গোটা শহরে কড়া নজরদারি চালানো হচ্ছে বলে দাবি পুলিশ প্রশাসনের। অথচ শিলিগুড়ি ও লাগোয়া এলাকার পানশালা, ডিস্কো থেকে-র একাংশ সরকারি বিধির তোয়াক্কা করছে না বলেও একের পর এক অভিযোগ উঠছে।
মাটিগাড়ার উত্তরায়ণের এক পানশালায় দুই তরুণী নিগ্রহের ঘটনার পরে এমন কয়েকটি বিষয় পুলিশ-প্রশাসনের সামনে এসেছে। তা নিয়ে রাজ্য পুলিশ-প্রশাসনের শীর্ষ কর্তারা উদ্বেগ প্রকাশ করে কড়া পদক্ষেপের নির্দেশ দিয়েছেন। তাতেই নড়েচড়ে বসতে বাধ্য হয়েছে শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনারেট ও জেলা প্রশাসন। মাটিগাড়ায় তরুণী নিগ্রহের ঘটনার অভিযোগ নিতে গড়িমসি করায় এক পুলিশ অফিসারকে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে পুলিশ লাইনে পাঠানো হয়েছে। সংশ্লিষ্ট ওসির ভূমিকা নিয়েও রিপোর্ট তলব করেছেন ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ। আবগারি দফতরের পক্ষ থেকেও ওই ডিস্কো কর্তৃপক্ষ নির্দিষ্ট সময়ের পরে লেনদেন চালিয়েছেন বলে সন্দেহ করা হচ্ছে।
শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনার চিলিং সেমিক লেপচা বলেছেন, ‘‘বড়দিন ও বর্ষশেষের উৎসবের মরসুমে প্রতিটি পানশালা ও ডিস্কোয় বাড়তি নজরদারি চালানোর জন্য বাছাই অফিসারদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। কোথাও বিধিভঙ্গ হলেই থানাকে কড়া পদক্ষেপ করতে বলা হয়েছে। নজরদারি কিংবা কর্তব্যে গাফিলতি ধরা পড়লে, যে কাউকে রেয়াত করা হবে না, সেই বার্তাও দেওয়া হয়েছে।’’
দার্জিলিঙের জেলাশাসক অনুরাগ শ্রীবাস্তবের নির্দেশে আবগারি দফতর প্রাথমিক তদন্ত করে রিপোর্ট জমা দিয়েছে। উপরন্তু, নানা মহল থেকে জেলা প্রশাসনের কাছে ভুরি ভুরি অভিযোগ পৌঁছেছে। যেমন, কোথাও রাত ১১টার জায়গায় ১টা পর্যন্ত খোলা থাকছে পানশালা। আবার কখনও ‘সিঙ্গিং-বার’ পৌনে ১২টায় বন্ধ হওয়ার কথা থাকলেও তা ২টো পর্যন্ত সেখানে লেনদেন চলছে। কয়েকটি এলাকায় এক প্রভাবশালী নেতার ঘনিষ্ঠ হিসেবে নিজেকে দাবি করে এক পানশালা-মালিক রাত আড়াইটে পর্যন্ত কারবার চালাচ্ছেন বলেও অভিযোগ উঠছে।
এমনকী, জেলা প্রশাসনের তরফে কোনও তল্লাশি অভিযান হলে এক পানশালা মালিক অবলীলায় এক মন্ত্রীর নাম করে পুলিশ-আবগারি দফতরের অফিসারদের একাংশকে কড়া ভাষায় কথা বলেন বলেও অভিযোগ উঠছে।
এখানেই শেষ নয়, মাটিগাড়ার একটি পানশালায় প্রশাসনের এক বড়কর্তা নিয়মিত ‘পার্টি’ দেন বলেও নবান্নে খবর পৌঁছেছে। সেই সুবাদে ওই পানশালা পুলিশের ছাড়পত্র না মিললেও অনায়াসে গভীর রাত পর্যন্ত তা খোলা রাখার অনুমতি পাচ্ছে বলে অনেকের সন্দেহ। সরকারি সূত্রের খবর, বিষয়টি নিয়ে রাজ্যের এক মন্ত্রী প্রশাসনের ওই কর্তাকে সতর্কও করেছেন। তাতেও পরিস্থিতি খুব একটা পাল্টায়নি বলে পুলিশের অনেকেই একান্তে মানছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy