দুর্ঘটনার পরে ট্রেন থেকে উদ্ধার করা হচ্ছে যাত্রীকে। মঙ্গলবার।
টয় ট্রেন চলাচলে একের পর বিপর্যয়ের রোগ যে রক্ষণাবেক্ষণের অভাব তা মানছেন রেল কর্তারা। তবে সেই রোগের দাওয়াই কী, তা এখনও জানা নেই তাঁদের।
বুধবার উত্তর পূর্ব সীমান্ত রেলের ডিআরএম উমাশঙ্কর সিংহ যাদব জানিয়েছেন, ইউনেস্কো কর্তৃপক্ষকে দিয়ে টয় ট্রেনের পরিকাঠামো উন্নতিতে সুপারিশ চাওয়া হয়েছে। দু’বছর ধরে টয় ট্রেনের লাইন ধরে বিভিন্ন এলাকা এবং ট্রেনের রেক, ইঞ্জিন, কর্মী সব কিছুই খতিয়ে দেখবে ইউনেস্কোর প্রতিনিধি দল। তারপরেই নানা পদক্ষেপের সুপারিশ করা হবে।
এর জন্য ইউনেস্কো কর্তৃপক্ষকে ২ কোটি টাকাও দিতে হয়েছে রেলকে। গত মঙ্গলবারই কার্শিয়াং শহর লাগোয়া এলাকায় লাইনে টয় ট্রেনের চাকা আটকে যায়। সামনেই ছিল একটি রেল সেতু। রেলকর্মীদেরই দাবি, মারাত্মক দুর্ঘটনার হাত থেকে রক্ষা পেয়েছে ট্রেনটি। গত বছর শেষের দিকে মহানদী এলাকায় লাইনচ্যুত হয়ে যায় টয় ট্রেনের চাকা। গত বছরের জানুয়ারি মাসে চলন্ত টয় ট্রেনের ব্রেক অকেজো হয়ে দুর্ঘটনা হয়। তাতে মৃত্যু হয়েছিল এক পর্যটকের। এ ছাড়াও কখনও রেক খারাপ, কখনও ইঞ্জিন বিকল হওয়ায় বারবার বাতিল হয়েছে টয় ট্রেন চলাচল। টয় ট্রেন চলাচলের এমন ভোগান্তির কবে পরিবর্তন হবে, তা জানাতে পারেননি রেল কর্তারাও।
কাটিহার বিভাগের ডিআরএম উমাশঙ্করবাবু বলেন, ‘‘বেশ কিছু অভিযোগ আমাদের কাছেও আসে। কেন এমন অভিযোগ উঠছে, তা খতিয়ে দেখার কমিটি রয়েছে। রক্ষণাবেক্ষণেও নজরদারি হয়। সেই সঙ্গে ইউনেস্কোর প্রতিনিধিরাও সমীক্ষা চালাচ্ছেন। সেই রিপোর্ট পেলে পদক্ষেপ হবে।’’ গত মঙ্গলবারের ঘটনা নিয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করেছে রেল। কেন দুর্ঘটনা হল, কী গাফিলতি ছিল সব জানতেই তদন্ত শুরু হয়েছে বলে ডিআরএমের দাবি। দার্জিলিঙে সমীক্ষা করতে আসা ইউনেস্কোর বিশেষজ্ঞদের পরামর্শও নেওয়া হচ্ছে বলে জানানো হয়েছে।
বর্তমানে টয় ট্রেন চলাচলও অনিয়মিত হয়ে পড়েছে। প্রতিদিনের বদলে সপ্তাহে তিন দিন দার্জিলিং থেকে শিলিগুড়ি টয়ট্রেন চলাচল করে। ইঞ্জিনের সমস্যার কারণেই ট্রেন চলাচল অনিয়মিত হয়ে পড়েছে বলে অভিযোগ। দার্জিলিং হিমালয়ান রেলওয়ে (ডিএইচআর) দার্জিলিং টয় ট্রেন চলাচল নিয়ন্ত্রণ করে। ডিএইচআরের তরফে জানানো হয়েছে, দার্জিলিং-শিলিগুড়ি চলাচলের জন্য চারটি ডিজেল ইঞ্জিন রয়েছে। তার মধ্যে দু’টি ইঞ্জিন বিকল থাকার কারণেই ট্রেন চলাচল অনিয়মিত হয়ে পড়েছে। কবে সেই দুই ইঞ্জিন মেরামত করা সম্ভব হবে তাও এ দিন জানাতে পারেননি রেল আধিকারিকরা।
মাঝে মধ্যে টয়ট্রেন অস্বাভাবিক দেরিতে চলাচল করলে অথবা ইঞ্জিন বিকল হয়ে সন্ধ্যার পরে পাহাড়ি নির্জন রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকলেও উদ্ধারকারী দল পৌঁছয় না বলে অভিযোগ। নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে রেকগুলিও জরাজীর্ণ হয়ে পড়েছে। ডিআরএম বলেন, ‘‘রক্ষণাবেক্ষণের কী খামতি রয়েছে তা ইউনেস্কোর রিপোর্ট পেলেই জানা যাবে। সেই মতো পদক্ষেপও হবে।’’ নিজস্ব চিত্র।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy