Advertisement
১৭ মে ২০২৪
Budget 2020

ব্রাত্য কেন, বাজেটে প্রশ্ন উত্তরে

সাম্প্রতিক সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, ছোট ছোট চা বাগানগুলিই এখন উৎপাদনে বড়গুলিকে পিছনে ফেলছে।

কৌশিক চৌধুরী
জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ০১ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০৪:৩৩
Share: Save:

কৃষি থেকে ক্ষুদ্র শিল্প বা তথ্যপ্রযুক্তি থেকে পর্যটন— উত্তর পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলির তুলনা আজকাল প্রায়ই শোনা যায় উত্তরবঙ্গের বণিক সভাগুলিতে। আর শোনা যায় আক্ষেপ— কেন্দ্র কোনও আমলেই উত্তরবঙ্গের কথা উত্তর পূর্বাঞ্চলের মতো করে ভাবে না। এক পাশে ভুটান, নেপাল, আর এক দিকে বাংলাদেশ। সিকিমকে ছাড়িয়ে চিন। এশিয়ান হাইওয়ে দিয়ে জুড়েছে প্রতিটি দেশ। বাড়ছে সীমান্ত বর্হিবাণিজ্য এবং বাণিজ্যের সম্ভাবনা। অথচ সিকিম যে সুবিধা পাচ্ছে, উত্তরবঙ্গ তা পাচ্ছে না— আক্ষেপ বণিকসভাগুলির। তাই কেন্দ্রের নেতা-মন্ত্রীরা এসে যতই গুরুত্বের কথা বলে যান ভোটের আগে, ভোট শেষ হলে হাতে শুধুই পেনসিল!

সিআইআই, আইসিসির মতো বণিকসভার উত্তরের প্রতিনিধিরা জানান, প্রতি বছর কেন্দ্রীয় বাজেটে ‘সেভেন সিস্টার’ বা উত্তর পূর্বাঞ্চলের জন্য আলাদা প্যাকেজ রাখে কেন্দ্র। অসম থেতে উত্তরবঙ্গ পার হয়ে সিকিমের মতো ছোট রাজ্যও ওই তালিকায় ঢুকে গিয়েছে। সিকিমে এই সুবিধা নিয়ে গত কয়েক বছরে দেশের অধিকাংশ ওষুধ প্রস্তুতকারক কোম্পানিগুলি কারখানা খুলে ফেলেছে। তাতে স্থানীয় কর্মসংস্থান বেড়েছে। সরাসরি লাভবান হচ্ছে শতাধিক ছোট-মাঝারি শিল্প, কারখানা।

ইন্ডিয়ান চেম্বার অব কর্মাসের (আইসিসি) উত্তরবঙ্গের চেয়ারম্যান নিশান্ত মিত্তল জানান, উত্তরবঙ্গের ভৌগোলিক অবস্থান বহির্বাণিজ্যের জন্য সুবিধাজনক। তাই বিভিন্ন শিল্প সংক্রান্ত হাব, জ়োন এখানে করা সম্ভব। কিন্তু এগিয়ে আসতে হবে কেন্দ্রকে। তিনি বলেন, ‘‘উত্তর-পূর্বাঞ্চলের মতো প্যাকেজ এখানে অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। এ বারও আমরা সেই দাবি জানিয়েছি।’’

শিলিগুড়ি, কোচবিহার, জলপাইগুড়ির কয়েক জন ব্যবসায়ী জানাচ্ছেন, নোটবন্দি বা জিএসটি-র ধাক্কায় উত্তরবঙ্গ এখনও খুড়িয়ে হাঁটছে। প্রতি ক্ষেত্রে ৩০-৩৫ শতাংশ ব্যবসা কমেছে। কেন্দ্রের ক্ষমতাসীন দল গত লোকসভা ভোটে উত্তরে রেকর্ড করেছে। ৮ জন সাংসদের মধ্যে ৭ জনই তাঁদের। কেন্দ্রীয় মন্ত্রীও আছেন। সেই দিক থেকে দেখলে, ওই সাত সাংসদের এলাকা নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকার আদৌ কিছু ভাবল কি না, তা ২৪ ঘণ্টার মধ্যে পরিষ্কার হয়ে যাবে। হাতে নগদ জোগান বাড়ানো না গেলে অর্থনৈতিক উন্নয়ন যে সম্ভব নয়, তা-ও বলছেন ব্যবসায়ীরা।

যদিও কেন্দ্রীয় বাজেট নিয়ে খুব একটা আশাবাদী নন নর্থবেঙ্গল ইন্ডাস্ট্রিজ় অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক সুরজিৎ পাল। তিনি জানান, এই সরকার যা যা করেছে, কোওটিতেই ছোট বা ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের লাভ হয়নি। উল্টে, তাঁরা বিপদে পড়ছেন। শিল্পপতিদের একাংশ শুধু সুবিধা পাচ্ছেন। উত্তরবঙ্গের জন্য প্যাকেজ ছাড়াও কৃষিতে ১০ লক্ষ টাকা লাভের উপর কর, উৎপাদন বাড়াতে প্রযুক্তিতে ভর্তুকি, ফার্ম এবং ফুড প্রসেসিং যন্ত্রপাতিতে শূন্য জিএসটি, পর্যটন প্রকল্প, ধানের ক্ষেত্রে এলাকাভিত্তিক সহায়ক মূল্যের মতো বিষয়গুলি দরকার। তিনি বলেন, ‘‘আমরা সবই জানিয়েছি। কেন্দ্র কী ভাবছে, তা বাজেটে পরিষ্কার হয়ে যাবে কালই।’’ (শেষ)

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Budget 2020
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE