Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪
হরিণচওড়া

জিন্নাতুলের মৃত্যুর বিচার চায় পরিবার

এক দিন আগেই পুলিশ এসেছিল বাড়িতে। জিন্নাতুল হোসেনের (২২) সঙ্গেই তাঁদের কথা হয়। তার চব্বিশ ঘণ্টা কাটতে না কাটতেই জিন্নাতুলের দেহ উদ্ধারের ঘটনায় ক্ষোভে ফুঁসছেন গ্রামের বাসিন্দাদের একাংশ।

মৃত জিন্নাতুলের শোকার্ত পরিজনেরা। — হিমাংশুরঞ্জন দেব

মৃত জিন্নাতুলের শোকার্ত পরিজনেরা। — হিমাংশুরঞ্জন দেব

নিজস্ব সংবাদদাতা
কোচবিহার শেষ আপডেট: ২৪ অগস্ট ২০১৬ ০১:২৮
Share: Save:

এক দিন আগেই পুলিশ এসেছিল বাড়িতে। জিন্নাতুল হোসেনের (২২) সঙ্গেই তাঁদের কথা হয়। তার চব্বিশ ঘণ্টা কাটতে না কাটতেই জিন্নাতুলের দেহ উদ্ধারের ঘটনায় ক্ষোভে ফুঁসছেন গ্রামের বাসিন্দাদের একাংশ।

কোচবিহারের কোতোয়ালি থানার হরিণচওড়া গ্রামের ওই বাসিন্দাদের অভিযোগ, পুলিশের ব্যবহারেই ক্ষুব্ধ জিন্নাতুল আত্মহত্যার পথ বেছে নেয়। তাঁরা দাবি করছেন, পুলিশ ঠিক ব্যবহার করলে এমন ঘটনা ঘটত না। জিন্নাতুল অবশ্য তাঁর সুইসাইড নোটে পুলিশের বিরুদ্ধে তেমন ভাবে কোনও অভিযোগ করেননি। শুধু তাঁদের বিরুদ্ধে মিথ্যে মামলা চাপিয়ে দেওয়ার অভিযোগ করেছেন।

ওই গ্রামের বাসিন্দাদের কয়েক জন বলেন, “কী হয়েছে, তা আমরা জানি। মাঝেমধ্যেই পুলিশ আসত বাড়িতে। তা নিয়ে মুষড়ে পড়েছিল জিন্নাতুল। ওই দিন পুলিশ কঠিন মামলায় ফাঁসানোর হুমকি দেয়।” কোচবিহারের পুলিশ সুপার সুনীল যাদব বলেন, “সুইসাইড নোটে ওই যুবক মৃত্যুর জন্য কাউকে দায়ী করেননি। তাই অভিযোগ ঠিক নয়।”

পরিবারের সদস্যরা জানান, জিন্নাতুলের বাবা জিয়াউদ্দিন মিয়াঁ উচ্চ রক্তচাপের রোগী। তেমন ভাবে কোনও কাজ করতে পারেন না। চার ভাইবোনের মধ্যে জিন্নাতুল বড়। জেলাশাসকের দফতরে অস্থায়ী একটি কাজ করে কোনওরকমে সংসার চালাত সে। মঙ্গলবার সকালে বাড়ির সামনের একটি আমগাছ থেকে তাঁর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়। তাঁরা বরাবর তৃণমূল কংগ্রেসের সমর্থক। গুড়িয়াহাঁটি ২ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান আব্দুল কাদেরের ঘনিষ্ঠ বলেই পরিবারটি পরিচিত। নাটাবাড়ি বিধানসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত ওই এলাকা। উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ ওই এলাকার বিধায়ক। প্রধান আব্দুল কাদের তাঁর অনুগামী বলেই পরিচিত।

স্বনির্ভর গোষ্ঠীর টাকা নয়ছয়ের অভিযোগ নিয়ে মাস দেড়েক আগে ওই গ্রামেই দুই পক্ষের মধ্যে গণ্ডগোল হয়। এক বাড়িতে প্রধান সহ তাঁর অনুগামীদের বিরুদ্ধে হামলার অভিযোগ ওঠে। সেই মামলাতেই জিন্নাতুল ও তাঁর পরিবারের কয়েকজন সদস্য অভিযুক্ত ছিলেন। এরপর থেকেই পুলিশের একটি অংশ নানা ভাবে তাঁদের হয়রানি করছিল বলে অভিযোগ। ওই গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান বলেন, “পুলিশের একটি অংশের প্ররোচনাতেই জিন্নাতুল আত্মহত্যার পথ বেছে নেয়। এমনটা করা উচিত হয়নি। না হলে ওই যুবকের মৃত্যু হত না। এই ঘটনার তদন্ত চাই আমরা।”

জিন্নাতুলের মা জরিনাবিবি ছেলের শোকে বারবার জ্ঞান হারাচ্ছিলেন। তার মধ্যেই তাঁকে বলতে শোনা যায়, “কেন আমার ছেলের মৃত্যু হল? তার জবাব চাই আমি।” তাঁর আত্মীয় মিনু বেগম বিবি, নুরজানু বিবিরা বলেন, “এই ঘটনার বিচার চাই আমরা।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Jinnahtul Hosain Deadbody
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE