Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

আলিপুরদুয়ারে হাতুড়ের ভুলে বাদ গেল হাত

হাতুড়ের ইঞ্জেকশন দেওয়ার ভুলের খেসারত দিলেন শামুকতলার বাসিন্দা এক মহিলা। যে হাতে ইঞ্জেকশন দেওয়া হয়েছিল সেই হাতটি পচে যাওয়ায় মঙ্গলবার তা কেটে ফেলতে বাধ্য হলেন আলিপুরদুয়ার জেলা হাসপাতালের চিকিৎসকরা। না হলে মহিলার প্রাণ সংশয় হতো বলে জানিয়েছেন তাঁরা।

আলিপুরদুয়ার হাসপাতালে ওই মহিলা। — নারায়ণ দে

আলিপুরদুয়ার হাসপাতালে ওই মহিলা। — নারায়ণ দে

নিজস্ব সংবাদদাতা
আলিপুরদুয়া শেষ আপডেট: ০২ নভেম্বর ২০১৬ ০২:০২
Share: Save:

হাতুড়ের ইঞ্জেকশন দেওয়ার ভুলের খেসারত দিলেন শামুকতলার বাসিন্দা এক মহিলা। যে হাতে ইঞ্জেকশন দেওয়া হয়েছিল সেই হাতটি পচে যাওয়ায় মঙ্গলবার তা কেটে ফেলতে বাধ্য হলেন আলিপুরদুয়ার জেলা হাসপাতালের চিকিৎসকরা। না হলে মহিলার প্রাণ সংশয় হতো বলে জানিয়েছেন তাঁরা।

হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, কিছুদিন আগে জ্বর হয়েছিল শামুকতলা থানার ধামসিবাদ এলাকার বাসিন্দা কৃষ্ণ বর্মনের স্ত্রী অলকা বর্মনের। গত ৬ অক্টোবর স্থানীয় এক হাতুড়ের কাছে অলকাদেবীকে নিয়ে যান পরিবারের সদস্যরা। অভিযোগ, তাঁর বাঁ হাতের কনুইয়ের উপর ডাইক্লোফেনাক সোডিয়াম ইঞ্জেকশন দেন ওই হাতুড়ে। প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই প্রতিক্রিয়া শুরু হয়ে যায়। তীব্র যন্ত্রণায় ছটফট করতে থাকেন ওই মহিলা। এই অবস্থাতেই দিন চারেক তাঁকে বাড়িতে রাখার পর আলিপুরদুয়ার হাসপাতালে নিয়ে আসেন পরিবারের সদস্যরা।

হাসপাতালের শল্য চিকিৎসক পবিত্র রায়ের তত্ত্বাবধানেই ওই মহিলার অস্ত্রোপচার হয়েছে এ দিন। তিনি জানান, ওই হাতুড়ে ডাইক্লোফেনাক সোডিয়াম ইঞ্জেকশনটি মাংসপেশির বদলে শিরার মধ্যে দেওয়ায় হাতে পচন ধরে। তিনি বলেন, ‘‘প্রথম দিন দেখার পরেই বুঝেছিলাম হাতে পচন ধরেছে। হাত বাদ দিতে হবে। কিন্তু কতটা কম অংশ বাদ দিতে হয় সেই চেষ্টা করছিলাম আমরা। কতটা অংশে রক্ত চলাচল বন্ধ হয়েছে তা জানতে ও আমাদের দিন পনেরো অপেক্ষা করতে হয়েছে। বিভিন্ন পরীক্ষাও করা হয়।

যে ভাবে সংক্রমণ ছড়াচ্ছিল তাতে তাঁর প্রাণ সংশয় হতে পারত। তাই পরিবারের সঙ্গে কথা বলে এ দিন তার হাত কেটে বাদ দেওয়া হয়।’’

মহিলার স্বামী কৃষ্ণ বর্মণ বলেন, “কি হল কিছুই বুঝতে পারলাম না। জ্বরের জন্য স্থানীয় হাতুড়ের কাছে নিয়ে গিয়েছিলাম। ওর পায়ে খুব ব্যাথা ছিল। ইঞ্জেকশন দিয়েছিল হাতুড়ে অমল রায়। সে আমাদের কাছে ভুলও স্বীকার করেছে।” তবে এখনও ওই হাতুড়ের বিরুদ্ধে পুলিশে অভিযোগ দায়ের হয়নি।

আলিপুরদুয়ার জেলা হাসপাতালের সুপার চিন্ময় বর্মন বলেন, ‘‘ওই মহিলার হাতের পচনের কারণ হিসেবে জানা গিয়েছে ডাইক্লোফেনাক সোডিয়াম ইঞ্জেকশন মাংসপেশিতে দেওয়ার বদলের হাতের শিরায় দেওয়া হয়েছে। বিষয়টি কেস হিস্ট্রিতে লেখাও হয়েছে। তবে পুলিশে অভিযোগ করার দায়িত্ব পরিবারের।’’ কৃষ্ণবাবু বলেন, ‘‘হাতুড়ে অমল বর্মনের নামে পুলিশে অভিযোগের বিষয় নিয়ে এখন ভাবছি না। আগে আমার স্ত্রী সুস্থ হয়ে উঠুক। তারপর বিষয়টি নিয়ে ভাবব।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Negligence quack
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE