Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

টোটো রোখার রং এ বার নীল সাদা

জলপাইগুড়ি শহরে টোটোর দাপট অনেক দিন থেকেই চলছে৷ অভিযোগ, শহরে এই মুহূর্তে প্রায় দশ হাজার টোটো চলছে৷ এমনিতেই জলপাইগুড়ি শহরের রাস্তা অন্য জেলা শহরের চেয়ে সরু বলে অভিযোগ৷

নিজস্ব সংবাদদাতা
জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ০৩ ডিসেম্বর ২০১৭ ০২:২৭
Share: Save:

এ বার টোটোও হচ্ছে নীল-সাদা৷ সৌজন্যে—জলপাইগুড়ি পুরসভা৷

রাশ টানতে ধাপে ধাপে শহর এলাকার তিন হাজার টোটোকে নীল-সাদা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন জলপাইগুড়ির পুর কর্তারা৷ ‘এক মালিক এক টোটো’—এই ফর্মুলাতে আপাতত এই তিন হাজার টোটো বাছাইয়ের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে৷ যার বাইরে শহরে আর কোনও টোটো চলতে পারবে না বলে পুরসভার তরফে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে৷ সব কিছু ঠিক থাকলে নতুন বছরের শুরুতেই জলপাইগুড়ি শহর দেখবে নীল-সাদা টোটো৷

জলপাইগুড়ি শহরে টোটোর দাপট অনেক দিন থেকেই চলছে৷ অভিযোগ, শহরে এই মুহূর্তে প্রায় দশ হাজার টোটো চলছে৷ এমনিতেই জলপাইগুড়ি শহরের রাস্তা অন্য জেলা শহরের চেয়ে সরু বলে অভিযোগ৷ তার উপরে টোটো চালকদের একটা অংশ যত্র-তত্র তাদের টোটো দাঁড় করিয়ে রাখায় শহরের বিভিন্ন রাস্তায় যানজটও লেগেই থাকে৷ এই পরিস্থিতিতে অনেক দিন থেকেই শহরের টোটো নিয়ন্ত্রণে দাবি তুলছে বিভিন্ন মহল৷ পুরসভা বা প্রশাসনের তরফেও জলপাইগুড়ি শহরের টোটো নিয়ন্ত্রণে নানা সময়ে নানা পদক্ষেপ করা হয়েছে৷ কিন্তু অভিযোগ, এত সব করেও নিয়ন্ত্রণে আনা যায়নি শহরের টোটো৷

এই পরিস্থিতিতে টোটো নিয়ন্ত্রণের নতুন পদক্ষেপ হিসেবে এ বার নীল-সাদা রংকে ব্যবহার করতে চাইছে জলপাইগুড়ি পুরসভা৷ পুরসভার চেয়ারম্যান মোহন বসু বলেন, ‘‘জলপাইগুড়ি শহরের বুকে তিন হাজারের বেশি টোটো চলতে দেওয়া হবে না৷ এক জন মালিকের একটি টোটোই শহরে চলতে পারবে৷ এবং সেই সব টোটো নীল-সাদা রং করতে হবে৷ টোটো চালক বা মালিক চাইলে বাইরে থেকেও টোটোর গায়ে নীল-সাদা রং লাগাতে পারেন৷ অথবা, পুরসভাতেও সেই ব্যবস্থা থাকবে৷’’

পুর কর্তারা জানিয়েছেন, নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, এই নিয়ম কার্যকর হয়ে গেলে শহরের বুকে বাইরের টোটো আর প্রবেশ করতে পারবে না৷ তবে রেল স্টেশনে যাওয়া-আসা সহ বিভিন্ন প্রয়োজনে শহর লাগোয়া পঞ্চায়েত এলাকায় যাতায়াতকারী মানুষের সুবিধার্থে বাইরের কিছু টোটোকে শহরে প্রবেশের ক্ষেত্রে ছাড় দেওয়ার কথা ভাবা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন তাঁরা৷ তবে সেই টোটোগুলির রঙও নীল-সাদা হবে কিনা সে ব্যাপারে এখনও সিদ্ধান্ত হয়নি৷

পুর কর্তারা জানান, নীল-সাদা রঙের পাশাপাশি তিন হাজার টোটোকে পুরসভার তরফে নম্বর প্লেটও দেওয়া হবে৷ পাশাপাশি টোটো চালকদের লাইসেন্সেরও ব্যবস্থা হবে৷ মোহনবাবু বলেন, ‘‘শহরে চলা টোটোর রঙ নীল-সাদা হলে ট্রাফিক পুলিশের পক্ষেও কোনটা শহরের টোটো আর কোনটা বাইরের টোটো তা বুঝতে সুবিধা হবে৷’’ কিন্তু প্রশ্ন উঠছে, বাইরের কোনও টোটো চালক যদি নীল-সাদা রঙের টোটো নিয়ে শহরে প্রবেশ করে? মোহনবাবুর জবাব, সে ক্ষেত্রেও নজরদারি থাকবে৷

তবে নিয়ন্ত্রণ করতে টোটোকে নীল-সাদা রং করা হবে কেন তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিরোধীরা৷ কংগ্রেস কাউন্সিলার পিনাকী সেনগুপ্ত বলেন, টোটোকে নীল-সাদা করে হয়তো কেউ কেউ রাজনৈতিক সন্তুষ্টি পাবেন৷ কিন্তু এতে করে মানুষের কোনও উপকার হবে না৷ এগুলি না করে রাস্তা চওড়া থেকে শুরু করে একমুখী ব্যবস্থা বা পার্কিং জোন চালু হলে মানুষের দুর্ভোগ কমত৷

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE