Advertisement
E-Paper

বাম আমলের তদন্ত হোক: সৌরভ

উত্তরবঙ্গে বন্ধ চা বাগানে অনাহারে শ্রমিকের মৃত্যু নিয়ে শাসক-বিরোধী বিতর্কের আবহাওয়ায় বিধানসভার চলতি অধিবেশনে প্রথম বক্তৃতায় নজর কাড়লেন আলিপুরদুয়ারের বিধায়ক সৌরভ চক্রবর্তী।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৩ জুন ২০১৬ ০৮:১৩
দার্জিলিঙের একটি বাগানে কর্মরত শ্রমিকেরা। — ফাইল চিত্র

দার্জিলিঙের একটি বাগানে কর্মরত শ্রমিকেরা। — ফাইল চিত্র

উত্তরবঙ্গে বন্ধ চা বাগানে অনাহারে শ্রমিকের মৃত্যু নিয়ে শাসক-বিরোধী বিতর্কের আবহাওয়ায় বিধানসভার চলতি অধিবেশনে প্রথম বক্তৃতায় নজর কাড়লেন আলিপুরদুয়ারের বিধায়ক সৌরভ চক্রবর্তী।

কোনও চা বাগান বন্ধ নেই এবং অনাহারে কোনও শ্রমিক মারা যাননি বলে মঙ্গলবারই বিধানসভার অধিবেশনে মন্তব্য করেছিলেন শ্রমমন্ত্রী মলয় ঘটক। বিরোধী শিবির থেকে তা নিয়ে তুমুল প্রতিবাদ হয়। বুধবার রাজ্যপালের ভাষণের উপর ধন্যবাদ জানিয়ে বক্তৃতা দিতে গিয়ে সৌরভ পাল্টা অভিযোগ করেন, বামফ্রন্ট সরকারের আমলে চা বাগানে অনাহারে প্রায় আড়াই হাজার শ্রমিক ও তাদের পরিবারের সদস্য মারা গিয়েছেন। অভাবের তাড়নায় চা-শ্রমিক পরিবারের প্রায় ৫ হাজার মহিলা ও শিশু ভিন রাজ্যে কাজের জন্য গিয়ে নিখোঁজ হয়েছে। তাদের ঠিক কী হয়েছে তা জানার জন্য সরকারের কাছে পূর্ণাঙ্গ তদন্তের দাবি করেন সৌরভ। বাম আমলে বন্ধ চা বাগানের শ্রমিকদের অবস্থার কথা বলতে গিয়ে সৌরভ নানা ঘটনা ও পরিসংখ্যান দিয়ে তাঁর বক্তব্য পেশ করেন। তাঁর কথায়, ‘‘আমার জানা পাটকাপাড়া চা বাগানের এক মহিলা শ্রমিককে দিল্লিতে পরিচারিকার কাজে লাগানোর হবে বলে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। কিন্তু তিনি আর ফিরে আসেননি।’’ তাঁর দাবি, এই রকম অসংখ্য মহিলা শিশুদের দিল্লি, চেন্নাই ও দেশের বাইরে পাচার করার অভিযোগ তাঁরা পেয়েছেন।

অবশ্য সৌরভ বাম আমলে চা বাগানের সমস্যার কথা তুলে ধরলেও, এ দিন শিলিগুড়ির সিপিএম বিধায়ক এবং রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী অশোক ভট্টচার্য শ্রমমন্ত্রীর বক্তব্যের সমালোচনা করেন। রাজ্যপালের ভাষণে চা বাগানের সমস্যার উল্লেখ থাকায় তিনি ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, ‘‘শ্রমমন্ত্রী বলছেন কোনও চা বাগান বন্ধ নেই। কিন্তু মঙ্গলবারই দার্জিলিঙের জেলাশাসক ৫টি বন্ধ চা বাগান খোলা নিয়ে বৈঠক করেছেন। এই ৫ চা বাগানেরই মালিক তৃণমূলের এক সাংসদ। এই ৫ বাগানের ৪০০ কর্মী অনাহারে মারা গিয়েছে এবং প্রায় ২৫ কোটি টাকা শ্রমিকদের বকেয়া পাওনা আছে।’’ এই ব্যাপারে সরকারে ব্যবস্থা নিতে হবে বলে তিনি দাবি করেন।

বাম আমলে চা বাগানের ‘ভয়াবহ পরিস্থিতি’র কথা তুলে ধরার পাশাপাশি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের পাঁচ বছর পাশাপাশি ডুয়ার্সের বিভিন্ন জনজাতির উন্নয়নের কথা জানিয়ে সৌরভ এ দিন বলেন, ‘‘ডুয়ার্সে রাজবংশী, কোচ, মেচ, রাভা প্রভৃতি জনজাতি আছে। এই সমস্ত জনজাতির জীবন ধারার মান উন্নয়নের জন্য মুখ্যমন্ত্রী আলাদা আলাদা কমিটি করে দিয়েছেন। বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প রূপায়ণের ব্যবস্থা করেছেন।’’ পাহাড়ের সঙ্গে ডুয়ার্সে জনজাতির মধ্যে ভাগাভাগি বন্ধ করে সম্প্রীতির পরিমণ্ডল গড়ে উঠেছে জানিয়ে সৌরভ এ দিন বলেন, ‘‘আগে বাম সরকারে প্রশাসনিক দুর্বলতায় ডুয়ার্সে শান্তি ছিল না। আইন-শৃঙ্খলার অবনতি হয়েছিল।’’ তাঁর বক্তব্যের সমর্থনে পরিসংখ্যান দিয়ে আলিপুরদুয়ারের বিধায়ক বলেন, ‘‘২০০৯ থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত ডুয়ার্সে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ১১৯টি বন্‌ধ করেছিল। কিন্তু ২০১১ থেকে ২০১৬র মধ্যে মাত্র ২১টি বন্‌ধ হয়েছে।’’ তিনি জানান, মমতা সরকারের আমলে ডুয়ার্সে শিক্ষার প্রসার ঘটেছে। একটি নতুন বিশ্ববিদ্যালয় হয়েছে। তা ছাড়া উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় এবং রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস খোলা হয়েছে।

বিধানসভায় তাঁর প্রথম বক্তৃতার প্রশংসা করেন শাসক দলের পক্ষ থেকে পরিষদীয় মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় থেকে শুরু করে মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস, ফিরহাদ হাকিম, শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়-সহ অনেকেই। সৌরভ জানিয়েছেন বিরোধীদের পক্ষ থেকে নেপাল মাহাতোও প্রশংসা করেছেন। অভিজ্ঞ বিধায়ক ও মন্ত্রীদের প্রশংসায় তিনি অনুপ্রাণিত বলে জানিয়েছেন সৌরভ।

Investigation tea garden
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy