসেছেন শুনে ব্লক প্রশাসনে হইচই শুরু হয়ে যায়৷ বিডিও দফতরের কর্তারা ফোন করে তাঁকে তাঁর প্রাপ্য টাকার ব্যবস্থা হবে আশ্বাস দিয়ে অনশন তুলে নিতে অনুরোধ করেন৷ কিন্তু বিমলবাবু তাঁদের জানিয়ে দেন, এতদিন অপেক্ষার পর তিনি যখন অনশনে বসেছেন, প্রাপ্য অর্থ না পেয়ে আর উঠবেন না৷ এই অবস্থায় ব্লক প্রশাসনের এক কর্তা তাঁর কাছে ছুটে গিয়ে অনশন তুলে নেওয়ার আবেদন জানিয়েও ব্যর্থ হন৷ শেষ পর্যন্ত দুপুর দেড়টা নাগাদ বিমলবাবুর কাছে যান বিডিও শ্রেয়সী ঘোষ৷ তাঁর সামনেই তার বকেয়া অর্থের চেক তৈরি করে ট্রেজারিতে পাঠানোর ব্যবস্থা করেন তিনি৷ এরপর অনশন তোলেন বিমলবাবু৷

এত লড়াইয়ের পর অবশেষে বকেয়া অর্থ মেলায় তিনি খুশি, তবে বিডিও অফিসের বিরুদ্ধে ক্ষোভও উগরে দেন তিনি। তাঁর কথায়, ‘‘বিডিও দফতরের গাফিলতির জন্যই আমায় এতদিন হয়রানের শিকার হতে হয়েছে৷ ব্লকে আমার মত আরও অনেক অবসরপ্রাপ্ত কর্মী রয়েছেন যাঁদের অবস্থাও এক৷ আমি চাই তাদের সমস্যারও দ্রুত সমাধান হোক৷’’

বিডিও শ্রেয়সীদেবীর সঙ্গে বারবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিিন ফোন ধরেননি, এসএমএসেরও উত্তর দেননি। দফতরের এক কর্তার দাবি, কাগজপত্র তৈরি হতে সময় লাগায় টাকা পেতে দেরি হয়েছে।

Hunger strike Provident Fund owing money জলপাইগুড়ি
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy