বাড়ি ফিরে বাবার দেহের সামনে রোহিত। নিজস্ব চিত্র
অসুস্থ ছিলেন প্রায় তিন মাস। সোমবার সকালে হাসপাতাল থেকে তাঁর মৃত্যুর খবর আসার পরে মাধ্যমিকের প্রথম দিনের পরীক্ষায় বসল পিতৃহারা পরীক্ষার্থী। রায়গঞ্জের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের শক্তিনগর এলাকার বাসিন্দা রোহিত বিশ্বাস শ্রী শ্রী রামকৃষ্ণ বিদ্যাভবনের ছাত্র। তার মাধ্যমিকের সিট পড়েছে দেবীনগর গয়ালাল রামহরি উচ্চ বিদ্যাপীঠ হাইস্কুলে।
এ দিন বেলা ১১টা নাগাদ ওই ওয়ার্ডের কাউন্সিলর বরুণ বন্দ্যোপাধ্যায় রোহিতকে স্কুটিতে চাপিয়ে পরীক্ষাকেন্দ্রে নিয়ে যান। পরীক্ষা শেষ হওয়ার পর দুপুর সাড়ে তিনটে নাগাদ বাড়িতেও ফিরিয়ে আনেন তিনি। এরপরেই হাসপাতাল থেকে রোহিতের বাবা স্বপনচন্দ্র বিশ্বাসের (৪২) দেহ বাড়িতে নিয়ে আসা হয়। সকাল থেকে চেপে রাখা শোক বাঁধ ভাঙে তখন। বিকেলে স্থানীয় খরমুজাঘাট শ্মশানে তাঁর শেষকৃত্য হয়। বাবার মুখাগ্নি করে রোহিত।
পরে বলে, ‘‘তিন ভাইয়ের মধ্যে আমিই প্রথম মাধ্যমিক পরীক্ষায় বসেছি। বাবা সবসময় চাইতেন আমি অনেক পড়াশোনা করে প্রতিষ্ঠিত হই। বাবার ইচ্ছেকে মর্যাদা দিয়েই এ দিন পরীক্ষা দিয়েছি। পরীক্ষা দিতে বসেও বারবার বাবার কথা মনে পড়ছিল। কিন্তু মন শক্ত রেখে শেষপর্যন্ত ঠিকঠাক পরীক্ষা দিতে পেরেছি।’’
রায়গঞ্জের একটি কৃষি সমবায় ও গ্রামীণ ব্যাঙ্কের কর্মী ছিলেন স্বপনবাবু। গলায় সংক্রমণের জেরে গত তিন মাস ধরে অসুস্থ ছিলেন। শনিবার রাত সাড়ে ১১টা নাগাদ তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে রায়গঞ্জ সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ দিন সকাল ৭টা নাগাদ সেখানেই তাঁর মৃত্যু হয়। রোহিতের মেজভাই সুদীপ নবম ও ছোটভাই সুদীপ তৃতীয় শ্রেণির ছাত্র।
রামকৃষ্ণ বিদ্যাভবনের প্রধানশিক্ষক নীলমাধব নন্দীর বক্তব্য, ‘‘রোহিত আগাগোড়াই পড়াশোনায় ভাল। বাবার মৃত্যুর খবর শোনার পর এ দিন ও যে ভাবে মাধ্যমিক পরীক্ষায় বসেছে তাতে ওর কাছে অনেক কিছু শেখার আছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy