পুজোর ঠিক মুখে জলপাইগুড়ি শহরে আচমকাই সক্রিয় কেপমারি চক্র।
কোথাও রাস্তায় দশ টাকার নোট ছড়িয়ে দিয়ে তো, কোথাও আবার গায়ে নোংড়া ছিটিয়ে ব্যাগ ভর্তি টাকা নিয়ে চম্পট দেওয়ার পর পর চারটি ঘটনা ঘটল এখানে৷ সেই চক্রটিই এ বার জেলা পরিষদের গাড়িতে থাকা সরকারি প্রায় দেড় লক্ষ টাকার ব্যাগও নিয়ে চম্পট দেয়৷ সোমবার ভর দুপুরে মাত্র দেড় ঘন্টার মধ্যে পরপর এই কাণ্ডগুলি ঘটে৷
জলপাইগুড়ি শহরের এ দিন কেপমারির প্রথম ঘটনাটি ঘটেছে জেলা পরিষদ চত্বরে৷ পাণ্ডাপাড়ার বাসিন্দা কমল ঘোষ নামে এক ব্যবসায়ীর কাছ থেকে সাড়ে তিন হাজার টাকা কেপমারি করে দুষ্কৃতীরা৷ কমলবাবুর কথায়, “জেলা পরিষদের কাছে একটি টোটোতে উঠলে পিছন থেকে এক যুবক বলতে দেখি, জামায় নোংরা লেগে৷ জেলা পরিষদ চত্বরে একটি কলের সামনে যাই৷ পাশে আরেকটি ছেলে ছিল৷ ব্যাগটা পাশে রেখে গেঞ্জি খুলতে গিয়েই ব্যাগ উধাও৷ ছেলেটিও উধাও৷”
এর পরে দেড়টা নাগাদ সমাজপাড়া এলাকায় একটি ব্যাঙ্ক থেকে চল্লিশ হাজার টোকা তোলেন পেশায় বেসিক ট্রেনিং স্কুলের চতুর্থ শ্রেণীর কর্মী রঞ্জিৎ বিশ্বাস৷ চব্বিশ হাজার টাকা পকেটে রাখেন৷ ষোলো হাজার টাকা ব্যাগে ছিল৷ র়ঞ্জিৎবাবুর কথায়, “সাইকেলে ব্যাগটি রাখতেই এক যুবক বলল, টাকা পড়ে রয়েছে৷ দেখি অনেক দশ টাকার নোট৷ সেগুলি কুড়োতে না কুড়োতেই ব্যাগ উধাও৷”
এর ঠিক আধ ঘন্টা পর কদমতলার কাছে দেশবন্ধু বয়েজ হাই স্কুলের শিক্ষক রতন সরকার, ‘‘একটি ব্যাঙ্ক থেকে চল্লিশ হাজার টাকা তুলে ব্যাগটা হ্যান্ডেলে ঝুলিয়ে সাইকেলে উঠতে যেতেই এক যুবক বলে নীচে টাকা পড়ে আছে। রাস্তায় অনেকগুলি দশ টাকার নোট দেখতে পাই৷ সে গুলি তোলার সময়ই ব্যাগটি নিয়ে কেউ চম্পট দেয়৷”
দুপুর আড়াইটের একটু পরে জেলা পরিষদ থেকে ব্যাগভর্তি টাকা নিয়ে সমাজপাড়ার কাছে একটি ব্যাঙ্কে জমা দিতে যাচ্ছিলেন জেলা পরিষদেরই কর্মী উত্তম লামা৷ বাবুপাড়ার কাছে এক আত্মীয়র বাড়িতে টিফিন কৌটো নিতে ঢোকেন৷ উত্তমবাবুকে এক যুবক গাড়ির বাইরে টাকা পড়ে থাকার কথা বলে৷ তিনি বলেন, “গাড়ির থেকে নেমে টাকা তুলতে যেতেই উধাও হয়ে যায় ব্যাগ।” তাঁর কথায়, ব্যাগে প্রায় এক লক্ষ তেইশ হাজার টাকা নগদ ছিল।
পুলিশ সুপার বলেন, “কেপমারির একটি চক্রই এই ঘটনাগুলির পেছনে রয়েছে বলে মনে হচ্ছে৷ চক্রটি মনে হচ্ছে বাইরের৷ ইতিমধ্যেই কিছু সূত্র পেয়েছি ৷ সেভাবেই তদন্ত এগোচ্ছে ৷”