এমনই ঘিঞ্জি বালুরঘাটের তহ বাজার। ছবি: অমিত মোহান্ত।
অফিস ও স্কুলের সময়ে শহরের প্রাণকেন্দ্র সাধনা মোড় থেকে শুরু করে থানামোড় পর্যন্ত যানজটে নাকাল হতে হচ্ছে। রাস্তায় ফুটপাত বলে কিছু নেই। যতটুকু ছিল সেগুলিতে ফুলের দোকান, ফলের দোকান আরও হরেকরকমের জিনিসপত্রের দোকান সাজিয়ে ব্যবসা চলেছে। শহরের তৃপ্তি কেবিনের সামনে প্রতিদিন বড় বড় লরি দাঁড় করিয়ে মালপত্র ওঠানামা হচ্ছে। সবাই দেখছে। কিন্তু প্রতিবাদ করার লোক নেই। পুর ও প্রশাসনেরও কোনও হেলদোল আমরা দেখিনা। শহরের বড় বাজারের অবস্থা আরও সঙ্গীন। রাস্তায় পা ফেলতেও হয় খুব সাবধানে। কারণ রাস্তায় দুধারে দোকানদারেরা তাদের জিনিসপত্র দোকানের বাইরে সাজিয়ে রাখেন। আপত্তি জানানোরও কেউ নেই। মাঝেমধ্যে পুরসভা থেকে অভিযান চালানো হলে এক-দুদিন পুরো রাস্তাটা চোখে পড়ে। অভিযান বন্ধ হতেই আবার আগের অবস্থায় ফিরে আসে। এছাড়াও এখন বালুরঘাট শহরের টোটো ও মোটরবাইকের অত্যাচারে অতিষ্ঠ শহরবাসী। রাস্তায় নামলেই বেপরোয়া মোটর বাইকের ভয়ে তটস্থ থাকতে হয়। বিগত দিনে মোটরবাইকের ধাক্কায় অনেককে গুরুতর জখম হয়ে হাসপাতালে শয্যা নিতে হয়েছে। অতিসত্ত্বর প্রশাসনের উচিত ফুটপাত থেকে সমস্ত দোকান তুলে দেওয়া। অন্যথায় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। সমস্ত রাজনৈতিক দল এক হয়ে এ ব্যাপারে প্রশাসনকে সাহায্য করা উচিত। তবেই শহরের ওই সমস্যার সমাধান হতে পারে।
উদয়শঙ্কর দাস, শিক্ষাকর্মী, কংগ্রেসপাড়া, বালুরঘাট।
ইদানিং বালুরঘাট শহরকে ভালবাসার লোকের বড় অভাব নজরে আসছে। শহরকে পরিচ্ছন্ন রেখে ট্রাফিক নিয়ম মেনে চললে ও অবৈধ পার্কিং ও রাস্তা দখলের প্রবণতা ছাড়লে আমরাও ভাল থাকবো। শুধু প্রশাসন এবং পার্টি সব করে দেবে, মজ্জাগত এই মানসিকতাকে দ্রুত সরাতে হবে। পুরসভার তরফে ব্যবসায়ী সমিতি থেকে নাগরিকবৃন্দকে নিয়ে অবিলম্বে এ বিষয়ে বসা উচিত। আর অপরিণত কিশোর ছেলেমেয়েদের মোটরবাইক কিনে দেওয়ার আগে একাংশ অভিভাবককেও একবার বিবেচনা করে দেখতে হবে। বালুরঘাট শহরে হাতের কাছে সমস্ত সরকারি অফিস, আদালত, স্কুল, কলেজ, বাজার ও বিনোদন কেন্দ্র থাকা সত্ত্বেও যন্ত্রযানের আবদার না হয় পরিণত বয়স অবধি ঠেকিয়ে রাখার চেষ্টা হোক। তাতে অন্তত দুর্ঘটনায় অকাল মৃত্যুর রোধের পাশাপাশি শহরের পথঘাটের ভার লাঘব করে বাড়তি অক্সিজেন যোগানের ব্যবস্থা হবে।
সুমি চট্টোপাধ্যায়, নাট্যকর্মী, দিপালীনগর, বালুরঘাট।
১৯৫০ সাল থেকে আমার শহর বালুরঘাটকে দেখছি। তখন লোকসংখ্যা ছিল আনুমানিক ৮ থেকে ১০ হাজার। বর্তমানে তা দেড় লক্ষ ছাড়িয়েছে। আগের চেয়ে শহরে অনেক উন্নতি হয়েছে ঠিকই, কিন্তু যানজট বালুরঘাট শহরের বিরাট সমস্যাও। তহবাজার ৫০ বছর আগের আগের অবস্থায় রয়ে গিয়েছে। শহরে ব্রিটিশ আমলের গ্যারিটি ব্রিজ ভেঙে নতুন করে দুই লেনের সেতু হবে। কিছু দোকান সরাতে হবে। শহরের প্রধান রাস্তা কমবেশি চওড়া আছে। তবে আত্রেয়ী খাঁড়ির উপর ওই দুটি পুরনো সেতু থেকে ভৌমিক জুয়েলারি পর্যন্ত যতটা চওড়া, তারপর থেকে মারফি মোড় চওড়া অনেক কম। রবীন্দ্রনগর মোড় থেকে ফিউচার টাউন ক্লাব পর্যন্ত রাস্তা ৪০ ফুট যদি হয়, তারপর থেকে ডানলপমোড় পর্যন্ত রাস্তা ২৫ ফুট চওড়া হবে। দেশভাগের পর থেকে শহরে লোকসংখ্যা যত বেড়েছে, দোকান ব্যবসাও বেড়েছে। ফলে যেটুকু ফুটপাত ছিল সেটাও জবরদখলে চলে গিয়েছে। গোটা বালুরঘাট জুড়েই এক অবস্থা। শহরের প্রাণকেন্দ্রের ত্রিভুজ আকৃতির ব-দ্বীপের ন্যায় দোকান সরিয়ে তাদের বিকল্প ব্যবস্থা করে দিলে, শহরের চিত্র পাল্টে যাবে। শহরের মধ্যে আত্রেয়ী খাঁড়ির পাশে পার্কিংয়ের জায়গা তৈরি করতে হবে। গাড়ি, মোটরবাইক ও সাইকেল নিয়ে বাজার করতে আসা বাসিন্দাদের কাছ থেকে অল্প ভাড়ায় পার্কিং ফি বাবদ নিলে পুরসভারও আয়ের উৎস তৈরি হবে। মালদহ শহরের রূপকার প্রয়াত গনিখান চৌধুরীকে এখনও স্মরণ করে মালদহের লোক। বালুরঘাট শহর উন্নয়নে স্থানীয় বিধায়ক তথা মন্ত্রী শঙ্কর চক্রবর্তী একগুচ্ছ প্রকল্প নিয়েছেন। আমার আশা, যানজটের ব্যাপারেও মন্ত্রী গুরুত্ব দিয়ে ব্যবস্থা করবেন।
সুশীল কর্মকার, ব্যবসায়ী, বিবেকানন্দপল্লী, বালুরঘাট।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy