Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
CV Ananda Bose

ছেচল্লিশ বছরেও অক্ষত শিকড়ের সে যোগ

জলপাইগুড়িতে ক্লাব রোডে একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের শাখায় ১৯৭৭ সালে প্রথম কর্মজীবন শুরু করেছিলেন সি ভি আনন্দ বোস।

West Bengal governor CV Ananda Bose at jalpaiguri

রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের শাখায় রাজ্যপাল। জলপাইগুড়িতে। ছবি: সন্দীপ পাল

নিজস্ব সংবাদদাতা
জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ০৮:১৩
Share: Save:

ছেচল্লিশ বছর কেটেছে! বাগানে গাছেদের উচ্চতা বেড়েছে। বাড়িটার রং বদলেছে। তবুও এক বার দেখেই পুরোনো ‘বন্ধুদের’ চেনা যায়! রাজ্যপাল চিনলেন। নিরাপত্তা বলয় ভেঙে রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস এগিয়ে গিয়ে পুরোনো সহকর্মীর হাত ধরে ভাঙা বাংলায় বললেন, “কেমন আছেন?” বন্ধুরা আপ্লুত। সকলেই অবসর নিয়েছেন। তাঁদেরই এক জন বললেন, “১৯৭৭ সালে কয়েক মাস এক সঙ্গে কাজ করেছেন। এতদিনে আমরা ওঁকে (রাজ্যপাল) ভুলে গিয়েছিলাম। উনি মনে রেখেছেন!”

জলপাইগুড়িতে ক্লাব রোডে একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের শাখায় ১৯৭৭ সালে প্রথম কর্মজীবন শুরু করেছিলেন সি ভি আনন্দ বোস। রাজ্যপাল পদে আসীন হয়ে প্রথম বার জলপাইগুড়ি এসে শুক্রবার বেলায় ফিরে এলেন সেই ব্যাঙ্কের শাখায়। রাজ্যপাল নিজেই বললেন, “শিকড়ের টানে এসেছি। হয়ত কয়েক মাস ছিলাম। তবু আমার জীবনের একটি অংশ এখানে রাখা আছে।” ব্যাঙ্কের ঘরগুলিতে ঘুরেছেন রাজ্যপাল। গিয়ে বসেছেন পুরোনো বাড়িতে। তাঁকে ঘিরে ভিড়, ঠেলাঠেলিতে এতটুকু বিরক্ত হতে দেখা যায়নি। উল্টে, খাতায় সই দিয়েছেন। ব্যাঙ্কের নতুন কর্মীদের ডেকে নিয়ে কথাও বলেছেন।

গতকাল, বৃহস্পতিবার ব্যাঙ্কের এক পুরোনো সহকর্মীর সঙ্গে দেখা করতে শিলিগুড়ি থেকে জলপাইগুড়িতে গিয়েছিলেন রাজ্যপাল। সেই সহকর্মী অশোককুমার রায়চৌধুরীকে এ দিন ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ গাড়ি পাঠিয়ে নিয়ে এসেছিলেন।

ব্যাঙ্কে আসার আগে, অসম মোড়ে বিশেষ ভাবে সক্ষমদের একটি আশ্রমে গিয়েছিলেন রাজ্যপাল। সেখানে গিয়ে সংস্থার কাজকর্ম দেখেছেন। আবাসিকদের সঙ্গে কথা বলেছেন, তাঁদের কাজ দেখেছেন। সেখানে মেরিনা খাতুন নামে এক যুবতী আবাসিক রাজ্যপালের কাছে জানতে চান প্রশ্ন করেন, “শেক্সপিয়ারের কোনও লেখা পড়েছেন?” রাজ্যপাল তাঁকে জানান রোমিও জুলিয়েট নাটক পড়েছেন। মেরিনা জানান, তিনি কবিতা লেখেন। রাজ্যপাল তাঁর ব্যক্তিত্ব এবং ইচ্ছেশক্তির প্রশংসা করায় মেরিনা বলেন, “ধন্যবাদ, আমি কিন্তু আপনার সঙ্গে প্রতিযোগিতা করব না।” হাসিতে ফেটে পড়েন রাজ্যপাল। রাজ্যপালের হাতে উপহার তুলে দিয়েছেন আবাসিকেরা। কম্বল, হুইলচেয়ার ও বিশেষ ভাবে সক্ষমদের জন্য প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম তুলে দিয়েছেন রাজ্যপাল। উদ্যোক্তাদের কাজের প্রশংসা করতে গিয়ে রাজ্যপাল মাদার টেরেসার জীবন আদর্শের প্রসঙ্গ তুলে ধরেছেন।

রাজ্যপালের সঙ্গে আগাগোড়া ছিলেন জেলাশাসক মৌমিতা গোদারা বসু এবং জেলা পুলিশ সুপার বিশ্বজিত মাহাতো। জলপাইগুড়ি পুরসভার চেয়ারম্যান পাপিয়া পাল, ভাইস চেয়ারম্যান সৈকত চট্টোপাধ্যায়ও রাজ্যপালের সঙ্গে ব্যাঙ্কে গিয়ে দেখা করেছেন। জলপাইগুড়ি সার্কিট হাউজ়ে গিয়ে জেলা পুলিশের অভিবাদন গ্রহণ করেন রাজ্যপাল। ব্যাঙ্কের শাখা থেকে ফের তিনি শিলিগুড়ি ফিরে গিয়েছেন। ব্যাঙ্কে রাজ্যপালের সই নেবেন বলে ঠায় ঘণ্টা দুয়েক অপেক্ষা করে ছিলেন রাখি দাস। সই নেওয়ার পরে রাখি বলেন, “জলপাইগুড়িতে রাজ্যপাল এসেছেন শুনেই তাঁর সই সংগ্রহ করব বলে স্থির করেছিলাম।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

CV Ananda Bose Jalpaiguri
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE