Advertisement
E-Paper

বৃষ্টি না থাকায় চায়ের গুণমান নিয়ে সংশয়

স্বাদ এবং সুগন্ধ, দুইয়ের জোরে বসন্তের সময় দার্জিলিঙের চা বাগান থেকে তোলা পাতা অন্য মরসুমকে টেক্কা দেয়। শীতের তিন মাসের ‘শুখা’ মরশুমের পরে, বসন্তের গোড়ায় প্রথম বৃষ্টির পরে বাগান থেকে তোলা পাতা থেকে তৈরি চা-কে ‘ফার্স্ট ফ্লাশ’ বলে হয়। বিদেশের বাজারে দার্জিলিঙের চা বাগানগুলির ফার্স্ট ফ্লাশের পাতার চাহিদা এতটাই, যে স্থানীয় বাজারেই তা মেলা দুর্লভ হয়ে যায়।

রেজা প্রধান

শেষ আপডেট: ২৬ মার্চ ২০১৫ ০৪:৩৯

স্বাদ এবং সুগন্ধ, দুইয়ের জোরে বসন্তের সময় দার্জিলিঙের চা বাগান থেকে তোলা পাতা অন্য মরসুমকে টেক্কা দেয়। শীতের তিন মাসের ‘শুখা’ মরশুমের পরে, বসন্তের গোড়ায় প্রথম বৃষ্টির পরে বাগান থেকে তোলা পাতা থেকে তৈরি চা-কে ‘ফার্স্ট ফ্লাশ’ বলে হয়। বিদেশের বাজারে দার্জিলিঙের চা বাগানগুলির ফার্স্ট ফ্লাশের পাতার চাহিদা এতটাই, যে স্থানীয় বাজারেই তা মেলা দুর্লভ হয়ে যায়। কিন্তু, এ বছর তেমন বৃষ্টি নেই। ফলে, মরশুমে ফার্স্ট ফ্লাশের চা পাতার গুণমান নিয়েই সংশয় তৈরি করেছে। এমনকী ফেব্রুয়ারি শেষ হয়ে মার্চ মাসের শেষ সপ্তাহ চলতে থাকলেও, দার্জিলিঙের সিংহভাগ চা বাগানে এখনও পাতা তোলাই শুরু হয়নি বলে জানা গিয়েছে।

দার্জিলিঙের চা মালিকদের সংগঠন দার্জিলিং টি অ্যাসোসিয়েশনের প্রধান উপদেষ্টা সন্দীপ মুখোপাধ্যায় বলেন, “এখনও আশায় রয়েছি। এই সপ্তাহ থেকেই যদি, বৃষ্টি শুরু হয় তবেও সুফল মিলবে। গড় হিসেবে দেখা গিয়েছে ফার্স্ট ফ্লাশের আগে যে পরিমাণ বৃষ্টি হওয়ার কথা, তার থেকে অন্তত তিনগুণ কম বৃষ্টি হয়েছে। যার সরাসরি প্রভাব পড়েছে চা পাতায়।”

চা বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, ফার্স্ট ফ্লাশের জন্য অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত গড়ে তিন ইঞ্চি বৃষ্টিপাত প্রয়োজন। চলতি মরসুমে বৃষ্টি হয়েছে মাত্র ১ ইঞ্চির কাছাকাছি। শীতের সময়ে বৃষ্টি চা গাছকে সতেজ রাখে। ফেব্রুয়ারি মাসের শুরু থেকেই সেই পাতা তোলা শুরু হয়ে যায়। যদিও, এ বছর বৃষ্টির অভাব এক ধাক্কায় পিছিয়ে দিয়েছে ফার্স্ট ফ্লাশের পাতা তোলার সময়। আগামী মাসের মধ্যে বৃষ্টি না হলে, ফার্স্ট ফ্লাশে যে পাতা তোলা হবে, তা অনেকটাই নিস্তেজ হবে। ফারাক হবে সুগন্ধিতেও। দার্জিলিঙে ৮৭টি চা বাগান রয়েছে। যার মধ্যে অর্ধেকের বেশি বাগানেই বৃষ্টির আশায় পাতা তোলা শুরু হয়নি। ইতিমধ্যে যে বাগানগুলিতে পাতা তোলার কাজ শুরু হয়েছে, তার দামও একলাফে অনেকটাই কমে গিয়েছে। চা মালিকদের সংগঠনের দাবি, গত বছর থেকে এ বারে কেজিতে অন্তত ১০০ টাকা করে দাম কম পাওয়া গিয়েছে। আগামী মাসের মধ্যে বৃষ্টি না হলে, এই দাম আরও কমবে বলে আশঙ্কা করছেন চা বাগান মালিকেরা।

দার্জিলিঙের মোট চা উত্‌পাদনের অন্তত ২০ শতাংশ ফাস্ট ফ্লাশের মরশুম থেকে আসে। জার্মানি, অস্ট্রিয়া, সুইত্‌জারল্যান্ড, ইতালি, ফ্রান্স, জাপান, ইংল্যান্ড এবং আমেরিকাতে দার্জিলিঙের ফার্স্ট ফ্লাশের চা পাতার চাহিদা সর্বাধিক বলে জানা গিয়েছে। ওই দেশগুলির চা উত্‌পাদকরা সরাসরি বিভিন্ন চা বাগান থেকে পাতা কিনে নিয়ে যায়। বছরে তিন মরশুমে চা পাতা তোলা হয়। ফার্স্ট ফ্লাশ ছাড়াও বর্ষা এবং শরতের সময়ে তোলা পাতারও আর্ন্তজাতিক বাজারে যথেষ্ট চাহিদা রয়েছে। তবে সন্দীপবাবু জানিয়েছেন, ফার্স্ট ফ্লাশের চা পাতার চাহিদাই সর্বাধিক।

বর্তমান পরিস্থিতিতে আপাতত বৃষ্টির অপেক্ষাতেই দিন কাটছে চা বাগান মালিকদের। বৃষ্টি না হলে পাতার গুনমান বজা।য় রাখার সঙ্গেই তৈরি হয়েছে রোগ পোকার আক্রমণের আশঙ্কা। বৃষ্টি না হলে রেড স্পাইডার-সহ অন্য নানা রোগের প্রকোপ পড়বে বলে উদ্বেগ ছড়িয়েছে। যদিও, বিশেষজ্ঞদের দাবি, চলতি সপ্তাহে অথবা আগামী সপ্তাহে বৃষ্টি হলে এপ্রিলের মাঝামাঝি থেকে পাতা তোলা শুরু হবে। তবে বৃষ্টি হোক বা না হোক, আগামী এপ্রিল মাসের শেষের থেকে পাতা তুলতেই হবে। যদিও, সে পাতার স্বাদ এবং সুগন্ধ কোনটাই বজায় থাকবে না বলে বিশেষজ্ঞরা জানিয়ে দিয়েছেন।

tea darjeeling rain India Japan America Germany France england winter
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy