Advertisement
E-Paper

চুক্তিভঙ্গের দাবিতে পাহাড় বন্ধে অনড় মোর্চা

লেপচা ভাষার জন্য পার্শ্বশিক্ষক নিয়োগের পরীক্ষা নেওয়ার পরে ২ এপ্রিল বন্ধের ডাকে অনড় রইল মোর্চা। মোর্চার দাবি, চুক্তি অনুযায়ী শিক্ষা জিটিএ-র এক্তিয়ারভুক্ত। কিন্তু রাজ্য সরকার জিটিএ-কে গুরুত্ব না দিয়ে একতরফা ভাবে পাহাড়ের ৪৬টি প্রাথমিক স্কুলে লেপচা পার্শ্বশিক্ষক নিয়োগ করতে চাইছে বলে মোর্চার অভিযোগ।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৮ মার্চ ২০১৫ ০৩:১০

লেপচা ভাষার জন্য পার্শ্বশিক্ষক নিয়োগের পরীক্ষা নেওয়ার পরে ২ এপ্রিল বন্ধের ডাকে অনড় রইল মোর্চা।

মোর্চার দাবি, চুক্তি অনুযায়ী শিক্ষা জিটিএ-র এক্তিয়ারভুক্ত। কিন্তু রাজ্য সরকার জিটিএ-কে গুরুত্ব না দিয়ে একতরফা ভাবে পাহাড়ের ৪৬টি প্রাথমিক স্কুলে লেপচা পার্শ্বশিক্ষক নিয়োগ করতে চাইছে বলে মোর্চার অভিযোগ। এই পার্শ্বশিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি জারি করার সময়েই মোর্চা তাই প্রতিবাদ জানিয়ে বলেছিল, এই নিয়োগ প্রক্রিয়া অব্যাহত থাকলে ২ এপ্রিল তাঁরা পাহাড়ে বন্ধ ডাকবেন। মঙ্গলবার ওই স্কুলগুলিতে লেপচা ভাষার জন্য পার্শ্বশিক্ষক নিয়োগের পরীক্ষা নেওয়া হয় রাজ্য সরকারের উদ্যোগে। তার পরে এ দিন দুপুরেই মোর্চার সাধারণ সম্পাদক রোশন গিরি বলেন, “বন্ধ প্রত্যাহার করা হয়নি। জেলা প্রশাসন গা জোয়ারি করে পার্শ্বশিক্ষক নিয়োগের পরীক্ষা নিয়েছে।” তাঁর কথায়, “শিক্ষা জিটিএ-র তালিকাভুক্ত হওয়ায় প্রশাসন যে পার্শ্বশিক্ষক নিয়োগের পরীক্ষা নিতে পারে না, তা একাধিকবার জানানো হয়েছিল। তারপরেও পরীক্ষা নেওয়া হয়েছে।”

উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী গৌতম দেব বলেন, “ঠিক কী হয়েছে তা খোঁজ নিয়ে তবে বলতে পারব।” তবে প্রশাসনিক সূত্রে জানা গিয়েছে, লেপচা ভাষায় শিক্ষক নিয়োগের প্রক্রিয়া দ্রুত শেষ করতে চায় রাজ্য সরকার। এ ব্যাপারে জিটিএ-র যদি কোনও প্রস্তাব থাকে, তা হলে তা স্বাগত। কিন্তু নিয়োগ প্রক্রিয়া অব্যাহতই থাকবে বলে প্রশাসনিক সূত্র জানিয়েছে।

তবে প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, নিয়োগের পুরো প্রক্রিয়াটি জেলাশাসকের তদারকিতেই হয়েছে। জেলাশাসকের অনমনীয় মনোভাবের জেরেই মোর্চা ফের বন্ধের রাস্তা বেছে নিচ্ছে বলে প্রশাসনের অন্দরেও জল্পনা শুরু হয়। মোর্চা নেতাদের অভিযোগ, বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পরে, একাধিকবার জেলাশাসকের সঙ্গে যোগাযোগ করেও ফল মেলেনি। সে কথা রাজ্য সরকারকেও বিষয়টি জানানো হয়েছিল। তাতেও কাজ না হওয়ায় বন্ধ ডাকা হবে বলে হুমকি দিতে তাঁরা বাধ্য হয়েছিলেন বলে মোর্চা নেতাদের দাবি। রাজ্য জুড়ে পুরসভা ভোটের আগে দার্জিলিঙে নতুন করে বন্ধ বা কোনও অশান্তি হলে দলকে অস্বস্তিতে পড়তে হবে বলে ধরে নিয়ে তৃণমূলের রাজ্য নেতৃত্বের তরফেও পরিস্থিতি নিয়ে খোঁজখবর শুরু করা হয়। সব মিলিয়ে প্রশাসনের উপরে চাপ বাড়তে থাকে। তারপরে ঘটনাচক্রে, এ দিনই দার্জিলিঙের জেলাশাসক পুনীত যাদবকে বদলির নির্দেশ জারি করেছে রাজ্য সরকার। অনুরাগ শ্রীবাস্তব দার্জিলিঙের নতুন জেলাশাসকের দায়িত্ব নিতে চলেছেন বলে জানা গিয়েছে। পুনীত যাদব অবশ্য এ দিন দুপুরের পর থেকে ফোন তোলেননি।

তবে জেলাশাসককে বদলি করেও যে বরফ গলছে না তা এ দিন মোর্চার তরফে পরিষ্কার করে দেওয়া হয়েছে। মোর্চা নেতাদের একাংশের অভিযোগ, লেপচা উন্নয়ন পর্ষদ গড়ে রাজ্য সরকার আগেও বিভাজনের রাজনীতি করেছিল পাহাড়ে। এবার শিক্ষক নিয়োগ নিয়েও একই কৌশল নেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ। সে কারণে পাল্টা চাপ দিতে মোর্চা জানিয়েছে, পরীক্ষা প্রক্রিয়া বাতিল না করলে বন্ধ প্রত্যাহারের প্রশ্ন নেই। সন্ধ্যায় দলের সহ সম্পাদক বিনয় তামাঙ্গ বলেন, “এ বিষয়ে আমাদের কিছু বলা বা করণীয় নেই। এটা প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত। দলের ভবিষ্যত পদক্ষেপ আগেই জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।”

পাহাড়ে শেষ বার বন্ধ হয়েছিল, ২০১৩ সালের অগস্টে। গত বছরের জুলাই মাসে দার্জিলিং জেলাশাসকের অফিসে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক সেরে বেরিয়ে মোর্চা নেতারা ভবিষ্যতে বন্ধ না ডাকার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করে। গত নভেম্বর মাসে প্রকাশ্য সভা থেকে নিজে ‘বদলে গিয়েছেন’ বলে দাবি করে পৃথক রাজ্যের দাবিতে দার্জিলিঙে আর বন্ধ ডেকে জনজীবন বিপর্যস্ত না করার আশ্বাস দিয়েছিলেন মোর্চা প্রধান। এ দিন মোর্চা সূত্রের দাবি, বন্ধের দায় রাজ্য সরকারকেই নিতে হবে।

এ দিন ১৫৭ জন আবেদনকারী পরীক্ষা দিয়েছেন। তার মধ্যে কালিম্পঙের পরীক্ষাকেন্দ্রেই পরীক্ষার্থীর সংখ্যা বেশি ছিল। ওই কেন্দ্রে ১১২ জন পরীক্ষার্থী ছিলেন। বাছাই পরীক্ষার্থীদের আগামী ২৫ মার্চ মৌখিক পরীক্ষা হওয়ার কথা। তার দু’দিন পরে নিয়োগের তালিকা প্রকাশ করা হবে বলে প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে।

strike lepcha language morcha darjeeling
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy