দুর্যোগ: ঝোড়ো হাওয়া। সঙ্গে বৃষ্টি। বুধবার সকালে এমন জোড়া আক্রমণেই বিপর্যস্ত হল জলপাইগুড়ি, কোচবিহার, আলিপুরদুয়ারের বিস্তীর্ণ এলাকা। ছবিতে আলিপুরদুয়ারে বৃষ্টি। ভিডিওতে দেখা যাবে ময়নাগুড়ির দৃশ্য। ছবি: নারায়ণ দে
কথায় আছে রাখে হরি, মারে কে। সেই প্রবাদই যেন বাস্তবে প্রত্যক্ষ করলেন ময়নাগুড়ির জগদীশচন্দ্র বসাক।
বুধবার সকালের প্রবল ঝড়বৃষ্টিতে জগদীশবাবুর ঘরের উপরে পড়ে গিয়েছিল আস্ত গাছ। চাপাও পড়ে গিয়েছিলেন তিনি। তবে প্রতিবেশীরা কোনও রকমে তাঁকে রক্ষা করায় মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে এসেছেন তিনি।
বুধবার সকালে কয়েক মিনিটের ঝড়ে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে ময়নাগুড়ি ব্লকের পদমতি ১ ও ২ অঞ্চলে। ঝড়ের ফলে যদিও সরকারি ভাবে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ এখনও জানা যায়নি। তবে অনেকেরই ঘরের চাল উড়ে গিয়েছে। প্রচুর গাছ উপড়ে পড়েছে। গাছ পড়ে ঘরবাড়িও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ দিন তেমনই এক গাছ পড়ে জগদীশবাবুর বাড়ির উপরে। ওই বৃদ্ধ ঘরের ভিতরে চাপা পড়েন। প্রতিবেশীরা তাঁকে কোনওক্রমে ঘর থেকে বের করেন। তবে আশ্চর্যজনক ভাবে তাঁর শরীরের কোথাও কোনও রকম আঘাতও লাগেনি। তাঁর কথায়, ‘‘কপাল জোরে বেঁচে গেলাম!’’
এ দিনের ঝড়ে ভেঙে পড়েছে একাধিক বিদ্যুতের খুঁটিও। বিস্তীর্ণ এলাকা বিদ্যুৎ-বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। পদমতি-১ এর ভোটপট্টি তোতারবাড়ির প্রায় দু'শো বছরের পুরোনো স্মৃতি বহনকারী বিশালাকার বটগাছ। যার ফলে অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছে হেলাপাকড়ি ময়নাগুড়িগামী মূল পাকা রাস্তা। রাস্তার পাশে থাকা ভাণ্ডানি মন্দির-সহ কয়েকটি বাড়ি চাপা পড়েছে।
পদমতি-২ এর হেলাপাকড়ি সরকারপাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে উপড়ে পড়েছে শতাব্দী প্রাচীন একটি আমগাছ। গুমটিপাড়ায় দুটি বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অল্পের জন্য প্রাণে বাঁচেন বাড়ির লোকেরা। ক্ষতি হয়েছে হেলাপাকড়ি বাজার এলাকাতেও। ঝড়ে ভুট্টা ও ঢেঁড়স খেতেরও ক্ষতি হয়েছে। বিস্তীর্ণ এলাকায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন অসংখ্য মানুষ। সরকারি সাহায্য দাবি করেছেন ক্ষতিগ্রস্তেরা।
ঝড়ে গাছ পড়ে অবরুদ্ধ হয়ে থাকা প্রধান ও গুরুত্বপূর্ণ পাকা রাস্তায় যানজট দেখা দেয়। প্রশাসনের বিভিন্ন দফতরে জানানো সত্ত্বেও ব্যবস্থা গ্রহণের কোনও উদ্যোগ নেই বলে স্থানীয়দের অভিযোগ। অভিযোগ, পুলিশ, দমকল, বন দফতর-সহ অন্য প্রশাসনিক কর্তাদের জানানো হয়েছে। কিন্তু গাছ সরানোর দায় কার তা নিয়েই টানাপড়েন শুরু হয়েছে। বাধ্য হয়ে স্থানীয়রাই গাছটি সরিয়ে রাস্তা পরিষ্কার করার উদ্যোগ নিয়েছেন। এ নিয়ে ব্যাপক ক্ষোভও ছড়িয়েছে স্থানীয়দের মধ্যে।
খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান এলাকার বিদায়ী পঞ্চায়েত সদস্য হামিদার রহমান। তিনি বলেন, ‘‘হতাহতের কোনও খবর না থাকলেও ঝড়ে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। স্থানীয়দের সহযোগিতায় গাছটিকে সরিয়ে রাস্তা পরিষ্কার করার চেষ্টা চলছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy