বিপজ্জনক: শিলিগুড়িতে। নিজস্ব চিত্র
দেওয়ালের পলেস্তার ফাটিয়ে গাছের শেকড় ঢুকেছে ভিতরে। কোনও বাড়ির ঘুলঘুলি থেকে জল চুইয়ে পড়ার স্থায়ী দাগ। নোনো ধরা দেওয়াল, পলেস্তার খসে যাওয়া স্তম্ভ, ফাটলে ফাটলে ফুটিফাটা। এমন দৃশ্য পরিচিত শিলিগুড়ির খালপাড়ায়।
কতগুলি বাড়ির এমন জরাজীর্ণ দশা হয়েছে, তার সঠিক তথ্য নেই পুরসভার হাতে। খালপাড়ায় সার দিয়ে পুরনো বাড়িগুলি এখন যথেষ্ট বিপজ্জনক। শুধু খালপাড়া নয়, শহর জুড়েই এমন বাড়ির সংখ্যা যে বাড়ছে, তার ইঙ্গিত মিলেছে শনিবার ভোরে। খালপাড়ার এমজি রোডের একটি বাড়ি ভোরবেলা ভেঙে পড়ে। এক যুবতী চাপা পড়ে জখম হয়েছেন। প্রাণহানি এড়ানো গেলেও আতঙ্ক বেড়েছে বহুগুণ।
কোনও বাড়ির বয়স আশি ছাড়িয়েছে, কোনও বাড়ি আবার শতায়ু। কারও উপরে ভার চাপিয়েছেন বাসিন্দারা। কোনও বাড়ির সংস্কারই হয়নি। ফাটল চওড়া হয়েই গিয়েছে। খালপাড়ার ব্যবসায়ী সজ্জন অগ্রবালের কথায়, ‘‘যে বাড়িটি ভেঙেছে, তাতে কেউ থাকত না বলে রক্ষা। যদিও অন্য কোনও বহুতল ভেঙে পড়ে, তবে কী অবস্থা হবে, ভেবেই শিউরে উঠছি।’’
সজ্জনবাবুদের বাড়ির একটি অংশও জরাজীর্ণ। কিন্তু শরিকি বিবাদে সেটি ভাঙা যাচ্ছে না। সজ্জনবাবুর কথায়, ‘‘এ সব ক্ষেত্রে পুরসভাকেই উদ্যোগী হতে হবে। বিবাদ-জটিলতায় হাতগুটিয়ে থাকলে তো বিপদ বাড়বে।’’
পুরসভার তরফে দাবি, বিপজ্জনক বাড়ির একটি তালিকা তাদের কাছে রয়েছে। আরও বাড়িকে চিহ্নিত করার জন্য ইঞ্জিনিয়ারদের দল তৈরি করা হয়েছে। মেয়র অশোক ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘বাড়ির মালিকদের নোটিস ধরিয়ে ভেঙে ফেলার নির্দেশ দেওয়া হবে। তা ইতিমধ্যেই সিদ্ধান্ত হয়ে গিয়েছে।’’
শনিবারের ঘটনাটি ঘটেছে ৮ নম্বর ওয়ার্ডে। তৃণমূলের ওয়ার্ড কাউন্সিলর তথা বোরো চেয়ারম্যান কমল গোয়েল তাঁর ওয়ার্ডের বিপজ্জনক বাড়ির তালিকা পুরসভাকে আগেই দিয়েছিলেন বলে দাবি করেছেন। তাঁর কথায়, ‘‘পুর কর্তৃপক্ষ আগেই ব্যবস্থা নিলে এই ঘটনা এড়ানো যেত।’’ এলাকাটি মূলত ব্যবসায়িক। বেশ কিছু ভবন এবং গুদামের পরিস্থিতিও ভাল নয়। কমল গোয়েলের কথায়, ‘‘আমি নিজেই অন্তত ১০টি বিপজ্জনক বাড়ির কথা বলতে পারি। অনেক আপত্তি আসবে। কিন্তু মানুষের জীবনের স্বার্থে পুরসভাকে পদক্ষেপ করতেই হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy