Advertisement
E-Paper

ভয়ে গাড়ি ভরলই না

গত মঙ্গলবার রাতে সিকিমগামী একটি পিক আপ ভ্যান থেকে আনাজ নামিয়ে দেন স্থানীয় গাড়িচালকরা। জানানো হয়, ধূপগুড়ি বাজার থেকে পাহাড়ে কোনও আনাজ নিয়ে যেতে দেওয়া হবে না।

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ২৯ জুন ২০১৭ ১৪:১০
আক্রান্ত: জাবরাভিটায় ভাঙচুর হওয়া সিকিমের নম্বরের ট্রাক। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক।

আক্রান্ত: জাবরাভিটায় ভাঙচুর হওয়া সিকিমের নম্বরের ট্রাক। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক।

পট্টেবং লেখা স্টিকার লাগানো একটি জিপ দেখে প্রথম দু’দিন কৌতূহল ছড়িয়েছিল চামুর্চি বাজারে। দার্জিলিঙের প্রত্যন্ত এলাকায় অবস্থিত পট্টেবং এলাকার ভাড়া রুটের গাড়ি প্রতিদিন কেন ডুয়ার্সে আসছে? গত শুক্র এবং শনিবার দু’দিন ভোরে জিপটি বাজারে এসে আনাজ-ডিম-মুরগি বোঝাই করে নিয়ে গিয়েছিল বলে বাসিন্দাদের দাবি। গত সোমবার ওই গাড়ির চালককে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন কয়েক জন ব্যবসায়ী। জেরার মুখে চালক কবুল করে, গাড়িটি দার্জিলিঙের হলেও সে পণ্য বোঝাই করে গ্যাংটক, কালিম্পঙে নিয়ে যায়। উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ায় পুলিশ পৌঁছে চালককে উদ্ধার করে ফেরত পাঠায়। গত মঙ্গলবার ওই চালককে অন্য একটি গাড়ি নিয়ে ফের চামুর্চি বাজারে দেখা গিয়েছিল বলে দাবি।

এ ভাবেই চোরাপথে সিকিম নম্বরের গাড়িতে ডুয়ার্স থেকে আনাজ-ডিম-মাংস পৌঁছচ্ছিল পাহাড়ে। এ বার তাতে বাধ সেধেছেন ব্যবসায়ী এবং ডুয়ার্সের ভাড়া গাড়ি চালকদের একাংশ। তাঁদের দাবি, পাহাড়ে গাড়ি নিয়ে উঠতে গেলে যেখানে ডুয়ার্সের চালকদের বাধা দেওয়া হচ্ছে, এর প্রতিবাদে পাহাড়ের গাড়িও ডুয়ার্সে চলতে দেওয়া হবে না।

গত মঙ্গলবার রাতে সিকিমগামী একটি পিক আপ ভ্যান থেকে আনাজ নামিয়ে দেন স্থানীয় গাড়িচালকরা। জানানো হয়, ধূপগুড়ি বাজার থেকে পাহাড়ে কোনও আনাজ নিয়ে যেতে দেওয়া হবে না। বুধবারেও ধূপগুড়ি বাজারে সিকিম থেকে ট্রাক এসেছিল। তবে গোলমালের আশঙ্কায় বিকেল পর্যন্ত ট্রাকে কোনও পণ্য তোলা হয়নি। এ দিন সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত ধূপগুড়ি সুপার মার্কেট, স্টেশন বাজারের কাছাকাছি একাধিক সিকিম নম্বরের গাড়ি দেখা গিয়েছে। যদিও তাতে কোনও আনাজ তোলা হতে দেখা যায়নি। কয়েকটি গাড়ির চালকেরও খোঁজ মেলেনি। সিকিমের গাড়ি ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে নাগরাকাট থেকেও।

মঙ্গলবার রাতে ধূপগুড়িতে গোলমালের পরে এ দিন সিকিম নম্বরের একটি ছোট ট্রাক নাগরাকাটার শুল্কাপাড়া এলাকায় দেখা যায়। সেই গাড়ি ঘিরে উত্তজনা তৈরি হয়। চালক দাবি করেন, আনাজ নিতে নয় গাড়ির কিছু যন্ত্রাংশ কিনতেই মালবাজারে এসেছেন। ট্রাকে যাতে আনাজের কোনও বস্তা না ওঠে তা দেখতে স্থানীয় গাড়ি চালকদের কয়েক জন ‘পাহারা’ দিয়ে ট্রাকটিকে নাগরাকাটার বাইরে পাঠিয়ে দেন।

বুধবারে সিকিম নম্বরের একটি পিকআপ ভ্যান মাছ নিতে এসেছিল ধূপগুড়ি বাজার থেকে। যদিও, বিক্ষোভের ভয়ে মাছের বাক্স ট্রাকে তোলা হয়নি। সিকিমের ওই গাড়ির চালক রাজকিশোর শা অভিযোগ করেন, “বাজারে এসে শুনছি সিকিমে নম্বরের গাড়িতে আনাজপাতি তুললে রাস্তায় গাড়ি ভাঙচুর করা হচ্ছে। আমার গাড়িতে মাছ নিয়ে যাওয়ার কথা ছিল। এলাকার কয়েক জন চালক ও কয়েক জন বাসিন্দা হুমকি দিল। তাই ভয়ে খালি গাড়ি নিয়েই ফিরতে হচ্ছে।’’

স্থানীয় চালকদের অভিযোগ, ডুয়ার্সের বা সমতলের গাড়ির নম্বর দেখলেই সিকিমের রাস্তায় ভাঙচুর করা হচ্ছে। তাঁদের প্রশ্ন, ‘‘আমরা ব্যবসা করতে পারব না, আর পাহাড়ের গাড়ি একচেটিয়া লাভ গুনবে— এমন চলতে পারে?’’ অন্যান্য দিনের মতো এ দিনও ধূপগুড়ি বাজার থেকে ট্রাক বোঝাই আনাজপত্র শিলিগুড়ি-সহ সমতলের বিভিন্ন বাজারে গিয়েছে।

Truck Export Business Dhupguri সিকিম ধূপগুড়ি
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy