Advertisement
১১ জুন ২০২৪
ক্যাম্পাস কণ্টক

রাতে একা ভয় করে, বললেন ছাত্রী

উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে আসেন নানা জায়গার তরুণ-তরুণীরা। কিন্তু নিরাপত্তা নিয়ে অসন্তোষ বাড়ছে। ক্যাম্পাসের অন্দরমহলে কী কী কাঁটা রয়েছে, তার খোঁজ আনন্দবাজারে। উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে আসেন নানা জায়গার তরুণ-তরুণীরা। কিন্তু নিরাপত্তা নিয়ে অসন্তোষ বাড়ছে। ক্যাম্পাসের অন্দরমহলে কী কী কাঁটা রয়েছে, তার খোঁজ আনন্দবাজারে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের দেওয়াল ভাঙা। অবাধে যাতায়াত চলে বহিরাগতদের। নিজস্ব চিত্র

বিশ্ববিদ্যালয়ের দেওয়াল ভাঙা। অবাধে যাতায়াত চলে বহিরাগতদের। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ০১:৩১
Share: Save:

বিশ্ববিদ্যালয়ের পিছনের দিকের পাঁচিলের কিছুটা ভাঙা। সেখান দিয়েই রোজ যাতায়াত করেন লাগোয়া এলাকার বাসিন্দারা। বহিরাগতদের এমন অবাধ যাতায়াতের কথা সবার জানা থাকলেও, তা বন্ধ করতে উদ্যোগী হননি কর্তৃপক্ষ। বারবার বলা সত্ত্বেও বসানো হয়নি ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরাও। আইন বিভাগের এক ছাত্রীর অস্বাভাবিক মৃত্যুর পরে উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক ছাত্রছাত্রী ফের এই প্রশ্নগুলি তুলেছেন। তাঁদের বক্তব্য, এই বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে নানা জায়গার তরুণ তরুণীরা থাকেন। তাঁদের নিরাপত্তার দায়িত্ব বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষেরই। তারপরেও কী করে চত্বরের নিরাপত্তা নিয়ে এমন উদাসীনতা রয়ে গিয়েছে, তাতে তাঁরা চিন্তিত। উদ্বিগ্ন তাঁদের অভিভাবকেরাও।

সরোজিনী, নিবেদিতা হস্টেলের ছাত্রী স্পন্দিতা মাহাতো, শ্রাবণী দত্ত, শিখা সরকার, পপি রায়রা জানান, ক্যাম্পাসের নিরাপত্তার দিকটি এখনও অবহেলিত রয়েছে। কিছু ঘটলে নিরাপত্তা কর্মীরা কয়েক দিন ঘোরেন। তার পর আবার যে কে সেই। কারও দেখা মেলে না। এত বড় ক্যাম্পাসে চলাফেরা করতে সে কারণে ভয়ও লাগে। সন্ধ্যার পর অনেক রাস্তা দিয়ে সে কারণে যাতায়াত করা যায় না। নিবেদিতা হস্টেলের ছাত্রীদের অনেকে জানান, ক্যাম্পাস লাগোয়া মেসে ছাত্রীর ঘটনার পর শনিবার রাতে নিরাপত্তা নিয়ে হস্টেলের মেয়েরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক সপ্তর্ষি বিশ্বাস বলেন, ‘‘ক্যাম্পাসের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতেই হবে সেটা আমরাও চাই।’’ কর্মী সংগঠনগুলিও তা নিয়ে একই মত প্রকাশ করেছেন। তবে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, ‘‘নিরাপত্তার জন্য বন্দোবস্ত আরও জোরদার করা হচ্ছে।’’

নিরাপত্তার প্রশ্নে ওই মেসে থাকা ছাত্রীরা রবিবার অনেকেই অন্যত্র যাওয়ার ব্যবস্থা করেন। মেসে ১৮ জন ছাত্রী থাকতেন। ইতিমধ্যেই অর্ধেকের মতো আবাসিক জিনিসপত্র নিয়ে মেস ছেড়ে চলে গিয়েছেন। তাদের কেউ ল’বিভাগের হস্টেলে যাচ্ছেন। অনেকে অন্য মেসে চলে যাচ্ছেন। বাকি যাঁরা রয়েছেন তাঁরাও আপাতত থাকছেন না। মেস মালিক লোক দিয়ে তাঁদের বোঝাতে চাইলেও কেউ আর সেখানে থাকতে ভরসা পাচ্ছেন না। ওই ঘটনায় ভয়ও রয়েছে অনেকের মধ্যে। তা ছাড়া ছাত্রীটিকে যে ছেলেটি উত্ত্যক্ত করত বলে অভিযোগ, সে মেসেও এসে বিরক্ত করতে চেষ্টা করত বলে কাছেই থাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়াচ অ্যান্ড ওয়ার্ডের কর্মীদের সন্দেহ।

তবে মেস মালিক ধ্রুব দাস বলেন, ‘‘একটা অনভিপ্রেত ঘটনা ঘটেছে। তবে আমরা চাই ছাত্রীরা থাকুক। নিরাপত্তার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কিন্তু অনেকেই থাকছে চাইছেন না। ঘটনার পরই অনেকে চলে যান।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Student University
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE